চোখের জলে শেষ বিদায় শীলা দীক্ষিতকে, পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষকৃত্য সম্পন্ন দিল্লির রূপকারের
চোখের জলে শেষ বিদায় শীল দীক্ষিতকে। (Photo Credits: IANS)

নয়া দিল্লি, ২১ জুলাই: চোখের জলে শেষ বিদায় দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিত (Sheila Dikshit)-কে। রবিবার দুপুর আড়াইটে নাগাদ দিল্লির নিগামবোধ ঘাটে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় শেষকৃত্য সম্পন্ন হল শীলা দীক্ষিতের। দিল্লিতে টানা ১৫ বছর মুখ্যমন্ত্রিত্ব করা শীলা দীক্ষিত চেয়েছিলেন, মৃত্যুর পর তাঁর মরদেহ যেন নিগামবোধ ঘাটেই শেষকৃত্য করা হয়। তাঁর ইচ্ছামতই শীলা দীক্ষিতের শেষকৃত্য সম্পন্ন হল। শেষকৃত্যে হাজির ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল (Arvind Kejriwal)।

গতকাল ৮১ বছর বয়সে দিল্লির এক হাসপাতালে প্রয়াত হন শীলা দীক্ষিত। শেষকৃত্য সম্পন্ন হওয়ার আগে কংগ্রেসের সদর দফতরে তাঁর মরদেহ শায়িত রাখা হয়। সোনিয়া গান্ধী ছলছলে চোখে বলেন, শীলা দীক্ষিতের মৃত্য কংগ্রেসের কাছে খুব বড় ক্ষতি।

মনমোহন সিং- প্রিয়াঙ্কা গান্ধী থেকে কমলনাথ-কংগ্রেসের সর্বস্তরের নেতা শীলা দীক্ষিতের মরদেহে মালা দিয়ে পার্টি অফিসে শেষ শ্রদ্ধা জানান। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল নিগামবোধ ঘাটে নিজে হাজির ছিলেন শীলা দীক্ষিতের শেষকৃত্য। যে শীলা দীক্ষিতকে হারিয়ে দিল্লিতে প্রথমবার হয়েছিল কেজরিওয়াল। শীলা দীক্ষিতকে শেষ শ্রদ্ধা জানান লালকৃষ্ণ আদবানি, সুষমা স্বরাজ-ও।

শীলা দীক্ষিতের আমলে দিল্লি একেবারে আধুনিক শহর হয়ে ওঠে। মেট্রো থেকে চোখধাঁধানো রাস্তায় দিল্লিকে প্রকৃত অর্থে মেট্রোপলিটন শহর করে তোলার পিছনে শীলা দীক্ষিতের বড় ভূমিকা আছে। কিছু নীতির বিরোধিতা করলেও দিল্লির উন্নয়নের পিছনে শীলা দীক্ষিতের প্রশংসা করতেন বিরোধী নেতারাও। দিল্লির মুখ্যমন্ত্রিত্ব পদ যাওয়ার পর, তিনি ২০১৪ সালে তিনি কেরলের রাজ্যপালও হয়েছিলেন। আরও পড়ুন- সারারাত 'বন্দি' প্রিয়াঙ্কা গান্ধী রাত কাটালেন ইলেকট্রিকহীন গেস্ট হাউসে

গান্ধী পরিবারের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ হতে পেরেছিলেন, নিজের স্বচ্ছ ভাবমূর্তি আর কাজের অসম্ভব ইচ্ছার জন্য়। বয়স হয়ে যাওয়া সত্ত্বেও সোনিয়া গান্ধী-রাহুল গান্ধী কিন্তু শীলা দীক্ষিতের ওপরই সবচেয়ে ভরসা করতেন। ২০১৭ উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচনেও শীলা দীক্ষিতকে গুরু দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। যদিও তাঁর রাজনীতির কেরিয়ারের শেষটা খুব একটা সুখকর ছিল না। তবে দিল্লিতে তাঁর কর্মযজ্ঞ, ভাঙাচোরা দিল্লিকে একেবারে আধুনিক করে তোলা, কংগ্রেসের সংগঠন মজবুত করার মত নানা কাজের জন্য শীলা দীক্ষিত আজীবন দেশের রাজনীতিতে উদাহরণ হয়ে থাকবেন।

ক মাস আগে শরীর খারাপ নিয়েও লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের প্রার্থী হয়েছিলেন শীলা দীক্ষিত। উত্তর পূর্ব দিল্লি লোকসভা কেন্দ্রে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি মনোজ তিওয়ারির কাছে সাড়ে ৩ লক্ষেরও বেশি ভোটে হারলেও, এত বয়সেও জোর কদমে প্রচারে প্রশংসা কুড়িয়েছিলেন ৮১ বছরের শীলা দীক্ষিত। তাঁর মৃত্যুর সঙ্গে দেশের রাজধানী শহরে কংগ্রেসের একটা যুগের শেষ হল।