ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী ‘শব-ই-মেরাজ’কে ‘রাত্রির যাত্রা’ এবং আরবি ভাষায় ‘লাইলাত আল মিরাজ’ও বলা হয়। প্রতি বছর ইসলামি রজব মাসের ২৭ তারিখে পালন করা হয় ‘শব-ই-মেরাজ’। ২০২৫ সালের ২৭ জানুয়ারি থেকে এই উৎসব শুরু হবে ভারত, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশে। 'শব-ই-মারাজ' ইসলামের সবচেয়ে পবিত্র অনুষ্ঠানগুলির মধ্যে একটি এবং প্রতি বছর মুসলিম সম্প্রদায়গুলি এর জন্য বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। চাঁদ দেখার পর 'শব-ই-মেরাজ'-এর তারিখ নির্ধারণ করা হয়। আরবীতে রজব মানে সম্মান করা বা ভয় পাওয়া। এই মাসে যুদ্ধ করা হারাম বলে মনে করা হয়। ইসলামিক ক্যালেন্ডারের সপ্তম মাস এবং শাবান ও রমজান মাসের মধ্যে পড়ে রজব।

ইসলামিক চারটি পবিত্র মাসের একটি রজব মাস হওয়ায় এটি মুসলমানদেরকে ইসলামের নির্দেশ অনুসরণ করতে হয় এবং নৈতিক ও আধ্যাত্মিকভাবে শক্তিশালী হতে হয়। রজব মাসে আল্লাহর কাছে দোয়া করা, মেরাজের কাহিনী পাঠ করা এবং কিয়াম আল-লাইলের ইবাদত করা উচিত। চাঁদ দেখার উপর নির্ভর করে রজব মাসের তারিখ, তাই সঠিক তারিখ এখনও নিশ্চিত করা হয়নি। ভারতে ২০২৫ সালের ১ জানুয়ারি, রাতে যদি চাঁদ দেখা যায়, তাহলে ২০২৫ সালের ২ জানুয়ারি থেকে শুরু হবে রজব মাস, কিন্তু যদি কোনও কারণে চাঁদ দেখা না যায়, তাহলে ২০২৫ সালের ৩ জানুয়ারি থেকে শুরু হবে রজব মাস। পবিত্র রজব মাস ইসলামের ইতিহাসে অনেক বড় ঘটনার সঙ্গে জড়িত। এটি ১৩ রজব, ইসরা এবং মেরাজে ইমাম আলীর জন্মকে চিহ্নিত করে, ২৭ রজব তারিখে নবী মুহাম্মদ (সা.)-এর অলৌকিক রাতের যাত্রা।

৯ হিজরিতে তাবুকের যুদ্ধ মুসলিম ঐক্যের পরিচয় দেয়, যখন সালাহউদ্দিন আল-আইয়ুবি ২৭ রজব ৫৮৩ হিজরি (১১৮৭ খ্রিস্টাব্দ) জেরুজালেম মুক্ত করেন। ইসলাম-পূর্ব যুগেও পবিত্র রজব মাস শান্তির মাস হিসেবে সম্মানিত ছিল। রজব মাসকে ইসলামের চারটি পবিত্র মাসের মধ্যে একটি হিসেবে বিবেচনা করা হয়, কারণ এটি শান্তির সময় এবং যুদ্ধ ও সহিংসতা নিষিদ্ধ। মুসলমানরা এই মাসটি প্রতিফলিত করে, ক্ষমা প্রার্থনা করে এবং আল্লাহর সঙ্গে তাদের সম্পর্ক জোরদার করার চেষ্টা করে। রজব সময়কে রমজানের আধ্যাত্মিক প্রস্তুতি হিসেবে দেখা হয় এবং এটি উপাসনা ও ভালো কাজ করতে উৎসাহিত করে। রজব মাস বরাবরই পবিত্র মাস হিসেবে সম্মানিত। এই মাসটি দাতব্য, শান্তি, হৃদয়কে পরিশুদ্ধ করার এবং মুসলমানদের আধ্যাত্মিকভাবে বেড়ে উঠতে সাহায্য করার সময়।