বেঙ্গালুরু, ২০ জুলাই: স্ত্রীকে 'দুধ দেওয়া গরু' অর্থাৎ টাকার মেশিন হিসেবে ব্যবহার করছে স্বামী। এটা বুঝতে পেরেই এক দম্পতির বিবাহ বিচ্ছেদ মঞ্জুর করল কর্ণাটক হাইকোর্ট (Karnataka High Court)। বিচারপতি অলোক আরাধে ও জেএম খাজির ডিভিশন বেঞ্চ এই রায় দেয় যে, স্বামী যেভাবে স্ত্রীকে টাকার মেশিন হিসেবে ব্যবহার করেছে, তা নিঃসন্দেহে নিষ্ঠুরতার শামিল।
প্রমাণ হিসেবে বিবাহ বিচ্ছেদের আবেদনকারী মহিলা যে নথি ও ব্যাঙ্ক অ্য়াকাউন্ট রেকর্ড আদালতে পেশ করেছেন, তা থেকে একটা জিনিস বেশ বোঝা যাচ্ছে যে, গত কয়েক বছরে স্বামীকে ৬০ লক্ষ টাকা তিনি দিয়েছেন।
বেঞ্চ বলেছে, এটা স্পষ্ট যে মহিলার স্বামী তাঁকে টাকার মেশিন হিসেবে ব্যবহার করেছেন নিয়ত। স্ত্রীর প্রতি তাঁর কোনও মানসিক টান ছিল না, নেইও। স্বামীর এহেন মনোভাব স্ত্রীর মানসিক যন্ত্রণা বাড়িয়েছে। এই নিষ্ঠুরতা থেকে মহিলাকে মুক্তি দিতেই বিবাহ বিচ্ছেদ মঞ্জুর করা হল। আরও পড়ুন-Viral Video: মেট্রোতে নাচের রিল বানিয়ে বেজায় বিপাকে তরুণী (দেখুন ভিডিও)
এর আগে বিচ্ছেদ চেয়ে পারিবারিক আদালতের দ্বারস্থ হয়েছিলেন ওই গৃহবধূ। তবে ২০২০-তে সেই মামলা খারিজ করে দেয় নিম্ন আদালত। এবার নিম্ন আদালতের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন ওই মহিলা। এল সফলতাও।
নিম্ন আদালতের রায়ের পরিপ্রেক্ষিতে হাইকোর্ট জানিয়েছে, আবেদনকারীর বক্তব্য না শুনে বিরাট ভুল করেছে পারিবারিক আদালত। আবেদনকারীর সাক্ষ্য যাচাই করা উচিত ছিল।
১৯৯৯ সালে চিককামাগালুরুতে ওই দম্পতি বিয়ে করে। পরের বছর ২০০১ সালে তাঁদের সন্তানের জন্ম হয়। মহিলা জানিয়েছেন, স্বামীর পরিবারে আর্থিক সঙ্কট থকায় বাবা-মা ভাইবোনের মধ্যে নিত্য অশান্তি লেগে থাকত।
এই পরিস্থিতিতে পরিবারটিকে বাঁচাতে ওই গৃহবধূ সংযুক্ত আরব আমীরশাহিতে চাকরি নেন। স্বামীর নামে কৃষিজমিও কেনেন। তারপরেও স্বামী আর্থিকভাবে স্বনির্ভর হওয়ার চেষ্টা করেননি। এমনকী স্ত্রীর আর্থিক চাহিদা মেটানোর কোনও চেষ্টাই তিনি করেননি।
এরপর ২০১২ সালে দুবাইতে স্বামীর জন্য স্যাঁলো কিনে নেন স্ত্রী। তারপরেও ব্যবসায় মনোযোগী না হয়ে পরের বছরই ভারতে ফিরে আসেন স্বামী।
এদিকে নিম্ন আদালতে দায়ের হওয়া বিচ্ছে মামলার শুনানিতে একদিনও গৃহবধূর স্বামী উপস্থিত না থাকায় মামলাটি একপেশে হয়ে পড়ে। রায়দানের সময় নিম্ন আদালত জানিয়েছিল, স্বামীর নিষ্ঠুরতার কোনও প্রমাণ মেলেনি। তাই বিবাহ বিচ্ছেদ হবে না।