মুম্বই, ১৫ আগস্ট: প্রয়াত মুম্বইয়ের প্রখ্যাত বর্ষীয়ান অভিনেত্রী বিদ্যা সিনহা (Vidya Sinha)। বৃহস্পতিবার বেলা বারোটা নাগাদ জুহুর ক্রিটিকেয়ার হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন এই বর্ষীয়ান অভিনেত্রী। বেশকিছুদিন ধরেই দুরারোগ্য ফুসফুসের রোগে ভুগছিলেন তিনি। সেই সঙ্গে ছিল হৃদযন্ত্রের সমস্যা। সপ্তাহখানেক আগে তাঁর শারীরিক পরিস্থিতির অবনতি হলে তড়িঘড়ি জুহুর এই হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তখন তিনি প্রবল শ্বাসকষ্টে ভুগছিলেন। আইসিউতে তাঁকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিল। ডাক্তারবাবুর প্রবীণা অভিনেত্রীকে সুস্থ করে তোলার জন্য চেষ্টার ত্রুটি রাখেননি। তবে সুস্থতার বদলে ক্রমশ অসুস্থই হচ্ছিলেন অভিনেত্রী। গতকাল হৃদযন্ত্রের গতি আচমকাই স্বাভাবিক হয়ে যায়। শারীরিক পরিস্থিতি স্টেবল হলে হাঁফ ছেড়ে বাঁচেন ডাক্তারবাবুরা। তবে তা কিছুক্ষণের জন্যই পরে ক্রমশ অবনতি ঘটে। আরও পড়ুন-তীব্র শ্বাসকষ্ট জনিত কারণে গুরুতর অসুস্থ অভিনেতা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়, ভর্তি হাসপাতালে
এদিন তাঁর লাইফ সাপোর্ট সিস্টেম খুলে নেওয়া হলে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন বিদ্যা সিনহা। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। প্রয়াত অভিনেত্রীর জীবন সংগ্রামও ছিল বেশ কঠিন। ২০০৯ সালে তিনি দ্বিতীয় স্বামী নেতাজি ভীমরাও সালোঁখে-র বিরুদ্ধে আদালতে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতেন মামলা। দীর্ঘদিন চলে সেই মামলা, দাঁতে দাঁত চেপে সংগ্রাম চালিয়ে মামলায় জিতে যান অভিনেত্রী। এমনকী বিচ্ছেদের পর খোরপোশ ও আদায় করতে পেরেছিলেন। অনেকেই আড়ালে বিদ্যা সিনহাকে নিয়ে নানা কথা বললেও সারা জীবন শিরদাঁড়া সোজা করে বেঁচেছেন তিনি। কোনওদিন পারিবারিক কলহকে বাইরে বা কাজের জায়গায় আসতে দেননি। নিজের কাজের প্রতিও ছিলেন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
বিদ্যা সিনহা প্রথম বিয়ে করেন ১৯৬৮ সালে। প্রতিবেশী তামিল ব্রাহ্মণ ভেঙ্কটেশ্বরণ আইয়ারের সঙ্গে তাঁর বিয়ে হয়। বিয়ের পরেও তাঁর নিঃসন্তান ছিলেন। শেষপর্যন্ত ১৯৮৯ সালে একটি কন্যা সন্তান দত্তক নেন। মেয়ের নাম রাখেন জাহ্নবী। ১৯৯৬ সালে জীবনে নেমে আসে ঘোর বিপদ ভেঙ্কটেশ্বরণ আইয়ারের মৃত্যু হয়। তারপর তেকে ফের জীবন সংগ্রামে নেমে পড়েছিলেন অভিনেত্রী। কেরিয়ার গ্রাফ ঠিক রেখে সম্মানের সঙ্গে কাজ করেছেন মেয়েকে বড় করছিলেন ভালভাবেই, তবে পাশে সঙ্গীর প্রয়োজন অনুভব করেই দ্বিতীয় বিয়েটি করেছিলেন। তাতে সমস্যা বেড়েছে বই কমেনি। তবে সমস্যাকে পাত্তা না দিয়ে নিজেই ফের জয়ী হয়েছেন জীবনযুদ্ধে।