কলকাতা, ২১ জুলাই : ২৪-এ দিল্লির রঙ্গমঞ্চের গোড়াপত্তন হয়ে গেল ধর্মতলার একুশের সমাবেশে। শহিদ দিবসের মঞ্চ থেকেই উঠল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) নেতৃত্বে ভারত গড়ার দাবি। সৌগত রায় নাম না করেই দেশের বিজেপি বিরোধী দলগুলিকে মনে করিয়ে দিলেন, ভারতবর্ষে নরেন্দ্র মোদির বিকল্প একজনই, তিনি মমতা। তাই মোদিকে গদিচ্যুত করতে হলে সমস্ত বিরোধীদলকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে লড়তে হবে। আরও পড়ুন-Mamata Banerjee: ‘আমাদের মুড়ি ফিরিয়ে দাও, নয় বিজেপি বিদায় নাও‘, একুশের সমাবেশেই গেরুয়া শিবিরকে হুঁশিয়ারি মমতার
সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় মোদি সরকারের আটটি বিরাট ত্রুটি চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে বুঝিয়ে দিলেন জনগণের স্বার্থ সম্পর্কে কেন্দ্র কতটা অসচেতন। নোটবন্দি, অপরিকল্পিত লকডাউন, অগ্নিমূল্য জ্বালানি তেল, সংসদে বিরোধীদের মুখ বন্ধ করে রাখা, ভারত ভূখণ্ডে চিনের প্রবেশ, জিএসটি, অগ্নিপথ। তালিকাটা বেশ দীর্ঘ। কাশ্মীরে অনামী যুবক বাংলার মুখমন্ত্রীকে শেরনি আখ্যা দিয়েছেন। এর তাৎপর্য বোঝাতে বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি সুদীপবাবু।
আসানসোলের নবনিযুক্ত সাংসদ তথা প্রবীণ বলিউড অভিনেতা শত্রুঘ্ন সিনহা বাংলার প্রতি মোদি সরকারের অবিচারের প্রসঙ্গ তুলে বিজেপিকে খোঁচা দিতে ছাড়েননি। ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে জয়ী হওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এবেলা ওবেলা ডেলি প্যাসেঞ্জারি করেছেন। মোদির ‘দিদি ও দিদি’ কটাক্ষ ব্যুমেরাং হয়েছে। রাজ্যে এসে নিম্নমধ্যবিত্তের বাড়িতে মাটির বাসনে কলাপাতায় খেয়ে, দল ভাঙিয়েও জয়ের ফসল ঘরে তুলতে পারেনি গেরুয়া শিবির। উল্টে রাজ্য সভাপতির আসন হারিয়ে বাংলা থেকে এক প্রকার উবে গেছেন দিলীপ ঘোষ।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে বাংলার বাঘিনী এবং ২৪-এর নির্বাচনে দেশ তথা সমগ্র বিশ্বের রোলমডেল, তা সভামঞ্চে দাঁড়িয়ে দৃপ্ত গলায় বলেছেন বিহারীবাবু।
১৯ এর লোকসভা নির্বাচনে জেতার বিজেপি এই ধর্মতলাতে দাঁড়িয়ে আওয়াজ তুলেছিল ‘ভাগ মমতা ভাগ’। ২২-এই সেই আত্মবিশ্বাস পদ্ম শিবিরকে “বাপি বাড়ি যা” করে রাজ্যের বাইরে ছুঁড়ে ফেলেছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভাঙা পায়ে খেলে দেখিয়ে দিয়েছেন, “বাংলা আজ যা ভাবছে, ভারত আগামী কাল তাই ভাববে।” ২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে মোদি সরকারকে জবাব দিতে পারে বাংলার ১০ কোটি মানুষ ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, একুশের সমাবেশে দাঁড়িয়ে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে একথা বলেছেন দলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
আর মা মাটি মানুষের নেত্রী উপস্থিত জনতাকেই দিল্লি ঘেরাওয়ের আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, “জয় বাংলা দিচ্ছে ডাক, জয় ভারত বেঁচে থাক।” সমাবেশ চত্বরে উঠেছে স্লোগান, “ডাক দিচ্ছে জনতা, দিল্লি যাবে মমতা।”