সনাতন ধর্মে, মাঘ মাসের মৌনী অমাবস্যাকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি দিন হিসেবে বিবেচিত করা হয়। এই অমাবস্যাকে মাঘী অমাবস্যা, মৌন অমাবস্যা, মাঘ অমাবস্যা অথবা মৌনী অমাবস্যাও (Mauni Amavasya) বলা হয়। এই দিন গঙ্গা ও নর্মদা সহ যেকোনও পবিত্র নদীতে স্নানের গুরুত্ব রয়েছে। মান্যতা আছে যে পবিত্র নদীতে স্নান করলে সমস্ত পাপ ধুয়ে যায়। এই বিশ্বাসের কারণেই মৌনী অমাবস্যায় দূর-দূরান্ত থেকে ভক্তরা গঙ্গা ও নর্মদার মতো পবিত্র নদীর তীরে স্নান করতে আসেন। এছাড়াও ভক্তদের মধ্যে অনেকেই এই দিন নীরবতা পালন করেন।

বৈদিক জ্যোতিষশাস্ত্র অনুসারে, মাঘ মাসে চন্দ্র ও সূর্য যখন মকর রাশিতে একত্রিত হয় তখন মৌনী অমাবস্যা হয়। চাঁদ ও সূর্যের সম্মিলিত শক্তির কারণে এই দিনের গুরুত্ব আরও বেড়ে যায়। ২০২৪ সালে মৌনী অমাবস্যা পড়েছে ৯ ফেব্রুয়ারি, শুক্রবার। ব্রহ্ম মুহুর্ত থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত সময়টিকে মৌনী অমাবস্যায় পবিত্র নদীতে স্নানের জন্য শুভ বলে মনে করা হয়। এছাড়া সকাল ১১টা আগে যেকোনও সময়ে স্নান করা যাবে। শাস্ত্র অনুযায়ী, কেউ নদীতে স্নান করতে যেতে না পারলে বাড়িতে স্নান করেও পুণ্য ফল পাওয়া সম্ভব।

সনাতন ধর্মে, স্নান, দান এবং উপাসনার মতো কার্যকলাপ ভক্তি ও বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে করা হয়। একইভাবে, গঙ্গা স্নান তখনই ইতিবাচক ফল দেবে যখন আপনার চিন্তাভাবনা ইতিবাচক হবে। এবার জেনে নেওয়া যাক কিভাবে বাড়িতে স্নান করেও পবিত্র নদীতে স্নান করার মতো পুণ্য লাভ করা সম্ভব...

গঙ্গার জলের এক ফোঁটা গঙ্গা জলের সমান। তাই এক ফোঁটা গঙ্গার জল যেকোনও জলের সঙ্গে মেশালে সেই জলও গঙ্গা জলের মতোই পবিত্র হয়ে যাবে। তাই, যদি কোনও কারণে মৌনী অমাবস্যায় নদী স্নান করতে যাওয়া সম্ভব না হয়, তাহলে স্নানের জলে কয়েক ফোঁটা গঙ্গাজল মিশিয়ে বাড়িতেই স্নান করে নেওয়া যেতে পারে। সাধক রবিদাস জিও তাঁর এক দোহার মাধ্যমে বুঝিয়েছিলেন গঙ্গায় স্নানের ফল তখনই পাওয়া যায় যখন মন পবিত্র হয়। মানুষের মন পবিত্র হলে তার প্রতিটি কাজ গঙ্গার মতোই পবিত্র।