মুম্বই, ১৭ অগাস্ট: সচিন তেন্ডুলকরের থেকেও তাঁকে একটা সময় বেশি প্রতিভাবান মনে করা হত। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বিনোদ কাম্বলির শুরুটা হয়েছিল চমকপ্রদ। আজও তিনি টেস্টে দেশের দ্রুততম হাজাররানকারী ব্যাটার। তবে জীবনের প্রথম চারটে টেস্টে দুটো ডবল সেঞ্চুরির পর, শৃঙ্খলার অভাবে ফর্ম খুইয়ে দ্রুত হারিয়েও যান। সচিনের প্রিয় বন্ধু ক্রিকেট থেকে অবসরের পর সেভাবে আর বাইশ গজের সঙ্গে সম্পর্ক রাখেননি। ক্রিকেট কোচিং, বিশেষজ্ঞ, বা ধারাভাষ্য কোনও কিছুই মন দিয়ে না করে, ব্যক্তিগত জীবনে ব্যস্ত রেখেছেন। সচিনকে নিয়ে মাঝেমাঝে বোমা ফাটিয়ে, রিয়েলিটি শো-তে নেচে কিংবা স্ত্রী-র সঙ্গে ঝামেলায় জেরে খবরেও এসেছেন কাম্বলি। কিন্তু বাইশ গজের দুনিয়ায় কাম্বলি শুধু সচিনের প্রিয় বন্ধু হিসেবেও থেকে গিয়েছেন। অথচ প্রতিভার প্রতি সামান্য সুবিচার করলেও তিনি আজ ক্রিকেট মহাকাশের ধুমকেতু না হয়ে ধ্রুবতারা থেকে যেতে পারতেন।
সেই বিনোদ কাম্বলি এবার জানালেন তিনি অনটনের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন। দেশের হয়ে ১৭টা টেস্ট, ১০৪টা ওয়ানডে খেললেও কাম্বলি এখবন সংসার চালাতে হয় মাসে ৩০ হাজার টাকায়। বিসিসিআইয়ের থেকে প্রাক্তন ক্রিকেটার হিসেবে মাসিক ৩০ হাজার টাকা পাওয়া ছাড়া তার আগে কোনও রোজগার নেই। তাই তিনি এবার ক্রিকেট সংক্রান্ত কোনও কাজ চেয়ে বললেন, " আমার আর্থিক অবস্থা খুব দুর্বল, আমায় সংসার চালাতে হয়। বোর্ডের থেকে মাসিক ৩০ হাজার টাকা পেনশন ছাড়া আমার আর কোনও রোজগার নেই। আমার ক্রিকেট সংক্রান্ত কোনও কাজ নেই। এমসিএ (মুম্বই ক্রিকেট সংস্থা) যেনো আমায় একটা কাজ দেয়। "কাম্বলি ক্রিকেট ছেড়েছেন বছর ২০-২২ হয়ে গেল। এখনকার মত তখন আন্তর্জাতিক ক্রিকেট বা ঘরোয়া ক্রিকেট খেলে এত টাকা পাওয়া যেত না। তবু তিনি জানিয়েছেন, তাঁর যাবতীয় সঞ্চয় এই কয়েক বছরে নানা কারণে পুরোপুরি শেষ হয়ে গিয়েছে। আরও পড়ুন-জাতীয় স্তরে ২০ বলে ৬৭ করা ক্রিকেটার এখন ই রিকশার চালক
অবাক করা কথা হল, তাঁর চেয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে অনেক কম, কিংবা না খেলা প্রাক্তন ক্রিকেটাররাও আইপিএলে বিভিন্ন ফ্র্যাঞ্চাইজির সঙ্গে জড়িয়ে ভাল রোজগার করেন, অথচ কাম্বলিকে সেসব বৃত্তে দেখাই যায় না।
১৯৮৮ সালে হ্যারিস শিল্ডে সারদাশ্রমের হয়ে সচিন তেন্ডুলকর ও বিনোদ কাম্বলি রেকর্ড ৬৬৪ রানের পার্টনারশিপ করেছিলেন। মুম্বইয়ের আজাদ ময়দানে হওয়া সেন্ট জেভিয়ার্সের বিরুদ্ধে সেই সেমিফাইনাল ম্যাচে তিনে নেমে কাম্বলি করেছিলেন ৩৪৯, চারে নেমে সচিন করেছিলেন ৩২০। দুজনেই অপরাজিত অবস্থায় মাঠ ছেড়েছিলেন। এরপর ১৯৯৩ সালে দেশের হয়ে প্রথমবার খেলেন কাম্বলি। মাত্র ২১ বছর বয়েসে টেস্টে ডবল সেঞ্চুরি করে সাড়া ফেলে দেন। তবে ফর্ম হারিয়ে, শৃঙ্খলাহীন জীবন কাটিয়ে মাত্র ১৭টা টেস্ট আর ১০৪টে ওয়ানডে খেলেই তাঁকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ছাড়তে হয়।