বাংলায় প্রতি বছর কার্তিক সংক্রান্তিতে পূজিত হন দেব সেনাপতি কার্তিক। রুদ্র দেবতা শিব ও পরম শক্তির দেবী পার্বতীর সন্তান হলেন দেবতা কার্তিক। কার্তিক বৈদিক দেবতা নন, তিনি হলেন পৌরাণিক দেবতা। বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন নামে তাঁর পরিচিতি। কৃত্তিকাসুত, আম্বিকেয়, নমুচি, মুরুগান, শিখিধ্বজ, অগ্নিজ, বাহুলেয়, আগ্নিক,ক্রৌঞ্চারতি, তারকারি বা তারকাসুরমর্দী, শক্তিপাণি, বিশাখ, ষড়ানন, গুহ, ষান্মাতুর, কুমার, সৌরসেনা, দেবসেনাপতি গৌরীসুত ,ভৌরবসূতানুজ, শর্জ ইত্যাদি।
দেব কার্তিক হলেন যুদ্ধের সেনাপতি , তার বাহন ময়ূর। ময়ূর তার বাহন হওয়ার কারণ হল ময়ূর খুব কম ঘুমায় এবং সবসময় সচেতন থাকে, আর একজন যোদ্ধার জন্য এমনি বাহনের প্রয়োজন। তাই ময়ূর কার্তিকের বাহন।
তবে বাংলায় যুদ্ধের দেবতা হিসেবে নয় বরং পুত্র সন্তানের কামনায় কার্তিকের আরাধনা হয়। বাংলায় প্রতিটি ঘরে ঘরে মনে করা হয় তাকে আরাধনা করলেই তার মতো সুপুত্রের জন্ম হবে। তাই নতুন দম্পতির বাড়িতে কার্তিক ঠাকুর ফেলে আসার এক মজার প্রচলন আছে বাংলায়। তাই সকলেই কার্তিকে ছোটো সন্তান রূপেই পুজো করেন।
বাংলা ছাড়াও দক্ষিণ ভারতে অনেক বেশি কার্তিক পূজা হয়ে থাকে। তবে সেখানে রক্ষার দেবতা বা যুদ্ধের দেবতা হিসাবে কার্তিকপূজিত হয়। কার্তিক ঠাকুরকে তামিল ও মালয়াম ভাষায় বলা হয় মুরুগান বা ময়ূরী স্কন্দ স্বামী। সিঙ্গাপুর, শ্রীলঙ্কা, মালয়েশিয়া, মরিশাসএর মত স্থানে যেখানে তামিল জাতিগোষ্ঠী বিদ্যমান সেখানেই এই রক্ষা কর্তার পূজা হয়।
বর্তমানে পশ্চিমবঙ্গে কার্তিক পূজোর প্রচলন আগের তুলনায় অনেকটা হ্রাস পেয়েছে। তবে পশ্চিম বঙ্গের হুগলী জেলার চুঁচুড়া- বাঁশবেড়িয়া কাটোয়া অঞ্চলের কার্তিক পূজো বেশ প্রসিদ্ধ । দূর্গাপূজোর সময় কার্তিক পূজা হয়ে থাকে। কোলকাতাতেও কার্তিক দেবতার অনেক মন্দির বর্তমান।