ছবিটি প্রতীকী

গাজোল, ১৫ ফেব্রুয়ারি: কুসংস্কারের (Superstition) বলি হল দুটি শিশু। মালদার (Malda) গাজোলের (Gajole) ঘটনা। ‘ভূতে ধরেছে’ সন্দেহে ঝাড়ফুঁক (Sorcery Practice) চলে। চিকিৎসকের কাছে না নিয়ে যাওয়ার ফলে মৃত্যু হল ওই দুই শিশুর। মৃতদের নাম ফিরোজ রহমান এবং শফিকুল আলম। ঘটনায় গুরুতর অসুস্থ আরও দু’জন। মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে তাদের। ওই দু’জনের অবস্থা অত্যন্ত সংকটজনক। মালদার পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, "মৃতদের একজনের বয়স পাঁচবছর ও অন্যজনের সাত বছর। এবং তিন ও ছয় বছর বয়সী দুটি মেয়েকে মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তদন্ত শুরু হয়েছে এবং মৃত্যুর কারণ এখনও জানা যায়নি।"

শুক্রবার বিকালে মালদার গাজোলের কদমতলা গ্রামে একদল শিশু খেলা করছিল। বাড়ি ফিরে তারা অভিভাবকদের জানায়, শরীর খারাপ লাগছে। ওই শিশুদের ‘ভূতে ধরেছে’ বলেই সন্দেহ করতে থাকেন শিশুর পরিজনরা। সঙ্গে সঙ্গে এক ওঝাকে খবর দেওয়া হয়। ওঝা অসুস্থ শিশুদের বাড়িতে আসেন। বন্ধ ঘরে ঢুকিয়ে রেখে চারজন শিশুকে ঝাড়ফুঁক করা শুরু হয়। ঘণ্টাদুয়েক পর প্রায় অচৈতন্য হয়ে যায় খুদেরা। পরিজনরা তাদের উদ্ধার করে মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার বন্দোবস্ত করা হয়। তবে রাস্তাতেই এক শিশুর মৃত্যু হয়। এরপর একে একে তিনজন শিশুকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বেশ কিছুক্ষণ চিকিৎসার পর আরও এক শিশুর মৃত্যু হয়। বাকি দু’জন এখনও হাসপাতালে ভর্তি। তাঁরা বিপন্মুক্ত কি না, সে বিষয়ে এখনও চিকিৎসকরা নিশ্চিতভাবে কিছু বলতে পারছেন না। আরও পড়ুন: Pool Car Accident: ফুসফুসে পাঁক ঢুকে সঙ্কটজনক অবস্থায় পোলবা পুলকার দুর্ঘটনার ২ খুদে

মনে করা হচ্ছে, খেলাধূলার সময় কোনও বিষাক্ত ফল খেয়ে নেয় শিশুরা। তার জেরে বিষক্রিয়া হয়। তাই অসুস্থ হয়ে পড়ে তারা। ঝাড়ফুঁক না করে আগেই হাসপাতালে শিশুদের নিয়ে আসা হলে, তাদের প্রাণ বাঁচানো সম্ভব হত বলেই দাবি চিকিৎসকদের। গাজোলের বিধায়ক দিপালী বিশ্বাস ঝাড়ফুঁকের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন। তিনি শনিবার গ্রাম এবং হাসপাতালে যান। তিনি বলেন, "মুসলিম অধ্যুষিত কদমতলা গ্রামে বেশিরভাগ মানুষই এখনও শিক্ষার আলো পাননি। তাই কুসংস্কার ক্রমশ ঘাঁটি গেড়ে বসেছে ওই এলাকায়। তাই এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটেছে। আমি গ্রামবাসীদের এই ধরনের কুসংস্কারের বিশ্বাস থেকে দূরে থাকার কথা বলেছি।"