Surgent Bapi Sen: ১৮ বছরেও টাটকা ক্ষত, বর্ষবরণের উদযাপনে নেই সার্জেন্ট বাপি সেনের পরিবার
সার্জেন্ট বাপি সেন(Photo Credits: Social Media)

কলকাতা, ৩১ ডিসেম্বর: বর্ষশেষ ও বর্ষবরণের আনন্দ টানে না কলকাতা পুলিশের প্রয়াত ট্রাফিক সার্জেন্ট বাপি সেনের (Surgent Bapi Sen) পরিবারকে। দেখতে দেখতে ১৮টা বছর কেটে গেলে এই বর্ষবরণের রাত তাঁদের কাছ থেকে কেড়ে নিয়েছে বটগাছকে। বাবার স্নেহের স্পর্শ বোঝেনি শঙ্খশুভ্র সেন। প্রয়াত সার্জেন্টের ছোট ছেলে। এখন সে একাদশ শ্রেণির ছাত্র। আর ২০০২-র ৩১ ডিসেম্বর সে তখন কয়েক মাসের শিশু। বাবা-কে তার মনে নেই। শোবার ঘরের টেবিলে রাখা সার্জেন্টের পোশাকেই বাবাকে চেনে শঙ্খশুভ্র। আর বড় ছেলে সোমশুভ্র এখন ২৪ বছরর তরতাজা যুবক। সেই রাতে বাড়ি থেকে বেরনোর আগে বাবা বলে গিয়েছিলেন, ‘পড়া করে রেখো ফিরে ধরব।’ বাবা আর ফেরেননি।

তাই বন্ধুরা ডাকলেও এই দিনটাতে বাড়ির বাইরে যেতে মন চায় না তাঁর। এখন এডিটিং নিয়ে পড়াশোনা করছেন। কিন্তু বর্ষবরণের রাতে পার্কস্ট্রিট যাওয়ার ইচ্ছে তাঁর দুঃস্বপ্নেও বাসা বাঁধে না। বেহালার পর্ণশ্রীর মোড়ে যে কাউকে জিজ্ঞাসা করলেই দেখিয়ে দেবে সার্জেন্ট বাপি সেনের বাড়ি। ৩১ ডিসেম্বরে গোটা পাড়াটাই যেন ফিরে যায় ১৮ বছর আগের সেই দিনটায়। বর্ষবরণের আনন্দের মাঝে যেন চাপ ধরে থাকে এক বিষন্ন বাতাস। এতদিন পরেও ভাইয়ের কথা উঠলে উদাস হয়ে পড়েন দাদা অনুপ সেন। ভাই চলে যাওয়ার পর তাঁর বিয়োগান্তক ঘটনাকে সামনে রেখে অনেকেই ছবি বানিয়ে টাকাকড়ি কামিয়েছেন। তবে সাহায্যের হাত সেভাবে কেউ বাড়িয়ে দেননি। শুধু কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে দ্বিধা নেই অতনুবাবুর বিষয়ে। সার্জেন্ট বাপি সেনকে সেই রাতে পিটিয়ে মৃত্যুমুখে ঠেলে দেওয়া অপরাধী পুলিশকর্মীদের সাজার বন্দোবস্ত করেছিলেন কলকাতা পুলিশের তদন্তকারী অফিসার অতনু বন্দ্যোপাধ্যায়।  আরও পড়ুন-Night Curfew in Delhi: করোনার নতুন প্রজাতির কাঁটা, বর্ষবরণের রাত থেকে নিউ ইয়ারের সকাল রাজধানীতে বলবৎ কার্ফিউ

সোদিন রাতে ডিউটি থেকে ফেরারপর যদি জোর করে বাড়িতে আটকে রাখতেন তাহলে আজকের বিষন্নতা তাঁকে গ্রাস করত না। এখনও এমনটাই ভাবেন কলকাতা পুলিশে অস্ত্র আইন বিভাগের কর্মী সোমা সেন। স্বামীর মৃত্যুর পরেই চাকরিটা পেয়েছেন তিনি। কোনওরকম দুই ছেলেকে নিয়ে দিন কেটে যাচ্ছে। বন্ধুদের সঙ্গে বেড়িয়ে রাত ১২টায় ফোন করে স্ত্রীকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন বাপি সেন। এরপর ছেলেদের নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন সোমাদেবী। শেষরাতের দিকে আসে সেই ভয়ানক দুঃসংবাদ। এক তরুণীর সম্মান বাঁচাতে গিয়ে পুলিশকর্মীদরে হাতে বেধড়র মার খেয়ে হাসপাতালে ভর্তি ট্রাফিক সার্জেন্ট বাপি সেন। ২০০৩-এর ৬ জানুয়ারি হাসপাতালেই তাঁর মৃত্যু হয়। তাইআজকের দিনে বেহালার সেন পরিবারে বাজে না কোনও আগমনীর সুর।