কলকাতা-সহ গোটা দক্ষিণবঙ্গ বরুণ দেবের অকৃপণ দানে ঘেমে নেয়ে একসা। এই সময় একটু ফুরফুরে হাওয়ায় প্রাণমন জুড়োতে চাইলে ঘুরে আসতে পারেন প্রতিবেশী দেশ ভুটান থেকে। চোখ জুড়োনো সবুজ আর পাহাড়ের পটভূমি, সবমিলিয়ে মনকাড়া পিকটার পোস্টকার্ড হল এই ভুটান, শুধু চোখ ভোলানোর নয়, মন ভোলানোর দেশ। কলকাতা থেকে ট্রেনে বা বিমানে ভুটান (Bhutan) পৌঁছানো যায়। ট্রেনে হাসিমারা স্টেশনে নেমে গাড়ি করে জয়গাঁ পৌঁছাতে হবে। হাসিমারা স্টেশন থেকে গাড়িতে জয়গাঁ যেতে আধঘণ্টা সময় লাগে। জয়গাঁ( Jaigaon) ভারত এবং ভুটানের সীমানা।
ভুটানে যেতে কী কী লাগবে?
জয়গাঁর শেষ প্রান্তে ভুটান গেট৷ ভুটান গেট থেকে প্রবেশ করলে শুরু হয় ফুন্টসেলিং। এখানে ইমিগ্রেশন অফিসে গিয়ে ভুটানে প্রবেশের জন্য পারমিট নিতে হবে। ভুটান একটি স্বাধীন এবং সার্বভৌম রাষ্ট্র হলেও এখানে ভারতীয়দের প্রবেশের জন্য ভিসা লাগে না। আর যাঁরা বিমানে ভুটান পৌঁছাবেন, তাঁরা বিমানবন্দরেই পারমিট পাবেন। ফুন্টসেলিং থেকে গাড়িতে ৫/৬ ঘন্টার সফর থিম্পু৷ খাদ্যরসিক বাঙালিদের জন্য দুঃসংবাদ, মাছ পাওয়া যাবে না, চিকেন এবং ডিম দিয়েই পেট চালাতে হবে৷ আর একটা সতর্কবার্তা, এখানের রাস্তাঘাটে কলকাতার মতো ধূমপান করলে মোটা অঙ্কের জরিমানা দিতে হবে৷
প্রথমেই চলুন থিম্পু (Thimphu), অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অধিকারী ভুটানের এই রাজধানী শহরটি সবসময়ই যেন ঝকমক করছে। এখানে ঘুরে নিতে পারেন মেমোরিয়াল চোরতেন, ন্যাশনাল লাইব্রেরি, ফোক হেরিটেজ মিউজিয়াম, ভুটান টেক্সটাইল মিউজিয়াম, বুদ্ধ দোরদেনমা, দেচান, ফোদ্রানগ মনাস্ট্রি, পুনাখা জং। থিম্পুর কুনসেল ফোদ্রাঙ্গ নামক একটি জায়গায় ভগবান বুদ্ধের বিশালাকৃতি ব্রোঞ্জের মূর্তি একটি উপভোগ্য দর্শনীয় স্থান। মূর্তিটির উচ্চতা ১৭৭ ফুট। মূর্তিটির পারিপার্শ্বিক প্রাকৃতিক সৌন্দর্য না দেখলে বিশ্বাস করা যায় না। তাই এটি একটি অবশ্য গন্তব্য স্থলের মধ্যে পড়বে। ভুটানিদের কাছে একটি পবিত্র জায়গা টাইগারস নেস্ট মনাস্ট্রির আর এক নাম হল পারো (Paro) টাক্স টাঙ্গ। মাটি থেকে প্রায় ৯০০ মিটার উঁচুতে অবস্থিতি এই মনাস্ট্রি উল্লেখযোগ্য দর্শনীয় স্থান।
থিম্পু রাজপ্রাসাদ দেখে চলে আসুন ৫০ কিমি দূরত্বের পারো-তে। শহরটির প্রাকৃতিক সৌন্দর্য তুলনাহীন। জুলাই—আগস্ট মাসে গেলে এখানে ফলন্ত আপেল গাছ দেখতে পাওয়া যাবে। এখানের গ্রিন আপেল বিখ্যাত। পারো শহরের আর একটি বিখ্যাত বিষয় হল পারো বিমানবন্দর। পারো বিমানবন্দরকে বলা হয় পৃথিবীর দুর্গমতম বাণিজ্যিক বিমানবন্দর। এই বিমানবন্দরে একটি মাত্র রানওয়ে আছে। পারো শহরের উপর থেকে পারো বিমানবন্দরকে দেখলে মনে হয় ঝুলনের সজ্জা। পারো মার্কেট থেকেই কেনাকাটা সারতে পারেন।