মালদহ, ৩ জুলাই: স্কুলে এসে পড়াশোনা সরিয়ে রেখে মনের সুকে প্রেম করছে ক্লাসের ছাত্রছাত্রীরা। দীর্ঘদিন ধরে একই নালিশ শোনার পর এবার ছাত্র ও ছাত্রীদের প্রেম রুখতে তাদের পৃথক ক্লাসে বসানোর সিদ্ধান্ত নিল স্কুল কর্তৃপক্ষ। এদিকে স্কুলের এহেন সিদ্ধান্তের কথা চাউর হতেই এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। পড়ুয়াদের অভিভাবকরা এই সিদ্ধান্তে বেশ বিচলিত, কী করে স্কুল কর্তৃপক্ষ এমন সিদ্ধান্ত নিতে পারে তানিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এলাকার বিশিষ্টরাও প্রশ্নটি তুলেছেন। অভিয়োগ শুনে সবদিক খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছেন জেলা স্কুল পরিদর্শক। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে মালদহের হবিবপুর ব্লকের বুলবুলচণ্ডী গিরিজাসুন্দরী বিদ্যামন্দিরে (Maldah School)। আরও পড়ুন- Cut Money Row : কাটমানি ইস্যুতে উত্তাল শিলিগুড়ি, তৃণমূল কাউন্সিলর রঞ্জন শীল শর্মার বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার অভিযোগ
বুলবুলচণ্ডী গিরিজাসুন্দরী বিদ্যামন্দিরে পঞ্চম থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয়। এর মধ্যে মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত এটি শুধু ছাত্রদের স্কুল। তবে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে ছাত্রীরাও পড়ে। স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, একাদশ শ্রেণিতে ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা ২০১। তার মধ্যে ছাত্রী ৪০। দ্বাদশ শ্রেণিতে ২২৬ জন পড়ুয়ার মধ্যে ছাত্রী ৩৫। স্কুলের শিক্ষকদের একাংশের দাবি, এই দুই ক্লাসে কাগজের টুকরো দেওয়া-নেওয়া চলছে বিস্তর। অনেকের দাবি, মেয়েদের কমন রুমের সামনে ছাত্রদের লাইন বা স্কুলের মধ্যে হাতে হাত ধরে হেঁটে যাওয়াও নিয়মিত চোখে পড়ে। ফলে পড়াশোনা শিকেয়। স্কুলের এক শিক্ষিকা বলেন, “নিষেধ করলে ক্লাসের মধ্যে বিড়াল-কুকুরের ডাক ডাকে। এর প্রভাব নিচু ক্লাসের ছাত্রদের উপরেও পড়ছে।” ছাত্রদের ক্লাস সাসপেন্ড থেকে শুরু করে অভিভাবকদের ডেকেও নালিশ জানানো হয়েছে, কিছুতেই কিছু হয়নি।
অগত্যা ছাত্রছাত্রীদের আলাদা দিনে ক্লাসের ব্যবস্থা করেছে স্কুল। স্কুলের সহকারী প্রধান শিক্ষক রবীন্দ্রনাথ পাণ্ডে বলেন, “পরীক্ষামূলক ভাবে ছাত্রছাত্রীদের সপ্তাহে আলাদা দিনে ক্লাস করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছি। কয়েক জন ছাত্রছাত্রীর আচরণের জন্যই এই ব্যবস্থা। তা ছাড়া শুনেছি, মালদহের বেশ কিছু স্কুলেই এমনই ভাবে পঠনপাঠন হচ্ছে।” এদিকে ছাত্রীদের বড় অংশ জানিয়েছে, ‘‘কিছু ছাত্র স্কুলের মধ্যে উত্যক্ত করত। স্কুল কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে আমরা খুশি।” পাশাপাশি তাদের প্রশ্ন, “সপ্তাহে ৩ দিন ক্লাস হলে পাঠ্যক্রম শেষ হবে তো?’’ রবীন্দ্রনাথবাবুর আশ্বাস, “বাড়তি ক্লাস নিয়েই পাঠ্যক্রম শেষ করা হবে।”