হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ সারা বছর ধরে পালন করে বিভিন্ন উৎসব, যার মধ্যে একটি হল কর্ম পুজো। প্রধানত ঝাড়খণ্ড, বিহার, আসাম, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড় এবং পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্যগুলিতে অত্যন্ত আড়ম্বরপূর্ণভাবে পালন করা হয় কর্ম পুজো। উপজাতীয় সংস্কৃতির এই গুরুত্বপূর্ণ প্রাকৃতিক উৎসবটি প্রতি বছর পালন করা হয় ভাদ্র মাসের শুক্লপক্ষের একাদশী তিথিতে। ভাই-বোনের সম্পর্কের মধ্যে প্রেম-ভালোবাসা বাড়াতে কর্ম পুজোর বিশেষ গুরুত্ব রয়েছে। এই দিনে পুজো করে পারিবারিক সম্পর্ক মজবুত করার চেষ্টা করে মানুষ।

২০২৪ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পালিত হচ্ছে কর্ম পুজোর উৎসব। এই উৎসবের প্রধান দেবতা কর্ম ও ধর্ম, যাদের প্রতি শ্রদ্ধা ও বিশ্বাস প্রকাশ করা হয় এই দিনে। ঝাড়খণ্ডের দ্বিতীয় বৃহত্তম প্রাকৃতিক উৎসব হল কর্ম পুজো, যা বহু শতাব্দী ধরে আদিবাসীরা পালন করে আসছে। নৈতিকতা, ঐতিহ্য ও সামাজিক ঐক্যের প্রতীক এই উৎসব। মান্যতা রয়েছে যে বোনেরা তাদের ভাইদের দীর্ঘায়ু এবং সমৃদ্ধ ভবিষ্যত কামনা করে এই দিনে। উপজাতীয় সম্প্রদায়ের মানুষ ঢোল ও মান্দার তালে নাচ ও গান করে এই দিনে, যা আদিবাসী সংস্কৃতির প্রতীক। এছাড়া এই দিনে পুজো করার মাধ্যমে, আদিবাসীরা ভালো ফসল কামনা করে এবং বোনেরা তাদের ভাইদের মঙ্গল কামনা করে।

কর্ম উৎসবের দিন পুজো শুরু করার আগে উঠানের মাঝখানে কর্ম গাছের একটি ডাল লাগানো হয়। কর্ম গাছ লাগানোর পর পুজোয় অংশগ্রহণ করে পরিবারের সকল সদস্য। প্রকৃতিকে দেবতা মনে করে পুজো করা হয় এদিন। পুজোর সময় কর্ম ও ধর্মের কাহিনী পাঠ হয়। কর্মোৎসবের দিনে উপবাস করে নখ কেটে স্নান করে পায়ে আলতা পরে নিজেকে রঙিন নতুন পোশাকে এবং গয়নাতে সাজিয়ে তোলে বোনেরা। এদিন পুজোর স্থানে মহিলারা করমাইতি করমের পাতায় শসা রেখে ৫ বার কাজল ও সিঁদুর লাগানোর পর শসার ওপর চালের গুঁড়ো দিয়ে শসাটিকে গোল টুকরো করে কেটে বিভিন্ন স্থানে সুতোয় বেঁধে দেওয়া হয়। শসাকে পুত্রের প্রতীক মনে করা হয়, তাই কর্ম দেবকে শসা উৎসর্গ করে মহিলারা সুস্থ পুত্র কামনা করেন।