বিক্ষোভে জামিয়া (Photo Credits: IANS)

নতুন দিল্লি, ১৬ ডিসেম্বর: রবিবার সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনের (CAA) বিরোধিতায় জ্বলছে গোটা রাজধানী। জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (Jamia Millia Islamia University) ঢুকে নির্বিচারে লাঠিচার্জ ও বিক্ষোভকারী ছাত্রদের আটকের অভিযোগ উঠেছে পুলিশের বিরুদ্ধে। প্রায় ৫০জন পড়ুয়াকে আটক করেছিল গতকাল আজ তাঁদেরই ছেড়ে দেওয়া হল। ৩৫ জন পড়ুয়াকে ছাড়ল কালকাজি থানার পুলিশ। বাকি ১৫জন ছাত্র ছাড়া পেলেন নিউ ফ্রেন্ডস কলোনি থানা থেকে। সাতসকালেই পুলিশের তরফে এই বিবৃতি দিয়েছেন এমএস রণধাওয়া (MS Randhawa)। একদিনের চরম বিক্ষোভের পর ফের রাজধানীতে মেট্রো পরিষেবা সোমবার সকালে থেকে স্বাভাবিক হয়েছে।

রবিবারই তুমুল হাঙ্গামার খবর আসে দিল্লির জামিয়া মিলিয়া এবং উত্তরপ্রদেশের আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। দু’জায়গাতেই প্রতিবাদী ছাত্রছাত্রীদের উপর কাঁদানে গ্যাস ছুড়েছে পুলিশ। করেছে লাঠিচার্জ। চালিয়েছে জলকামান। একাধিক পড়ুয়াকে আটক করা হয়েছে। জামিয়ার এক ছাত্রকে টেনে এনে মাটিতে ফেলে লাঠি দিয়ে পেটানোর ভিডিও-ও ভাইরাল হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। জামিয়া মিলিয়াতে গুলিও চলেছে বলে খবর এসেছে। এক ছাত্রের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেলেও, রাত পর্যন্ত তা নিশ্চিত করা যায়নি। দেশজুড়ে পথে নামা এই বিপুল ছাত্রছাত্রীর কণ্ঠে শোনা গিয়েছে একটাই দাবি। জামিয়া মিলিয়ায় যে বর্বরোচিত আক্রমণ চলেছে ছাত্রছাত্রীদের উপর, তার বিচার চাই। আটক করা পড়ুয়াদের নিঃশর্ত মুক্তি চাই। প্রতিবাদ ফেটে পড়েছে আনাচকানাচে। দিল্লির রাজপথ মুখরিত হয়েছে স্লোগানে। স্লোগানে একের পর এক প্রশ্ন উঠেছে কেন্দ্রের শাসক দলের উদ্দেশে। শিক্ষার অধিকার চেয়ে, চাকরির প্রতিশ্রুতি চেয়ে গলা চিরে ফেলেছেন আন্দোলনকারীরা। কারও কারও হাতে দেখা গেছে গান্ধীজির ছবি। আরও পড়ুন-Delhi violence: জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়ায় পুলিশি লাঠিচার্জে উত্তপ্ত রাজধানী, সংশ্লিষ্ট এলাকার সমস্ত স্কুল বন্ধের নির্দেশ দিল দিল্লি সরকার

অভিযোগ, এদিন বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছে প্রথমেই প্রধান ফটকগুলি বন্ধ করে দেয় পুলিশ। তার পরেই গ্রেফতার করে কিছু বহিরাগতকে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফে চিফ প্রোক্টর ওয়াসিম আহমেদ খানের অভিযোগ, “পুলিশ বাহিনী ক্যাম্পাসে ঢুকে পড়ে কোনও অনুমতি ছাড়াই। আমাদের কর্মী এবং ছাত্রদের মারধর করা হচ্ছে। তাদের ক্যাম্পাস ছেড়ে যেতে বাধ্য করা হয়েছে।” এর পরেই তেতে ওঠে আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটে জমায়েত হওয়া কয়েকশো প্রতিবাদী ছাত্রের উপর লাঠিচার্জ করে পুলিশ। ছোড়া হয় কাঁদানে গ্যাসও। চালানো হয় জলকামান। খালি করে দেওয়া হয় হস্টেল। বন্ধ করা হয় ইন্টারনেট। ৩০ জন পড়ুয়া আহত হয়েছে বলে দাবি করেন কর্তৃপক্ষ। ঘোষণা হয় জানুয়ারির ৫ তারিখ পর্যন্ত বন্ধ থাকবে বিশ্ববিদ্যালয়। একই কারণে ছুটি ঘোষণা হয় জামিয়া মিলিয়াতেও।