নতুন দিল্লি, ২৮ মে: লকডাউনে বন্ধ জমির কাজ। বাড়িতেও ফিরতে পারছিল না শ্রমিকের দল। লকডাউন উঠলে চালু হল শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেন। সেই ট্রেনে চড়ে ফিরতে গিয়ে অনেক পরিযায়ী শ্রমিকের প্রাণ গেল। তবে হাজারও দুর্ভাগ্যের মধ্যে কিছু মানুষ তো সৌভাগ্যের দাবিদার হতেই পারে। যেমনটা ঘটেছে দিল্লিতে। সেখানকার ১০ জন পরিযায়ী শ্রমিক বিহারের বাসিন্দা। লকডাউনের কারণে দিল্লিতেই আটকে পড়েছিলেন তাঁরা। তাঁদের সহৃদয় মালিক মাশরুম চাষি পাপন সিং (Pappan Gehlot) ১০ শ্রমিকের জন্য বিহারগামী বিমানের টিকিট কেটেছেন। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ছটায় সেই বিমান পাটনাতে পৌঁছেছে। বিহারের সমস্তিপুরের এক গ্রামে থাকেন ওই ১০ জন।
জানা গিয়েছে, গত এপ্রিলেই সবাই মিলে বাড়িতে ফেরার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু মহামারীর প্রকোপ ও লকডাউনের পর ভাবতেও পারেননি যে কোনওদিন বাড়িতে ফেরা হবে। তবে ভাগ্য সহায় হলে কত কীই না, পায়ে হেঁটে বা ট্রেনে বাসে চড়ে নয় মালিকের মহানুভবতায় বিমানে চড়ে তাঁরা বিহারে ফিরলেন আজ। বিমানে চড়ে ছেলেক সহ্গে নিয়ে বিহারে ফিরছেন পরিযায়ী শ্রমিক লখিন্দর রাম। গতকাল পিটিআই-কেদেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, “আমি যে জীবনে কোনওদিন বিমানে চড়তে পারব তা কল্পনাও করিনি। আমার খুশি প্রকাশ করার ভাষা নেই। আগামীকাল যখন বিমানবন্দরে পৌঁছাবো তখন কী করব তা ভেবে সামান্য নার্ভাস বোধ করছি।” এজন্য তিনি দিল্লির তিগিপুরে মাশরুম কৃষক পাপন সিংয়ের কাছে তিনি কৃতজ্ঞ। যিনি খিদের জ্বালায় কাজ হারিয়ে বাড়ি ফিরতে গিয়ে মৃত্যু মুখে পতিত পরিযায়ী শ্রমিকদের নিষ্ঠুর ভাগ্যকে অন্যভাবে লেখার সহযোগিতা করেছেন। আরও পড়ুন- Tejashwi Yadav: শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেনে মৃত মা, শিশু সন্তানের জন্য ৫ লক্ষ টাকার আর্থিক সাহায্য ঘোষণা তেজস্বী যাদবের
Delhi: 10 migrant workers left from IGI Airport for Patna, Bihar today after their employer , a mushroom farmer paid for their flight tickets. One of the workers said, "I had never thought I will get to sit in an aeroplane, our employer made the arrangements for us". pic.twitter.com/YiUGURgj9o
— ANI (@ANI) May 28, 2020
যখন লখিন্দর তাঁর স্ত্রীকে ফোন করে জানান যে বিমানে চড়ে বিহারের উদ্দেশে রওনা হচ্ছেন। তখন স্বামীর কথা বিশ্বাসই করতে চাননি ওই গৃহবধূ। পরে পাপন সিং তার সঙ্গে কথা বললে বিষয়টি বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়। আটবছর ধরে পাপন সিংয়ের জমিতে কাজ করছেন লখিন্দরের ছেলে নবীন রাম। আর বছর ৫০ এর লখিন্দর ২৭ বছর ধরে পাপন সিংয়ের জমির শ্রমিক। তিনি বলেন, লকডাউন শুরু সময় থেকেই তাঁদের থাকা খাওয়ার যাবতীয় দায়িত্ব নিয়েছেন পাপন সিং।সবমিলিয়ে ৬৮ হাজার টাকা খচ করে ১০ জনের টিকিট কেটেছেন পাপন সিং। এছাড়াও প্রত্যেককেই আলাদা করে ৩ হাজার টাকা দিয়েছেন যাতে বিহারে পৌঁছে তাঁদের কোনও সমস্যার মুখে পড়তে না হয়। শ্রমিক স্পেশ্যাল ট্রেন ১০জন কর্মীকে ফেরানোর বহু চেষ্টা করেও ম্যানেজ করতে পারেননি পাপন সিং। তাইবলে তাঁর শ্রমিকদের হেঁটে বাড়ি ফেরাতেও রাজি হননি তিনি।