লক্ষ্য বিধানসভা ভোট, দিদির মুখ রক্ষায় ধান রুইলেন বিধায়ক
ধান রুইছেন তৃণমূল বিধায়ক (Photo Credit: Social Media)

পূর্ববর্ধমান, ১ আগস্ট: জননেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনপ্রিয়তা যে পড়েছে তার প্রমাণ লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের ভরাডুবি। এরপরেই আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে আর ৪২-এ-৪২ বলার ভরসা রাখতে পারছেন না দিদি। ভোটের ফলাফল বেরলেই রাজ্যে প্রধান বিরোধী শক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে বিজেপি। গেরুয়া শিবিরের এভাবে উঠে আসাকে মেনে নিতে পারেননি তৃণমূলনেত্রী। তাই নিজের বাড়িতে কোর কমিটির বৈঠকে সাফ জানিয়ে দেন, এবার হারানো জমি ফিরে পেতে বিধায়কদের নিজেদের এলাকায় জনসংযোগ বাড়াতে হবে। নেত্রীর নির্দেশ মেনে ভরাবর্ষায় ধান রুইতে নামলেন তৃণমূল বিধায়ক। অভিনব ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ববর্ধমানে। আরও পড়ুন-বিল পাস করছি না বাড়ি বাড়ি পিৎজা ডেলিভার করছি? প্রধানমন্ত্রীকে বিঁধলেন ডেরেক ওব্রায়েন

বুধবার নিজের এলাকায় জনসংযোগ যাত্রা করছিলেন বর্ধমান উত্তরের বিধায়ক নিশীথ মালিক। যাত্রা সেরে ফেরার পথে মাঠে ক্ষেতমজুর ও চাষিদের ধান রুইতে দেখেন তিনি। তখনই এক কর্মীর কাছ থেকে লুঙ্গি, গামছা ও গেঞ্জি চেয়ে তা পরে নেমে পড়েন মাঠে। সবার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ধান রোয়ার কাজ করেন তিনি। বিধায়ককে এভাবে নেমে পড়তে দেখে প্রথমে কিছুটা চমকে যান খেতমজুর শেফালি কোঁড়া, জিতেন কোঁড়ারা। পরে অবশ্য সবাই মিলে কাজ করেন। কাজের শেষে ক্ষেতমজুর শেফালি কোঁড়ার বক্তব্য, “বিধায়ক হওয়ার আগে উনি আমাদের সঙ্গে অনেক কথা বলতেন। সমস্যার কথা শুনতেন। মাটিও কেটেছেন আমাদের সঙ্গে। আর বিধায়ক হওয়ার পর আমাদের দেখেও গাড়ি নিয়ে চলে যেতেন। আমাদের কাছে আসতেন না। আর আজ মাঠে নেমে ধান রোয়ার কাজ করলেন। এভাবে উনি আমাদের পাশে থাকলে, আমরাও ওনার পাশে থাকব।” আরেক ক্ষেতমজুর জিতেন কোঁড়া জানিয়েছেন, “বিধায়ক আমাদের সঙ্গে মাঠে নেমে কাজ করছেন। এতে ভালোই লাগছে। সারাবছর আমাদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখলে ভালোই হয়।”

উনিশের লোকসভায় খারাপ ফলের পর মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানোর জন্য দলের নেতা-বিধায়কদের নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। নেত্রীর নির্দেশ মেনে নিশীথবাবুর বক্তব্য, “আমি চাষি পরিবারের ছেলে। অল্প-বিস্তর জমিজমা রয়েছে পরিবারে। বিধায়ক হওয়ার আগে আমি মাঠে নেমে কাজ করেছি। পরবর্তীকালে ব্যস্ততার কারণে আর মাঠে নেমে কাজ করতে পারিনি। দিদির নির্দেশে জনসংযোগ যাত্রায় বেরিয়ে আবার সেটাই করলাম।” তবে নিশীথবাবুর কাজে সমালোচনা হলেও তিনি মানুষের সমস্যা শুনতে রাজি হয়েছেন।