সাম্প্রতিক এক গবেষণায় জানা গেছে যে নিয়মিত ইরেকশন উন্নতি করতে পারে পুরুষদের যৌন স্বাস্থ্যের। লিঙ্গে ফাইব্রোব্লাস্টের সংখ্যা ইরেকশনের সঙ্গে যুক্ত। অধিক সংখ্যক ফাইব্রোব্লাস্ট মানে ঘন ঘন ইরেকশন হওয়া। একই রকম ভাবে এই সংখ্যা হ্রাস পাওয়া মানে কম ইরেকশন। ফাইব্রোব্লাস্টগুলি শরীরের একটি সাধারণ কোষের মতো এবং এটি সংযোগকারী টিস্যু গঠনে অবদান রাখে। এগুলি মানুষের লিঙ্গে প্রচুর পরিমাণে উপস্থিত থাকে এবং পুরুষরা ইরেকশনের ফ্রিকোয়েন্সি বাড়িয়ে এটিকে উন্নত করতে পারে। এই কারণে, মানুষের লিঙ্গে আরও বেশি ফাইব্রোব্লাস্ট তৈরি হয়।
কল্পনা করুন কলার আকারের একটি স্পঞ্জ। এবার তার উপর একটু জল ঢাললে দেখবেন এর আকার বেড়ে যাচ্ছে। ইরেকশন একই রকম কাজ করে। ইরেকশন এমন একটি প্রক্রিয়া, যার জন্য প্রয়োজন হয় পুরুষাঙ্গে পর্যাপ্ত রক্ত সরবরাহ। তার সঙ্গে সচল থাকতে হয় স্নায়ুকেও। এক্ষেত্রে স্নায়ুর ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। যৌন উত্তেজনার সময় এই স্নায়ুই সংকেত পাঠায়। যার ফলে লিঙ্গে বৃদ্ধি পায় রক্ত প্রবাহ। এই রক্ত দুটি প্রকোষ্ঠ নিয়ে গঠিত যা পরিচিত কর্পোরা ক্যাভেরনোসা নামে। এই দুই প্রকোষ্ঠে রক্ত জমা হওয়ার পর লিঙ্গকে প্রসারিত করে এবং লিঙ্গকে শক্ত করে তোলে।
ইঁদুরের উপর করা এক গবেষণায় জানা গেছে যৌন সম্পর্কিত সমস্ত প্রক্রিয়া সমস্ত স্তন্যপায়ী প্রাণীর মধ্যে একই রকমভাবে কাজ করে। তবে সমস্ত মিল থাকা সত্ত্বেও, একটি পার্থক্য রয়েছে। বেশিরভাগ স্তন্যপায়ী প্রাণীর পুরুষাঙ্গে একটি লিঙ্গ থাকে, কিন্তু মানুষের নেই। এর অর্থ হল যে পুরুষাঙ্গ শক্ত হওয়ার জন্য রক্ত প্রবাহ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। গবেষণায় জানা গেছে, বয়স্ক ইঁদুরের পুরুষাঙ্গের তুলনায় অল্প বয়স্ক ইঁদুরের পুরুষাঙ্গে কম ফাইব্রোব্লাস্ট থাকে। পুরুষাঙ্গে রক্ত প্রবাহেও এই অবস্থা স্পষ্টভাবে বোঝা যায়। মানুষের মধ্যেও বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কমে যায় ইরেকশনের ক্ষমতা।
৪০ বছরের কম বয়সী ২৯ শতাংশ পুরুষ এবং ৪০ বছরের বেশি বয়সী ৪৬ শতাংশ পুরুষ ইরেক্টাইল ডিসফাংশন (ED) অনুভব করেন। এর অর্থ হল পুরুষদের প্রায় সময়ই তাদের লিঙ্গ শক্ত হতে বা দীর্ঘ সময়ের জন্য শক্ত রাখতে সমস্যা হয়। এই অবস্থাটি পুরুষাঙ্গে ফাইব্রোব্লাস্টের অভাবের কারণে হতে পারে। এই অভাবের কারণে লিঙ্গ সহজে শক্ত হয় না। জানা গেছে, ইরেকশন উন্নতির জন্য যৌন কার্যকলাপের প্রয়োজন নেই। পুরুষদের একটি স্বয়ংক্রিয় ইরেকশন প্রোগ্রাম আছে, যা প্রতি রাতে হয়। প্রায়শই সকালে ঘুম থেকে ওঠার পরে এটি স্পষ্টভাবে বুঝতে পারা যায়, কারণ এই সময় পুরুষাঙ্গ শক্ত হয়ে যায়। এছাড়াও জানা গেছে, একজন সুস্থ মানুষের ঘুমানোর সময় প্রায় পাঁচটি ইরেকশন হয়, যা প্রায় তিন ঘণ্টা স্থায়ী থাকে। ঘুমের সময় শরীর তার নিজস্ব ইরেকশন প্রোগ্রাম চালায়।