গুয়াহাটি, ১৩ ডিসেম্বর: নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের (CAB Protest) বিরোধিতায় ক্রমশ খারাপ হচ্ছে অসমের (Assam) পরিস্থিতি। মঙ্গলবারের প্রতিবাদ বুধবারে আগুনে বদলে যায়। বৃহস্পতিবার যখন রাজ্যপ্রশাসন আর উত্তপ্ত অসমকে শান্ত করার ভার নিতে পারল না তখন নামল সেনাবাহিনী। রাজ্যের বেশিরভাগ শহরেই চলছে কার্ফিউ । ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে রাখা হয়েছে। আগামী ৪৮ ঘণ্টা হয়তো গুজব এড়াতে বন্ধ থাকবে। কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক সংবাদ মাধ্যমগুলিকে অসমের উত্তেজনার খবর পরিবেশনেও নিষেধ করেছে। এদিকে বৃহস্পতিবার দিন গড়াতে না গড়াতেই অশান্তির আঁচে পাঁচ জনের মৃত্যুর খবর এসেছে অসম থেকে। যদিও সরকারি মতে মৃতের সংখ্যা তিন।
গুয়াহাটি সৈনিক ক্যান্টিনের কর্মী দীপাঞ্জল দাস। তিনি গুয়াহাটির লাসিত নগরে নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে প্রাণ হারান। তিনসুকিয়ায় আগুনে পুড়ে মারা গিয়েছেন নারায়ণ নামে এক প্রৌঢ়। আদতে বিহারের বাসিন্দা নারায়ণ হিজুগুড়ি এলাকায় বাঙালি মালিকানাধীন একটি হোটেলে কাজ করতেন। গুয়াহাটিরই হাতিগাঁও এলাকার শঙ্করপথে পুলিশকে লক্ষ্য করে আন্দোলনকারীরা টানা পাথর ছু়ড়তে শুরু করলে এক সময় গুলি চালায় পুলিশ। তাতে আরও এক আন্দোলনকারীর মৃত্যু হয়। তৃতীয় বার গুলি চালানো হয়েছে গুয়াহাটিরই বৈশিষ্ট্যের নতুন বাজারে। দ্বিতীয় ও তৃতীয় ঘটনায় মৃতদের নাম-পরিচয় এখনও জানা যায়নি। যদিও বেসরকারি সূত্রের দাবি, শঙ্কর পথে মৃতের সংখ্যা দুই। বশিষ্ঠ নতুন বাজার এলাকাতেও এক জন পুলিশের গুলিতে মারা গিয়েছেন। ডিব্রুগড়ে মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল এবং কেন্দ্রীয় খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ মন্ত্রী রামেশ্বর তেলির বাড়িতে হামলার চেষ্টা হলে পুলিশের লাঠি ও গুলিতে বেশ কয়েক জন বিক্ষোভকারী জখম হন। দু’জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। তবে নাগরিকত্ব বিল পাসের পর অসমিয়া রোষ থেকে বাদ পড়ছেন না ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার বাঙালিরাও। আরও পড়ুন-Ayodhya Verdict: অযোধ্যার মামলার চূড়ান্ত রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন খারিজ করল সুপ্রিম কোর্ট
Two persons, protesting against Citizenship (Amendment) Bill, die of bullet injuries at Gauhati Medical College and Hospital, says Official
— Press Trust of India (@PTI_News) December 12, 2019
উল্লেখ্য, পরিস্থিতির ভয়াবহতা দেখে বৃহস্পতিবার দুপুরে সিদ্ধান্ত হয়, অসমের অন্তত ১০টি জেলায় আরও ৪৮ ঘণ্টা ইন্টারনেট ও মোবাইল পরিষেবা বন্ধ রাখা হবে। গুজব রুখতে বুধবার ইন্টারনেট ও মোবাইল ফোন পরিষেবা বন্ধ করে দিয়েছিল প্রশাসন। বৃহস্পতিবার বিকেলে উত্তপ্ত অসমে আইনশৃঙ্খলার দায়িত্ব দেওয়া হয় সেনাবাহিনীকে। গুয়াহাটির ইউনিফাইড কমান্ডারের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। একইসঙ্গে ওদালগুড়ি, শোণিতপুর, ডিব্রুগড়, ডিমহাস-সহ বেশ কয়েকটি জেলার পুলিশ সুপারদের সরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন অসমের শীর্ষ প্রশাসনিক কর্তারা। সেখানেই সিদ্ধান্ত হয়, রাজ্য পুলিশের নিয়ন্ত্রণে আর নেই গোটা পরিস্থিতি। তাই আইনশৃঙ্খলার দায়িত্ব দেওয়া হোক সেনাবাহিনীকেই। তবে শুক্রবার সকালে আটটা থেকে বেলা একটা পর্যন্ত ডিব্রুগড়ে কার্ফিউ শিথিল করা হয়েছে।