প্রতি বছর ১৫ নভেম্বর পালন করা হয় বিরসা মুন্ডার জন্মবার্ষিকী, এই দিনটিকে বলা হয় বিরসা মুন্ডা জয়ন্তী। ভারতীয় ইতিহাসে একজন মহান বীর হিসেবে পরিচিত বিরসা মুন্ডা। ভারতের ঝাড়খণ্ডে একজন মহান বিপ্লবী হিসেবে ভূমিকা পালন করেছিলেন তিনি। আদিবাসী সমাজের অবস্থা ও দিক পরিবর্তনে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছিলেন বিরসা মুন্ডা। কালো আইনকে চ্যালেঞ্জ করে ব্রিটিশ সরকারের বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন তিনি। ১৮৭৫ সালের ১৫ নভেম্বর ঝাড়খণ্ডের উলিহাতু গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন বিরসা মুন্ডা।
ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে একজন গুরুত্বপূর্ণ উপজাতীয় নেতা ছিলেন বিরসা মুন্ডা। মুন্ডা সম্প্রদায়ের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস হিসেবে বিবেচিত তিনি। ব্রিটিশদের অন্যায় ও আদিবাসীদের শোষণের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছিলেন বিরসা মুন্ডা। আদিবাসী সম্প্রদায়ের অধিকারের জন্য লড়াই করেছেন তিনি। উলগুলান নামে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধেও আন্দোলন শুরু করেছিলেন বিরসা মুন্ডা। এই আন্দোলনের উদ্দেশ্য ছিল আদিবাসীদের জমি ও সংস্কৃতি রক্ষা করা। ভারতীয় স্বাধীনতা সংগ্রামে আদিবাসীদের ভূমিকাকে একটি নতুন দিকনির্দেশনা দিয়েছিলেন বিরসা মুন্ডা। বর্তমানে উপজাতীয় সম্প্রদায়ে দেবতা হিসেবেও পুজো করা হয় বিরসা মুন্ডাকে।
২০২১ সালে বিরসা মুন্ডার অবদানকে সম্মান জানাতে ১৫ নভেম্বর তাঁর জন্মদিনটি জাতীয় স্তরে উপজাতীয় গর্ব দিবস হিসেবে ঘোষণা করে ভারত সরকার। এরপর থেকে প্রতি বছর ১৫ নভেম্বর পালন করা হয় বিরসা মুন্ডা জয়ন্তী। বিরসা মুন্ডার উত্তরাধিকার এবং ভারতের উপজাতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনে তাঁর ভূমিকাকে সম্মান জানাতে শুরু করা হয়েছিল বিরসা মুন্ডা জয়ন্তী। প্রধানত ঝাড়খণ্ড, ওড়িশা, ছত্তিশগড় এবং পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্যগুলিতে বিরসা মুন্ডাকে স্মরণ করে পালন করা হয় এই দিনটি। বিরসা মুন্ডা জয়ন্তী কেবল একজন মহান নেতার জন্মদিনই নয়, এটি উপজাতীয় সমাজের সংগ্রাম, আত্মসম্মান এবং তাদের অধিকার রক্ষার প্রতীক হিসেবে বিবেচিত হয়।
বিরসা মুন্ডা জয়ন্তী সমগ্র দেশের আদিবাসী সমাজের জন্য একটি গর্বের দিন। বিরসা মুন্ডা আদিবাসী সমাজে নতুন চেতনা সৃষ্টি করেছিলেন। আদিবাসীদের মধ্যে আত্মসম্মান ও ঐক্যের বোধ তৈরি করতে সংগ্রাম করেছিলেন তিনি। বিরসা মুন্ডার জন্মবার্ষিকী সামাজিক ন্যায়বিচার, সমতা এবং অধিকার সুরক্ষার গুরুত্ব প্রতিফলিত করে। বিরসা মুন্ডার জীবন বার্তা দেয় যে কোনও সম্প্রদায়কে তাদের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা উচিত নয়। তাঁর জীবন থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে সমাজে সাম্য ও ন্যায়বিচার বজায় রাখতে অনুপ্রাণিত করে এই দিনটি। এছাড়া যুব সমাজের মধ্যে তাঁর আদর্শকে অনুপ্রাণিত করার জন্য কাজ করা হয় বিরসা মুন্ডা জয়ন্তীতে।