দিল্লি পুলিশের সদর দপ্তরের ,সামনে ছাত্রদের ধর্না (Photo Credit: ANI)

কলকাতা, ১৬ ডিসেম্বর: পুলিশের লাঠির ঘা ওদের মনে ভয় ধরাতে পারেনি। সতীর্থর উপরে নেমে আসা হামলার প্রতিবাদে সরব দেশের ছাত্রদল। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের (Citizenship (Amendment) Act (CAA)) প্রতিবাদে জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (Jamia Millia Islamia) পড়ুয়া ও শিক্ষকদের ডাকা বিক্ষোভ ঘিরে রবিবার বিকেলে দিল্লির জামিয়া নগর এলাকা উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। বিক্ষোভ চলাকালীন পরপর বাসে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। চলে ভাঙচুর। যার জেরে লাঠিচার্জ করে পুলিশ। ব্যবহার করা হয় কাঁদানে গ্যাসের শেল। পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসার পরে জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিযান শুরু করে দিল্লি পুলিশ। বিনা অনুমতিতে গায়ের জোরে পুলিশ ক্যাম্পাসে ঢুকে পড়ুয়াদের ব্যাপক মারধর করেছে বলে দাবি করেছেন চিফ প্রক্টর ওয়াসিম আহমেদ খান। পুলিশ ইতিমধ্যেই এই অভিযোগ অস্বীকার করলেও জামিয়ার পড়ুয়াদের উপরে এই পুলিশি আক্রমণের প্রতিবাদে পথে নেমে পড়েছে দেশের ছাত্রসমাজ।

জামিয়ার ছাত্রদের উপরে নেমে আসা এই হামলাকে ভাল চোখে দেখছে না গোটা দেশের ছাত্রদল। রাত বাড়তেই এই পুলিশি হামলার প্রতিবাদে দেশজুড়ে শুরু হল বিক্ষোভ। দিল্লি পুলিশের সদর দপ্তরের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করল জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররা। হায়দরাবাদ থেকে পাটনা বিশ্ববিদ্যালয়। রবিবার রাতে দেশজুড়ে জামিয়ার পাশে থাকতে পথে নেমে পড়ল ছাত্ররা। বাদ যায়নি কলকাতার প্রতিবাদের মঞ্চ যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ও। রাত যত বেড়েছে, সোশ্যাল মিডিয়া ছেয়ে গিয়েছে নানা রাজ্যের ছবি-ভিডিওতে। পথে নেমেছে হায়দরাবাদের মৌলানা আজাদ উর্দু ইউনিভার্সিটি, বেনারসের হিন্দু ইউনিভার্সিটি, বম্বে আইআইটি। পথে নেমেছে কেরালার ছাত্র সংগঠন। আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়, রাজপথ ভরিয়েছে মশাল জ্বেলে। আরও পড়ুন-Jamia Millia Islamia University Standoff: জামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫০জন আটক ছাত্রকে ছাড়ল পুলিশ, একদিন পর রাজধানীতে স্বাভাবিক মেট্রো পরিষেবা

প্রতিবাদ মিছিল করে যন্তরমন্তরের দিকে হাঁটতে শুরু করেন পড়ুয়ারা। অবরুদ্ধ হতে শুরু করে পথঘাট। যান চলাচল থমকে যায় রাজধানীর নানা রাস্তায়। ব্যাহত হয় মেট্রো পরিষেবাও। ঘেরাও করা হয় দিল্লি পুলিশের সদর দফতর। রাত বাড়তেই দেশের নানা প্রান্তের ছাত্রছাত্রীরা পা মেলান একই মিছিলে। প্রতিবাদের একাত্মতায় ঘুচে যায় ভৌগোলিক দূরত্ব। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে নানা রাজ্যের ছবি। দেশজুড়ে পথে নামা এই বিপুল ছাত্রছাত্রীর কণ্ঠে শোনা গিয়েছে একটাই দাবি। জামিয়া মিলিয়ায় যে বর্বরোচিত আক্রমণ চলেছে ছাত্রছাত্রীদের উপর, তার বিচার চাই। আটক করা পড়ুয়াদের নিঃশর্ত মুক্তি চাই। প্রতিবাদ ফেটে পড়েছে আনাচকানাচে। দিল্লির রাজপথ মুখরিত হয়েছে স্লোগানে। স্লোগানে একের পর এক প্রশ্ন উঠেছে কেন্দ্রের শাসক দলের উদ্দেশে। শিক্ষার অধিকার চেয়ে, চাকরির প্রতিশ্রুতি চেয়ে গলা চিরে ফেলেছেন আন্দোলনকারীরা। কারও কারও হাতে দেখা গেছে গান্ধীজির ছবি।