কলকাতা, ৩০ জুলাই: বাংলার রাজনৈতিক মঞ্চে ইন্দ্রপতন, চলে গেলেন জাতীয় কংগ্রেসের ‘ছোড়দা’। বুধবার রাত দেড়টা নাগাদ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করলেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র (Somen Mitra)। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৮ বছর। দীর্ঘদিন ধরে হৃদযন্ত্রের সমস্যার ভুগছিলেন তিনি। গত ২১ জুলাই আচমকা অসুস্থ হয়ে পড়লে পারিবারিক চিকিৎসকের পরামর্শে সোমেন মিত্রকে দক্ষিণ কলকাতার বেলভিউ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পেসমেকার বদলের প্রয়োজন ছিল। কিডনির সমস্যাতেও ভুগছিলেন প্রদেশ সভাপতি। কিন্তু রক্তে ক্রিয়েটিনিনের মাত্রা বেশি থাকায় তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। ডায়ালিসিসও চলছিল। তবে মঙ্গলবার সোমেনবাবুর ছেলে সাংবাদিকদের জানান, বাবার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। তবে শেষরক্ষা হল না।
বুধবার দুপুরে বর্ষীয়ান রাজনীতিককেহাসপাতালের ঘরে হাঁটাচলা করতেও দেখা গিয়েছে। আত্মীয় পরিজনদের সঙ্গে কথাও বলেছেন তিনি। হৃদরোগ জনিত কারণে দীর্ঘদিন ধরে দিল্লির এইমসে চিকিৎসা করাচ্ছেন সোমেন মিত্র। এবার হার্টের সমস্যা শুরু হতেই তাঁর কোভিড-১৯ টেস্ট হয়। তবে রিপোর্ট নেগেটিভ আসে। তাঁর প্রয়াণে বাংলার রাজনৈতিক মহলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। রাজ্য কংগ্রেসের প্রবাদ প্রতিম নেতা গনিখান চৌধুরীর শিষ্য বলা হত সোমেন মিত্রকে। তাঁর সঙ্গে সাংগঠনিক নির্বাচনী লড়াইতে হেরেই ১৯৯৭ সালে কংগ্রেস ছেড়ে নতুন দল গঠন করেন মমতা ব্যানার্জি। ১৯৯৮ সালে প্রদেশ সভাপতির পদ ছেড়ে দেন সোমেন মিত্র। ফের ছোড়দা প্রদেশ সভাপতি হলেন ২০১৮ সালে। এই দীর্ঘ ২০ বছরে গঙ্গা দিয়ে অনেক জল গড়িয়েছে। পশ্চিমবঙ্গে বাম জমানার অবসান। তৃণমূল কংগ্রেসের রাজনৈতিক দল হিসেবে স্বীকৃতি। পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতার কেন্দ্রে মমতা ব্যানার্জির আবির্ভাব। জাতীয় কংগ্রেস ছেড়ে ছোড়দার নতুন দল গঠন, নাম প্রগতিশীল ইন্দিরা কংগ্রেস।
WBPCC President Somen Mitra has breathed his last, a short while ago. As we struggle to come to terms with this immense loss, all our prayers and thoughts are with Dada’s family.
May his soul rest in peace 🙏 pic.twitter.com/6T207fyt2A
— West Bengal Congress (@INCWestBengal) July 29, 2020
WBPCC President Somen Mitra has breathed his last, a short while ago. As we struggle to come to terms with this immense loss, all our prayers and thoughts are with Dada’s family.
May his soul rest in peace 🙏 pic.twitter.com/lkDW8Q8f3q
— WB Youth Congress (@IYCWestBengal) July 29, 2020
All my love and support to family and friends of Somen Mitra at this difficult time. We will remember him with love, fondness and respect. pic.twitter.com/k1muPvycgT
— Rahul Gandhi (@RahulGandhi) July 30, 2020
এরপর ২০০৭ সাল নাগাদ নন্দিগ্রামের ঘটনার পর তৃণমূলে যোগ দিলেন সোমেন মিত্র। ২০০৯ সিপিএম-এর শমিক লাহিড়িকে পরাজিত করে ডায়মন্ডহারবারের সাংসদ হলেন। ২০১৪ সালে সাংসদ পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে ফিরে গেলেন পুরনো দল জাতীয় কংগ্রেসে। ২০১৮ সালে ফের প্রদেশ সভাপতি হলেন। অধুনালুপ্ত শিয়ালদহ কেন্দ্র থেকে বেস কয়েকবার বিধায়ক পদে জিতে আসেন এই কংগ্রেস নেতা। নিয়মিত তাঁর অসুস্থতার খবরাখবর নিয়েছেন মমতা ব্যানার্জি। হাসপাতালে ফুলও পাঠিয়েছেন। মতবিরোধ থাকলেও কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরীও নিয়মিত সোমেন মিত্রের শারীরিক অবস্থার খোঁজ রেখেছেন।