নতুন দিল্লি, ২০ ডিসেম্বর: 'আমার সকল কাঁটা ধন্য করে ফুটবে ফুল ফুটবে। আমার সকল ব্যথা রঙিন হয়ে গোলাপ হয়ে উঠবে।' দীর্ঘকাল আগে বলে গিয়েছিলেন রবি ঠাকুর। সেই পথেই হাঁটলেন জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের (Jamia Millia Islamia University) পড়ুয়ারা। যাদের লাঠিচার্জে রক্তাক্ত হয়েছিলেন শুক্রবার, তাদের হাতেই লাল গোলাপ (Red Rose) তুলে দিলেন ভবিষ্যতের কাণ্ডারিরা। বেশ কয়েক দিনের জামিয়ার চিত্রটা বদলে গেল মুহূর্তের জন্য। পড়ুয়াদের হাতে লাল গোলাপ। বিনয়ের সঙ্গে এগিয়ে দিচ্ছেন পুলিশদের দিকে। মুখে সংহতির গান। হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন সৌভ্রাতৃত্বের হাত। মন বলছে- এ দেশ তোমার, আমার, সবার।
ঘৃণা নয়, ভালবাসাই একমাত্র পথ! অগ্নিগর্ভ দিল্লির (Delhi) বেহাল দশা ফেরাতে এখন এটাই মূলমন্ত্র পড়ুয়াদের কাছে। হাতে লাল গোলাপ নিয়ে, গিটারে গান তুলে তাঁরা এদিন গাইলেন সংহতির গান। যেন আঁধার নিশা কাটিয়ে এক নতুন ভোর। নতুন শুরুর সকাল। বন্ধ হওয়া ইন্টারনেট পরিষেবা, জারি ১৪৪ ধারা কিন্তু এসবের মাঝেও পুলিশি বাঁধা অগ্রাহ্য করে ছাত্রছাত্রীরা পৌঁছে গিয়েছিলেন যন্তর মন্তরে সামনে। সেখানেই দেখা গেল ওঁরা গোলাপ এগিয়ে দিচ্ছেন পুলিশের দিকে। শোনাচ্ছেন সংহতির গান। আরও পড়ুন: Nirmala Sitharaman Takes On Mamata Banerjee: 'মুখ্যমন্ত্রীর এমন কথা বলা দায়িত্বহীনতার পরিচয়', মমতা ব্যানার্জিকে তুলোধোনা নির্মলা সীতারমনের
#WATCH Delhi: Students of Jamia Millia Islamia university offer roses to police personnel, deployed for security. #CitizenshipAmendmentAct pic.twitter.com/LM9wioOztK
— ANI (@ANI) December 20, 2019
গত ১৫ ডিসেম্বর থেকে উত্তপ্ত জামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়। পড়ুয়াদের প্রতিবাদ মিছিলে লাঠিচার্জ, ক্যাম্পাসে ঢুকে কাঁদানে গ্যাস। পুরুষ থেকে মহিলা, কোনও হোস্টেলই বাদ যায়নি, যা পুলিশি অভিযান থেকে রেহাই পেয়েছে। লাঠিচার্জের জন্য কারও মাথা ফেটেছে তো কেউ বা আবার শরীরের নানান জায়গায় ক্ষত জমেছে। যার প্রতিবাদে উত্তাল হয়েছে গোটা দেশ। তবে এদিন ‘Go Back Police’ স্লোগানের বদলে শোনা গেল সৌভ্রাতৃত্বের গান। বইল সংহতির হাওয়া। প্রতিবাদী কণ্ঠ দিয়ে বেরিয়ে এল সুরের মূর্ছনা। নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের (Citizenship Amendments Act) প্রতিবাদে আক্রান্ত রাজধানী। জলকামান, গোলাগুলি, উড়ে আসা পাথরের ঢিল, রক্তপাত, ১৪৪ ধারা, কাঁদানে গ্যাস- যেন কাঁদছে রাজধানী দিল্লি। এই ধ্বংসস্তূপের চেহারার নিচে সদ্য গজিয়ে ওঠা অঙ্কুরের মতই এদিন সৃষ্টির বীজ বুনলেন পড়ুয়ারা।