টিম ইন্ডিয়ার রিজার্ভ বেঞ্চও বেশ শক্তিশালী। (ফাইল ছবি)

কলকাতা, ২ মে: কাশ্মীর থেকে কন্য়াকুমারী। দেশের সর্বত্র জনপ্রিয় ক্রিকেটের এক নম্বর টুর্নামেন্ট বিশ্বকাপে টিম ইন্ডিয়া (Team India)-র প্রতিনিধিত্ব করাটা যে কোনও ক্রিকেটারের স্বপ্নের মত ব্যাপার। ভারতের মজবুত ঘরোয়া ক্রিকেটের বেড়াজাল টপকে দেশের হয়ে খেলাটা মুখের কথা নয়। তার ওপর আবার বিশ্বকাপ। বিশ্বকাপে ১৫ জনের স্কোয়াড ঘোষিত হয়েছে। তাতে আম্বাতি রায়াড়ু (Ambati Rayudu) , ঋষভ পন্থ (Rishabh Pant), আজিঙ্কা রাহানে (Ajinkya Rahane) সহ এমন বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার বাদ পড়েছেন যাদের ভাগ্য একটু সদয় হলে তারা বিশ্বকাপে দেশের হয়ে খেলতে পারতেন। আসলে ভারতে এখন ভাল ক্রিকেটারের সংখ্যা এত বেশি যে, তারা এবার অনায়াসে আরও একটি টিম পাঠাতে পারত।

আসুন দেখে নিই তাহলে বিশ্বকাপে ভারতীয় এ দল কেমন হত---

পৃথ্বী শ (Prithvi Shaw)

দেশের হয়ে টেস্ট চমকপ্রদ অভিষেক হয়েছিল মুম্বইয়ের তরুণ প্রতিশ্রুতিবান পৃথ্বী শ-য়ের। অনুর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন দলের অধিনায়ক পৃথ্বী-র প্রতিভায় মুগ্ধ ক্রিকেট দুনিয়া। অনেকেই বলছেন, তিনিই হতে চলেছেন বিরাট কোহলির পর দেশের ক্রিকেটের 'নেক্সট বিগ থিং'। সেই পৃথ্বী এখনও দেশের হয়ে সীমিত ওভারের ক্রিকেট খেলেননি। তবে টেস্টে তিনি যেভাবে খেলছেন তাতে ওয়ানডে- অভিষেক সময়ের অপেক্ষা। অনেকেই বলছেন, অস্ট্রেলিয়া সফর শুরুর আগে চোট পেয়ে ছিটকে না গেলে তিনি ডনের দেশেই হয়তো ওয়ানডে-তে সুযোগ পেতেন।

আজিঙ্কা রাহানে, অধিনায়ক (Ajinka Rahane)

দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে গিয়ে ওয়ানডে সিরিজের শুরুটা দারুণ খেলেছিলেন। তখন তো অধিনায়ক বিরাট কোহলি বলেই দিয়েছিলেন, রাহানেকেই তিনি বিশ্বকাপে চার নম্বরে দেখছেন। তবে ক্রিকেট ভারী নিষ্ঠুর। ফর্ম হারিয়ে এরপর সেই যে বাদ পড়েন রাহানে, তারপর আর ফিরে আসতে পারেননি। অনেকেই বলছেন, টেস্টে ভাল খেলা রাহানেকে ওয়ানডে-তে ঠিকমত সুযোগ দেওয়া হয়নি।

শ্রেয়স আইয়ার (Shreyas Iyer)

রাহুল দ্রাবিড়ের পছন্দের ক্রিকেটার সুযোগ খুব কম পেয়েছেন। কিন্তু সুযোগটা কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছেন। তবে একবার বাদ পড়ার পর আর ফিরতে পারেননি।

আম্বাতি রায়াডু (Ambati Rayudu)

