Manabendra Banerjee Died: করোনা কাড়ল প্রাণ, প্রয়াত টিনটিনের অনুবাদক সাহিত্যিক মানবেন্দ্র ব্যানার্জি
মানবেন্দ্র ব্যানার্জি (Photo Credits: Facebook)

কলকাতা, ৫ আগস্ট: এক এক করে সব কেড়ে নিচ্ছে মহামারী করোনাভাইরাস। একে একে নিভিছে দেউটি। করোনার কাছে হার মেনে ৮২ বছরের দীর্ঘ পথের ইতি ঘটল। জীবন মৃত্যুর সীমা ছাড়িয়ে অমৃতলোকে পাড়ি দিলেন প্রথিতযশা সাহিত্যিক মানবেন্দ্র ব্যানার্জি। কোভিড আক্রান্ত হয়ে কয়েকদিন আগেই বাইপাসের ধারের এক হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাঁকে। মঙ্গলবার বিকেলে সেখানেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন লাতিন আমেরিকার সাহিত্যের সঙ্গে বাঙালি পাঠকের যোগাযোগের সূত্রধর সাহিত্যিক মানবেন্দ্রবাবু। অসম্ভব গুণী বিদ্বান মানুষটি শুধু গদ্য ও এবং কবিতা লিখে বাংলা সাহিত্যকে সমৃদ্দ করেছেন এমন নয়। তাঁর হাত ধরেই টিনটিন ঢকে পড়েছে বাঙালি পড়ুয়ার পড়ার তাকে।

ফেলুদা, কিরীটি রায় পড়ার ফাঁকে টিনটিনকে বাঙালির ডিটেকটিভ মন চিনতে শিখেছে মানবেন্দ্র ব্যানার্জির সৌজন্যে। জুলে ভার্নের গল্পের অনুবাদ বাংলার শিশু সাহিত্যকে উপহার দিয়েছেন তিনিই। লাতিন আমেরিকার সাহিত্য অঙ্গনে বাঙালির য়ে অবাধ বিচরণ, তার মূলেও এই মানুষটি। গার্সিয়া মার্কেজের ম্যাজিক রিয়েলিজম যে বাঙালির এত আপন হয়ে উঠল, তার জন্য মানবেন্দ্রবাবুকে তো কৃতিত্ব দিতেই হয়। বাঙালির চোখের সামনে বিশ্বসাহিত্যের দরজাটা হাট করে খুলে দিয়েছিলেন তিনি।  ১৯৭০ সাল নাগাদ মার্কেজের লেখার বঙ্গানুবাদ শুরু করেন। এর প্রায় ১২ বছর পর ১৯৮২ সালে নোবেল পুরস্কার পেলেন মার্কেজ। নোবেল কর্তৃপক্ষের অনেক আগেই লাতিন আমেরিকার এই উজ্জ্বল নক্ষত্রকে চিনে নেওয়ার মতো জুহুরি চোখ ছিল মানবেন্দ্র ব্যানার্জির। নোবেল পুরস্কারের মঞ্চে মার্কেজের দেওয়া বক্তৃতারও অনুবাদ করেন সাহিত্যিক।  আরও পড়ুন-Ram Mandir Bhumi Pujan: অপেক্ষার অবসান, রাম মন্দিরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করলেন প্রধানমন্ত্রী

আঞ্চলিক ভাষায় প্রকাশিত সাহিত্যের অনুবাদ নিয়ে তিনি বিশেষ চিন্তায় থাকতেন। এমন সাহিত্য যেন কালের গর্ভে হারিয়ে না যায়, তানিয়ে তাঁর চিন্তার শেষ ছিল না। বার বার জানতে চাইতেন বাংলায় গালিবের সৃজন নিয়ে কোনও কাজ হয়েছে কি না। শিশুসাহিত্যে তাঁর বিশেষ অবদানের জন্য মানবেন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় খগেন্দ্রনাথ মিত্র স্মৃতিপুরস্কার ও পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিদ্যাসাগর পুরস্কার পেয়েছেন, আর অনুবাদে তাঁর কৃতিত্বের জন্য ভারতীয় সাহিত্য একাদেমি তাঁকে অনুবাদ পুরস্কারে ভূষিত করেছিল। যদিও বঙ্গানুবাদ শব্দবন্ধের থেকে তর্জমা শব্দটি তাঁর বেশি পছন্দের ছিল। টিনটিনের প্রতি বাঙালির আশৈশব ভালবাসা যতদিন থাকবে, মানবেন্দ্র ব্যানার্জিও ততদিন বাঙলার সাহিত্যাকাশে জ্বল জ্বল করবেন। বড় অসময়ে চলে গেলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের তুলনামূলক সাহিত্য বিভাগের এই প্রখ্যাত অধ্যাপক।