তিরুবনন্তপুরম, ১৪ জানুয়ারি: কেন্দ্রের বিজেপি সরকার ২০১৯-এর একেবারে শেষ লগ্নে এসে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (CAA) করে ফেলল। প্রথম দিন থেকেই এই আইনের বিরোধিতা করে আসছিল কেরালার পিনারাই বিজয়নের সরকার (Kerala government)। পশ্চিমবঙ্গেও সিএএ কার্যকরী হবে না তা জানিয়ে দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সিএে নিয়ে বিতর্কের প্রয়োজন রয়েছে জানিয়েছেন বিহারের মুখ্যমন্ত্রী তথা বিজেপির শরিক দল জেডিইউ প্রধান নীতীশ কুমার। এবার প্রথম রাজ্য হিসেবে সিএএ-র বৈধতা সুপ্রিম কোর্টে মামলা করল কেরালা। এই আইনের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যেই ৬০টিরও বেশি পিটিশন জমা পড়েছে সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court)।তার সঙ্গে যুক্ত হল কেরল সরকারের আবেদন। কেরল সরকার তার পিটিশনে জানিয়েছে, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন সংবিধানের বিভিন্ন ধারা লঙ্ঘন করেছে। তাতে সাম্যের অধিকার মানা হয়নি। ধর্মনিরপেক্ষতার নীতিকেও স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি।
উল্লেখ্য, সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনানুসারে পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান থেকে ধর্মীয় কারণে অত্যাচারের শিকার হয়ে পালিয়ে আসা অ-মুসলিমদের নাগরিকত্ব দেবে ভারত সরকার। ধর্মীয় পরিচয়কে নাগরিকত্ব প্রদানের মাপকাঠি হিসেবে ধরা হয়েছে, এই কারণে উত্তাল গোটা দেশ। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে আদালত প্রাঙ্গন সব জায়গাতেই চলছে বিক্ষোভ। অনেক জায়গায় আন্দোলন হিংসাত্মক রূপ নেয়। উত্তরপ্রদেশে গুলিতে অন্তত ২০ জন মারা যান। পুলিশ অবশ্য বলেছে, মাত্র এক জায়গায় গুলি চালানো হয়েছিল। আরও পড়ুন-Parliament Canteen: আর চপ কাটলেট নয়, পার্লামেন্টের ক্যান্টিনে এবার থেকে নিরামিষ পদ
এদিকে কেরালার বাম নেতৃত্বাধীন সরকার শীর্ষ আদালতে করা আবেদনে জানিয়েছে যে সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন সংবিধানের একাধিক ধারাকে লঙ্ঘন করেছে। যার মধ্যে রয়েছে সংবিধান বর্ণিত প্রত্যেক মানুষের সমান অধিকারের স্বীকৃতি। এছাড়া দেশের ধর্মনিরপেক্ষ পরিচয়কেও এই আইন লঙ্ঘন করে বলে অভিযোগ করা হয়েছে। ১৪, ২১ ও ২৫ নম্বর ধারা লঙ্ঘন করেছে। ১৪ নম্বর ধারায় সব নাগরিককে সমান অধিকার দেওয়া হয়েছে। ২১ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, ‘আইনসঙ্গত পথে ছাড়া কোনও নাগরিককে জীবনের অধিকার ও ব্যক্তিগত স্বাধীনতা থেকে বঞ্চিত করা যাবে না।’ ২৫ নম্বর ধারায় বলা হয়েছে, ‘প্রত্যেক ব্যক্তি তাঁর বিবেক অনুযায়ী কাজ করতে পারবেন।’ এর পাশাপাশি ২০১৫-র পাসপোর্ট আইনে আনা বদল এবং ফরেনার্স অ্যামেন্ডমেন্ট অর্ডারের বৈধতাকেও চ্যালেঞ্জ করেছে কেরালার পিনারাই বিয়জন সরকার।