কলকাতা, ১০ নভেম্বর: যতটা গর্জাল, ততটা বর্ষাল না ঘূর্ণিঝড় বুলবুল (Cyclone Bulbul)। শক্তি হারিয়ে সেটি বাংলাদেশের (Bangladesh) দিকে ঘুরে গেল। বিপদ কেটে গেছে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের। সকালের দিকে আংশিক মেঘলা আকাশ, দমকা হাওয়া এবং বিক্ষিপ্ত বৃষ্টির সম্ভাবনা থাকলেও রবিবার সকাল থেকেই ক্রমশ পরিষ্কার হচ্ছে আকাশ। হাওয়া অফিস সূত্রে খবর, সকালের দিকে আকাশ কিছুটা মেঘলা থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। বিকেলের মধ্যেই সম্পূর্ণ কেটে যাবে দুর্যোগ। পূর্বাভাস ছিল ভয়ঙ্কর ঘূ্র্ণিঝড় আছড়ে পড়ার পর লন্ডভন্ড হবে উপকূলের এলাকা (Costal region)। তার জেরে রবিবারও কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের জেলাগুলিতে ভারী বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস ছিল। ভয়ঙ্কর রূপে যে ভাবে বুলবুল পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশের দিকে ধেয়ে আসছিল, তা অনুমান করেই আবহাওয়া বিজ্ঞানীরা এমনই সতর্কবার্তা দিয়েছিলেন। কিন্তু বাস্তবে বুলবুল যতটা গর্জাল ততটা বর্ষাল না। স্থলভাগে আছড়ে পড়ার পর দ্রুত শক্তিক্ষয় হয় বুলবুলের। একই সঙ্গে দ্রুত গতিতে বাংলাদেশেও প্রবেশ করে বুলবুল।
আনন্দবাজারের খবর অনুযায়ী, রবিবার সকাল থেকে বৃষ্টি হয়নি। হাওয়ার গতিবেগও তেমন একটা নেই। আকাশ পরিষ্কার। আকাশে কিছুটা মেঘ থাকলেও মাঝে মাঝেই রোদ উঁকি মারছে। দ্রুত এই আবহাওয়ার উন্নতি বুলবলের শক্তি ক্ষয়ের জন্যেই হয়েছে বলে জানাচ্ছে আলিপুর আবহাওয়া অফিস। ঘণ্টায় ১১০-১২০ কিলোমিটার গতি নিয়ে এগিয়ে উপকূলের দিকে এগিয়ে আসছিল বুলবুল। আছড়ে পড়ার ঠিক আগেই অতি ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড় (ভেরি সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্ম) থেকে শুধুমাত্র ভয়ঙ্কর ঘূর্ণিঝড়ে (সিভিয়ার সাইক্লোনিক স্টর্ম) পরিণত হয়। আছড়ে পড়ার পর তা আরও শক্তি হারিয়ে এখন ঘূর্ণিঝড়ের (সাইক্লোনিক স্ট্রম) আকার নিয়ে বাংলাদেশের স্থলভাগে ঢুকে পড়েছে বুলবুল। কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই শক্তি ক্ষয় হয়ে নিম্নচাপের রূপ নিতে চলেছে। ফ্রেজারগঞ্জ, সাগরদ্বীপ, দিঘা, বকখালির দিকে বুলবুল প্রবল বেগে ধেয়ে এলেও ঘূর্ণিঝড় ছোবলটা দিয়েছে সুন্দরবনের জনমানবহীন দ্বীপগুলিতে। ফলে বুলবুলের দাপটে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বিভিন্ন এলাকায় গাছ উপড়ে গেছে, মাটির ঘর ভেঙেছে পড়েছে ঠিকই, কিন্তু তেমন বিপর্যয় হয়নি। আরও পড়ুন: Ayodhya Verdict Highlights: একনজরে অযোধ্যা মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায়
বিপর্যয় বেশি না হওয়ার আর একটি কারণ, আবহাওয়া দফতরের সঙ্গে রাজ্য প্রশাসনের সঠিক সমন্বয়, সঠিক সময়ে ঝড়ের গতিবিধির আগাম তথ্য পেয়ে যাওয়া। রবিবার সকালে নবান্ন থেকে বেরোনোর আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি (Mamata Banerjee) বলেন, "প্রায় ১ লাখ ৬৪ হাজার ৩১৫ জনকে উদ্ধার করা হয়েছে । ৩১৮টি ত্রাণ শিবির খোলা হয়েছে ৷ এই শিবিরগুলিতে রাখা হয়েছে ১ লাখ ১২ হাজার ৩৬৫ জনকে।" বুলবুলের তাণ্ডবে রাজ্যের উপকূলের জেলাগুলিতে কোনও হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি বলেও তিনি জানান।
২৪ ঘণ্টার খবর অনুযায়ী শনিবার রাতে ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের জন্য বাতিল হয়েছে বহু ট্রেন। পাশাপাশি ট্রেন লাইনে গাছ পড়ে ট্রেন চলাচল খানিকটা ব্যাহত হলেও ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হচ্ছে পরিষেবা। বুলবুলের কারণে রবিবার সকাল ৬টা পর্যন্ত বন্ধ ছিল কলকাতা বিমানবন্দরে পরিষেবা। রবিবার বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিমান চলাচলও স্বাভাবিক হচ্ছে।