কলকাতা, ১৫ জুন: গত বুধবার কুয়েতে মর্মান্তিক অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৪৯ জনের মৃত্যু হয়েছিল। যার মধ্যে ৪৫ জন ছিলেন ভারতীয় এবং এদের মধ্যে একজন বাংলার ছেলেও ছিল। পশ্চিম মেদিনীপুরের দাঁতনের তুরকাগড়ের বাসিন্দা ছিলেন দ্বারিকেশ পট্টানায়েক (Dwarikesh Patnaik)। শনিবার ভোরে তাঁঁর দেহ এল কলকাতা বিমানবন্দরে। মরদেহ আসার পর শ্রদ্ধা জানালেন রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূল নেতা সুজিত বোস এবং বিজেপি নেত্রী অগ্নিমিত্রা পাল। সুজিত বোস জানান, মরদেহ দ্বারিকেশের বাড়ি নিয়ে যাওয়া থেকে শেষকৃত্যের সমস্ত কাজ রাজ্য সরকার দায়িত্ব নিয়ে করবে। ক্ষতিপূরণের বিষয়টি রাজ্য সরকার দেখবে। অন্যদিকে অগ্নিমিত্রা বলেন, আমি যে কেন্দ্র থেকে ভোটে দাঁড়িয়েছিলাম সেই মেদিনীপুরের বাসিন্দা দ্বারিকেশ। পরিবারের প্রতি সমবেদনা রইল। তবে আজ রাজ্যে প্রতিবছর বেঙ্গল সামিট হওয়ার পরেও বাংলার ছেলেদের কেন প্রাণ হাতে নিয়ে বাইরের দেশে কাজ করতে যেতে হবে? রাজ্যে চাকরি না থাকার কারণে দ্বারিকেশের মতো মেধাবী ছেলেদের বাইরে যেতে হচ্ছে।
দ্বারিকেশের মৃত্যুর খবর আসা মাত্রই মেদিনীপুরে তাঁর পরিবারের সঙ্গে দেখা করেছিলেন অগ্নিমিত্রা। তিনি এদিন বলেন, রাজ্য সরকারের উচিত দ্বারিকেশের পরিবারকে ১০ লক্ষ টাকার ক্ষতিপূরণ দেওয়া উচিত। পাশাপাশি ওনার মেয়ে আগামী বছর মাধ্যমিক দেবেন, ফলে তাঁর পড়াশুনোর যাবতীয় খরচ রাজ্য সরকারের নেও উচিত এই দাবি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে রাখতে চাই। প্রসঙ্গত, কুয়েতের এনবিটিসি সংস্থায় মেকানিকাল ইঞ্জিনিয়ার পদে কর্মরত ছিলেন দ্বারিকেশ। স্বপ্ন ছিল গ্রামের বাড়িটি ভালোভাবে তৈরি করা। সেই অনুযায়ী শরৎপল্লীর বাড়িটি গত কয়েকবছর ধরে বানানো হচ্ছিল। গত বছর এপ্রিলে এসে তিনি দেখেছিলেন কাজ হচ্ছে। এই বছরের এপ্রিলের মধ্যে বাড়িটি হয়ে গেলেও তিনি আসেননি। ইচ্ছে ছিল একেবারে দূর্গাপুজোর সময় আসবেন, কারণ সেই সময় তাঁর ১৪ বছরের মেয়ে ঐশীর জন্মদিন ছিল। কিন্তু সেই স্বপ্ন অধরাই রয়ে গেল।
#WATCH | West Bengal Minister Sujit Bose and BJP MLA Agnimitra Paul pay last respects to Dwarikesh Patnaik, a resident of Paschim Medinipur district who lost his life in Kuwait fire tragedy, at Kolkata airport pic.twitter.com/BCzHTYzb9c
— ANI (@ANI) June 15, 2024
কুয়েত থেকে প্রতিদিন সকালে স্ত্রীকে ফোন করতেন দ্বারিকেশ। গত বুধবার সকালে ফোন না আসায় স্ত্রী নিজেই ফোন করেছিলেন। কিন্তু তিনি ধরেননি। পরে দ্বারিকেশে কোম্পানীর এক কর্মী ফোন করে মৃত্যুর খবর দেন। নতুন করে সাজানো বাড়িতে আজ আনা হচ্ছে দ্বারিকেশের নিথর দেহ। গ্রামের ভালো, মেধাবী ছেলে ছিলেন সে। বুধবারের খবরটি সামনে আসতেই শোকস্তব্ধ গোটা এলাকা। বাড়িতে নেমেছে কান্নার ঢল। দ্বারিকেশকে শেষবারের মতো দেখতে ভিড় জমিয়েছে আত্মীয় পরিজনেরা।