অদ্ভুত দেশ! রবিবার পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচনের ঠিক পরেই গণনা শুরু হয়েছিল। সেই যে গণনা শুরু হয়েছিল, তারপর থেকে সেটা চলছে তো চলছেই। ৪৮ ঘণ্টা শেষ হয়ে গেল অথচ গণনা আর শেষ হয় না। গণনা কেন্দ্রে নির্বাচন কমিশনের প্রচুর কর্মী, সবই হচ্ছে, শুধু কে জিতছেন বা এগিয়ে আছেন তা বলা হচ্ছে না। ভোটে ব্যাপক রিগিং, গণনায় হাস্যকর কারচুপির ভিডিয়োও সামনে আসছে। পাকিস্তানের আম জনতা বুঝে গিয়েছে, ডাল মে কুছ কালা হে।
গণনা নাকি পুরোপুরি বন্ধ করে নির্বাচন ভেস্তে দেওয়ার চেষ্টা করছেন নওয়াজ শরিফ-রা। পাকিস্তানের নির্বাচনে ব্যাপক অস্বচ্ছতা, ইমরান খানকে জেলবন্দি করে রাখার বিষয়ে তদন্ত করার পথে আমেরিকা, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন।
এখনও পর্যন্ত পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে গণনা অনুযায়ী ইমরান খান সমর্থিত প্রার্থী ৯৪টি-তে জয়ী হয়েছেন। ৭৩টি আসন পেয়ে দ্বিতীয় স্থানে নওয়াজ শরিফের পিএমএল (এন)। বিলওয়াল ভুট্টোর পিপিপি পেয়েছে ৫৪টি আসন। নির্দল ও অন্যান্য কিছু ছোট দল মিলিয়ে জিতেছে ৩৬টি আসনে।
সোজা চোখে দেখলে ইমরান খানের হয়েই পাকিস্তানের জনতা রায় দিয়েছে। অনেকটা চেষ্টা করেও ইমরানকে রোখা গেল না। নির্বাচনের মুখে বিভিন্ন দুর্নীতি মামলায় বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক তথা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। তারপর তাঁর দল পিটিআই-য়ের নির্বাচনী প্রতীক কেড়ে নেওয়া হয়েছিল। ইমরান তো দূরের কথা, তাঁর সমর্থক-বা দলীয় কর্মীদের ঠিকমত প্রচার করতে দেওয়া হয়নি। ইমরান খানের সমর্থকরা অনলাইনে সভা করা হলে, গোটা দেশের ইন্টারনেট পরিষেবা বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারপরেও ইমরান একাই মাতিয়ে দিলেন।
তবে তাঁকে রুখতে নওয়াজ শরিফ ও বিলওয়াল ভুট্টো জোট করতে পারেন। সেক্ষেত্রে এখন ইমরানের ৯৪-এর বিরুদ্ধে নওয়াজ-বিলওয়ালের মিলিত আসন হতে পারে ১২৭। সঙ্গে নওয়াজ শরিফ কয়েকজন নির্দল প্রার্থীরও সমর্থন পাবেন। যেহেতু ইমরান জেলবন্দি তাই ফাঁকা মাঠে একাই নওয়াজ সরকার গড়ার খেলা খেলতে পারবেন। ফলে ইমরান জিতলেও সরকার গড়ে সিংহাসনে বসতে পারেন নওয়াজ শরিফ। তবে আমেরিকা, ইউরোপিয়ান ইউনিয়নরা শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানের নির্বাচনকে স্বীকৃতি দেবে না হয়তো।