২৫মে, ২০১৯: কয়েকণ্টা আগে দিল্লিতে কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে সভাপতি পদে ইস্তফা দেওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলেন রাহুল গান্ধী(Rahul Gandhi)। ঠিক তার কয়েকঘণ্টা পরে কলকাতায় সেই একই প্রস্তাব দলের সামনে রাখলেন তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো মমতা ব্যানার্জি( Mamata Banerjee)। কালীঘাটে সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী পদ ছাড়তে চেয়েছিলাম আমি। কিন্তু দল তাতে রাজি হয়নি। এই অবস্থায় মুখ্যমন্ত্রী পদ সামলানোর কোনও ইচ্ছে নেই। শুধু দলের কথায় রয়ে গেলাম।’
৪২–এ ৪২ চাই। এই লক্ষ্যেই এগিয়েছিলেন তৃণমূল (TMC)নেত্রী। লক্ষ্য পূরণে কোনও কার্পণ্য করেননি। লোকসভা ভোটের নির্ঘণ্ট ঘোষণার পর থেকে দিন রাত এক করে প্রচার করেছেন। উত্তর থেকে দক্ষিণ, পূর্ব থেকে পশ্চিম কোনও দিকেই প্রচারে খামতি রাখেননি। তারপরেও যখন হাতে জুটল ২২টি তখন একে কোনও সমীকরণেই মেলাতে পারলেন না তৃণমূল নেত্রী। ফলাফল প্রকাশের তিন দিন পর এই বিপর্যয়ের কারণ সন্ধানে জরুরি বৈঠক ডাকেন তৃণমূল সুপ্রিমো। শনিবার বিকেল চারটে থেকে কালীঘাটে দলের নির্বাচিত প্রতিনিধি এবং জেলা সভাপতিদের নিয়ে পর্যালোচনায় বসেছিলেন দলনেত্রী। প্রায় ঘণ্টা খানেক বৈঠক করার পর সাংবাদিক বৈঠকে মমতা যা বললেন, তাতে অনেকেই চমকে গিয়েছিলেন।
এই প্রথম অভিমানী মমতাকে দেখলেন রাজ্যবাসী। মমতা বললেন, মুখ্যমন্ত্রী পদ ছাড়তে চাই। মমতার মত লড়াকু নেত্রীর মুখে এই কথা শুনে চমকে গিয়েছিলেন সাংবাদিকরাও। কিছুক্ষণ চুপ করে থেকে মমতা বললেন,‘ দলের কাছে এই প্রস্তাবই দিয়েছিলেন, কিন্তু সেটা কেউ মানতে চাননি। ৬ মাস ধরে ক্ষমতাহীন মুখ্যমন্ত্রী হয়ে ছিলাম।’ ভোটের ফলাফল এই পর্যায়ে তৃণমূলের বিপক্ষে যেতে পারে এটা কল্পনাতীত জানিয়ে মমতা বলেন, নির্বাচন কমিশন প্রকাশ্যে বিজেপির হয়ে কাজ না করলে বিজেপি একা ৩০০ অতিক্রম করতে পারে না। আবারও ইভিএমে কারচুপির অভিযোগ উস্কে দিয়ে মমতা বলেন, আগে থেকেই ইভিএমে প্রোগ্রামিং করে রেখেছিল বিজেপি, নইলে রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, দিল্লিতে অন্য দল একটিও সিট পাবে না এটা হতে পারে না। টোটাল সেটিং করেছিল বিজেপি।’
বিজেপি যত শক্তি নিয়েই ক্ষমতায় আসুক না কেন প্রতিবাদ করতে তিনি দমবেন না। প্রয়োজনে একাই লড়াই চালাবেন বলে জানিয়েছেন মমতা। আসন কমলেও ভোট বেড়েছে এবার তৃণমূলের। ২০২১–কে পাখির চোখ করে বেশ কিছু জরুরি রদবদল করেছেন দলে। একই সঙ্গে মমতা জানিয়েছেন, এতোদিন মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে মানুষের জন্য কাজ বেশি করেছিলেন। এবার থেকে দলের দিকে নজর বেশি দেবেন।