কলকাতা, ৬ জুলাই: পশ্চিমবঙ্গে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। এমন কথা বললেন আসানসোলের সাংসদ তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় (Babul Supriyo)। এর আগে অনেক বিজেপি (BJP) নেতা, রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় রাজনৈতিক হিংসা, অশান্তির জন্য পশ্চিমবঙ্গে রাষ্ট্রপতি শাসনের (President Rule in West Bengal) দাবি তুলেছিলেন। সেই দাবিকে সমর্থন করেও কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বাবুল সুপ্রিয় অন্য যুক্তি দিলেন।
বাবুলের দাবি, বাংলায় রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা মানে পরোক্ষভাবে মমতা ব্যানার্জিকে সাহায্য করা। কারণ তাতে সহানুভূতির হওয়াটা পেয়ে যাবেন মমতা। তাই রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির প্রয়োজন নেই বলে আসানসোলের মন্ত্রী-সাংসদ জানান।
শুক্রবার আসানসোলে বিজেপি-র সভায় অশান্তির পিছনে বাবুলের অভিযোগ, পুলিসের আড়ালে বোম - বন্দুক নিয়ে ছিল জিতেন্দ্র তিওয়ারির পাঠানো গুন্ডারা। পুলিসের টিয়ার গ্যাসের আড়ালে লুকিয়ে বিজেপি কর্মীদের লক্ষ্য করে বোমা ছুঁড়েছে তারা। আরও পড়ুন-দয়া করে যা খুশি তাই বলে দেবেন না, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চুপ থাকতে বললেন প্রশান্ত কিশোর?
বাবুল সুপ্রিয় বললেন, রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা হলে, মানুষের সহানুভূতি পেয়ে যায় রাজ্যের ক্ষমতাসীন দল। যে সুবিধাটা মমতা ব্যানার্জিকে দেওয়া হবে না বলে জানিয়ে বাবুল বলেন। বাবুল এদিন বলেন, 'পশ্চিমবঙ্গে রাষ্ট্রপতি শাসন জারির যাবতীয় কারণ রয়েছে। কিন্তু রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করে কাউকে অপসারণ করলে পরের ভোটে সে সমবেদনার জেরে কিছু ভোট পায়। তবে মমতা ব্যানার্জির ক্ষেত্রে ব্যাপারটা সিমপ্যাথেটিক নয়, প্যাথেটিক হবে।'
বাবুল জানান, ''রাজ্যের ৪২টি লোকসভা আসনের মধ্যে ১৮টি আসনে জিতেছে বিজেপি। আরামবাগ সহ ২টি আসনে খুব কম ভোটের ব্যবধানে হেরেছেন আমাদের প্রার্থীরা। সেটা হলে তৃণমূল কংগ্রেসের আরও অস্বস্তির কারণ হতো। ফলে এমনিতেই পশ্চিমবঙ্গে আমরা জেতার জায়গায় পৌঁছে গেছি। তাই রাষ্ট্রপতি শাসন জারির দরকার নেই।''
প্রসঙ্গত, ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের ফলপ্রকাশের পর দু বছর পর হতে চলা রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনকে একেবারে জমিয়ে দিয়েছে। ৪২টি লোকসভা আসনের ফলের নিরিখে রাজ্যের ২৭২টি বিধানসভা কেন্দ্রের মধ্যে বিজেপি ১২৮টি আসনে জয়ী। রাজ্যে বিজেপি-র চমকপ্রদ ফলের পর তৃণমূলের বড় ভাঙনে বিজেপি-র সংখ্যা আরও বেড়েছে। আগামী দিনে তৃণমূলে ভাঙনের সম্ভাবনা আরও বাড়ছে। এমন অবস্থায় রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করে মমতা ব্যানার্জির সরকারকে ভেঙে ফেলার চেষ্টা করা হবে কি না তা নিয়ে বিজেপি-র অন্দরে বিভেদ রয়েছে। অনেকের দাবি, আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই তৃণমূল ছেড়ে এত সংখ্যাক বিধায়ক বিজেপিতে যোগ দেবেন যে মমতার সরকার সংখ্যালঘু হয়ে যাবে।