জন্মাষ্টমী (Photo Credits: File Photo)

জন্মাষ্টমী (Janmashtami 2021) বা কৃষ্ণজন্মাষ্টমী বিষ্ণুর অবতার কৃষ্ণের জন্মদিন হিসেবে পালিত হয়। এর অপর নাম কৃষ্ণাষ্টমী, গোকুলাষ্টমী, অষ্টমী রোহিণী, শ্রীকৃষ্ণজয়ন্তী ইত্যাদি। হিন্দু শাস্ত্রে যে ক্যালেন্ডার হয় তাতে অষ্টমী তিথিতে জন্মছিলেন ভগবান শ্রী কৃষ্ণ ৷ হিন্দু পঞ্জিকা অনুযায়ী, সৌর ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে যখন রোহিণী নক্ষত্রের প্রাধান্য দেখা যায়, তখন জন্মাষ্টমী পালিত হয়। ওই দিন কৃষ্ণের বালক রূপের বা নাড়ু গোপালের পুজো করা হয়।

পুজোর সময় এবং নির্ঘণ্ট: এবছর জন্মাষ্টমীর পুজো হবে ৩০ অগাস্ট সোমবার ৷ সোমবার ৩০ অগাস্ট ভোর থেকেই শুরু তিথি। যা শেষ হচ্ছে ৩১ অগাস্ট মঙ্গলবার সকাল ৯টা বেজে ৪৪ মিনিটে। অষ্টমী তিথি শেষ হচ্ছে সোমবার রাত ১ টা ৫৯ মিনিটে। রোহিনী নক্ষত্র শুরু হচ্ছে ঠিক সকাল ৬টা বেজে ৩৯ মিনিটে। পঞ্জিকা অনুযায়ী সোমবার বেলা ১১টা ৫৯ মিনিট থেকে ১২টা ৪৪ মিনিট পর্যন্ত থাকছে শুভ যোগ। ৪৫ মিনিটের মধ্যে পুজো সম্পন্ন করতে হবে। এই সময় শ্রীকৃষ্ণের জন্ম হয় বলে ধরে নেওয়া হয়। তবে মঙ্গলবার সকাল ৯টা বেজে ৪৪ মিনিট পর্যন্ত এই ব্রত পালন করা যাবে।

জন্মাষ্টমী পুজোর বিধি: জন্মাষ্টমী পুজোর জন্য ফুল, আতপ চাল, ফলের নৈবেদ্য, তুলসীপাতা, দূর্বা, ধূপ, দীপ, পঞ্চগব্য, পঞ্চগুড়ি, পাট, বালি, পঞ্চবর্ণের গুড়ো, মধুপর্ক, আসন-অঙ্গুরীর আয়োজন করতে হয়। সারাদিন উপবাসে থেকে উপকরণগুলি দিয়ে শ্রীকৃষ্ণের পুজো করতে হয়। গোপালকে একাধিক সুগন্ধীতে সাজিয়ে তাঁকে স্নান করানোর রীতি প্রচলিত। এরপর নতুন পোশাক পরিয়ে তাঁকে সাজানো হয়। গোপালের জন্য সাজানো হয় ভোগের থালা, তাতে থাকে পোলাও, লুচি, পায়েস, তালের বরা, লাড্ডু, নাড়ু ইত্যাদি৷

পুজোর গুরুত্ব: জন্মাষ্টমীর দিন নিয়ম মেনে ভগবান কৃষ্ণের পুজো করলে সমস্ত মনোস্কামনা পূর্ণ হয়। নিঃসন্তান দম্পতিও সন্তান লাভ করতে পারে। কোনও দম্পতি সন্তান চাইলে এই দিনটিকে শুভ বলে মনে করা হয়। ইচ্ছা খুব শীঘ্রই পূরণ হয় বলে বলা হয়ে থাকে।

হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা বিশেষত বৈষ্ণবদের কাছে জন্মাষ্টমী একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসব। এই উৎসব নানা ভাবে উদযাপন করা হয়। যেমন - ভগবত পুরাণ অনুযায়ী নৃত্য, নাটক যাকে বলা হয় রাসলীলা বা কৃষ্ণ লীলা, মাঝরাতে শ্রীকৃষ্ণের জন্মের মুহূর্তে ধর্মীয় গান গাওয়া, উপবাস, দহি হান্ডি তৈরি করা হয়। রাসলীলা তে মূলত শ্রীকৃষ্ণের ছোটবেলার বিভিন্ন ঘটনা দেখানো হয়। অন্যদিকে দহি হান্ডি প্রথায় অনেক উঁচুতে মাখনের হাড়ি রাখা হয় এবং অনেক ছেলেরা মিলে মানুষের পিরামিড তৈরি করে সেই হাড়ি ভাঙে। শ্রীকৃষ্ণের জন্ম তিথিতে মধ্যরাতে তার ছোট ছোট মূর্তি কে স্নান করিয়ে কাপড় দিয়ে মোছা হয় এবং দোলনায় সাজানো হয়। তামিলনাড়ুতে এই প্রথা উড়িয়াদি নামে পরিচিত। সারা ভারতবর্ষজুড়ে এই উৎসব ধুমধাম করে পালিত হয়। তবে অতিমারির কারণে ছোট করেই অনুষ্ঠিত হবে জন্মাষ্টমী।