বিশ্বকাপ স্কোয়াডে থাকা একেবারে নিশ্চিত ছিল আম্বাতির রায়াডু-র। রায়াডু-র বেশ কিছু ভাল ইনিংস খেলে দলের অপরিহার্যও হয়ে উঠছিলেন। কিন্তু মোক্ষম সময়ে ফর্ম হারান রায়াডু। অনেক চেষ্টা করেও ফর্ম ফিরে পাচ্ছিলেন না। শেষ অবধি অলরাউন্ডার বিজয় শঙ্করের কাছে পিছিয়ে পড়ে বিশ্বকাপে যাওয়া হচ্ছে না রায়াডু়-র। রায়াডুর বাদ পড়া নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ার একাংশ ক্ষোভ উগরে দেয়। খোদ আইসিসি-র টুইটার হ্যান্ডেলেও রায়াডুর হয়ে সওয়াল করে পরিসংখ্যান পেশ করা হয়।

শুভমন গিল (Shubman Gill)

ভারতীয় ক্রিকেটে এখন যে ক জন তরুণ ক্রিকেটারের ওপর আস্থা রাখা হচ্ছে, তাদের মধ্যে কেকেআর-এ খেলা শুভমন গিল একেবারে উপরের দিকে আছেন। নিউজিল্যান্ডে গিলের ওয়ানডে-তে অভিষেক হয়।

মনীশ পান্ডে (Manish Pandey)

একটা সময় জাতীয় দলে নিয়মিত সদস্য ছিলেন। কিন্তু কেদার যাদব, হার্দিক পান্ডিয়াদের উত্থান আর ফর্ম হারিয়ে দল থেকে বাদ পড়েন।

ঋষভ পন্থ ,উইকেটকিপার (Rishabh Pant)

জাতীয় দলে সুযোগ পেয়ে পন্থ নজর কাড়ার মত নানা ইনিংস খেলেছেন। ইংল্যান্ডে গিয়ে টেস্টে সেঞ্চুরি করে নজির গড়েছেন। সীমিত ওভারের ক্রিকেটেও ভাল কিছু ইনিংস খেলেছেন। কিন্তু ধারাবাহিকতার অভাব রয়েছে তাঁর। সঙ্গে আবার উইকেটের পিছনে ধোনি। তবে স্পোশালিস্ট ব্যাটসম্যান হিসেবে একটা সুযোগ ছিল। সেখানে একটুর জন্য ফিনিশার দীনেশ কার্তিকের কাছে পিছিয়ে পড়ে বাদ পড়েন পন্থ।

অক্ষর প্যাটেল (Akshar Patel)

কুলদীপ-চাহালের সঙ্গেই জাতীয় দলে তাঁকে সুযোগ দেওয়া হয়েছিল। তবে কুলদীপ-চাহালের সঙ্গে পাল্লায় পারেননি।

আর অশ্বিন (R. Ashwin)

টেস্টে দলের সেরা বোলার। দেশের অন্যতম সেরা স্পিনার। কিন্তু ওয়ানড-তে আচমকা বাদ পড়ার পর আর তাঁকে ৫০ ওভারের ক্রিকেটে সুযোগ দেওয়া হয়নি। অশ্বিন মনে করেন, তিনি ওয়ানডে-তেও সফল হতেন, যদি আরও একটা সুযোগ পেতেন। কুলদীপ-চাহাল এমন চমকপ্রদ পারফরম্যান্স করেন যে অশ্বিনকে আর সুযোগ দেওয়া হয়নি।

উমেশ যাদব (Umesh Yadav)

শেষের ক টা মাস ফর্ম হারান। মহম্মদ শামির ওয়ানডে-তে মহারাজকীয় কামব্যাকের পর উমেশ ফিকে হয়ে যান।

দীপক চাহার (Deepak Chahar)

বিরাট কোহলি পছন্দের বোলার। আইপিএলে দারুণ বল করছেন।  বুমরা-ভুবি-শামি দারুণ কম্বিনেশনটা না তৈরি হলে তাঁর শিকে ছিড়তে পারত।

(রিজার্ভ বেঞ্চে- সুরেশ রায়না,সিদ্ধার্থ কউল, ওয়াশিংটন সুন্দর, খলিল আহমেদ।)