চলতি সপ্তাহে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বেশ কয়েকজন ছোট-বড় তারকা ক্রিকেটার অবসর নিলেন। দেশের মাটিতে অ্যাসেজ শেষ করে ক্রিকেটকে আলবিদা জানালেন ইংল্যান্ডের তারকা পেসার স্টুয়ার্ট ব্রড। ইংল্যান্ড অধিনায়ক বেন স্টোকসের অনুরোধে অবসর ভেঙে অ্যাসেজ খেলতে জাতীয় দলে ফেরেন মইন আলি। নিজের দায়িত্ব দারুণভাবে পালন করে অ্যাসেজ শেষে মইন ঘোষণা করেন, এবার তিনি টেস্ট থেকে পাকাপাকিভাবে বিদায় নিলেন। আর কখনও টেস্টে ফিরবেন না।
ব্রড, মইনের পাশাপাশি বাংলার প্রাক্তন অধিনায়ক মনোজ তিওয়ারিও সব ধরনের ক্রিকেট থেকে অবসর ঘোষণা করেছে। আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন ইংল্যান্ডের তারকা ওপেনার আলেক্স হেলস। নেপালের প্রাক্তন অধিনায়ক জ্ঞানেন্দ্র মাল্লাও বাইশ গজকে বিদায় জানিয়েছেন। আরও পড়ুন-সুইজারল্যান্ডকে হারিয়ে প্রথমবার বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে স্পেনের মেয়েরা
এক নজরে গত কয়েক দিনে যে পাঁচ আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার অবসর নিলেন:
স্টুয়ার্ট ব্রড (ইংল্যান্ড): দীর্ঘ ১৭ বছরের আন্তর্জাতিক কেরিয়ারের পর ক্রিকেট থেকে অবসর নিলেন ইংল্যান্ড ক্রিকেটের বহু যুদ্ধের নায়ক স্টুয়ার্ট ব্রড। ক্রিকেট বিশ্বকে আবেগে ভাসিয়ে ওভালে অ্যাসেজ টেস্টের শেষ ম্যাচে ইংল্যান্ডকে জিতিয়ে বিদায় নিলেন ব্রড। টেস্ট ক্রিকেটে পঞ্চম সর্বোচ্চ উইকেট শিকারী হিসেবে কেরিয়ার শেষ করলেন তিনি। ১৬৭টি টেস্ট খেলে ৬০৪টি উইকেট নিয়ে শেষ হল তাঁর বর্ণময় কেরিয়ার। পাশাপাশি ১২১টি ওয়ানডে ও ৫৬টি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটও খেলেন তিনি। ওয়ানডে-তে ১৭৮টি ও আন্তর্জাতিক টি-২০-তে ৬৫টি উইকেটও নেন। টেস্টে তাঁর ব্যাট হাতে সর্বোচ্চ রান ১৬৯।
মইন আলি (ইংল্যান্ড): ইংল্যান্ডের টেস্ট ক্রিকেট দলের অধিনায়ক বেন স্টোকসের অনুরোধে টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর ভেঙে অ্যাসেজে ফিরেছিলেন। নিজের দায়িত্ব দারুণভাবে পালন করে অ্যাসেজ শেষে মইন ঘোষণা করেন, এবার তিনি টেস্ট থেকে পাকাপাকিভাবে বিদায় নিলেন। আর কখনও টেস্টে ফিরবেন না।
আলেক্স হেলস (ইংল্যান্ড): গত বছর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে ভারতকে হারানোর নায়ক ছিলেন ইংল্যান্ডের তারকা ওপেনার আলেক্স হেলস (Alex Hales)। অ্যাডিলেডে রোহিত শর্মাদের বিরুদ্ধে রান তাড়া করতে নেমে হেলস ৪৭ বলে ৮৬ রানে অপরাজিত ছিলেন। অপর ওপেনার জস বাটলার অপরাজিত ছিলেন ৮০ রান। মাত্র ১৬ ওভারে ভারতের করা ১৬৮ রান তাড়া করে বিনা উইকেটে জিতেছিল ইংল্য়ান্ড। রোহিতদের স্বপ্নভঙ্গ করে সেই সেমিফাইনালে ম্যাচের সেরা হয়েছিলেন হেলস। সেই হেলসই আচমকাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর ঘোষণা করলেন। ইংল্যান্ডের টি-২০ বিশ্বকাপজয়ী ক্রিকেটার আলেক্স হেলস (Alex Hales) আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের সব ধরনের ফর্ম্যাট থেকে অবসর নিয়ে ফ্র্যাঞ্চাইজি ক্রিকেটে মনোনিবেশ করবেন বলে জানালেন।
মনোজ তিওয়ারি (ভারত/বাংলা): বাংলার সর্বকালের সেরা ক্রিকেটারদের একজন। রঞ্জি ট্রফি সহ ঘরোয়া ক্রিকেটে চাঁর নেতৃত্বে বাংলা বেশ কিছু সাফল্য পেয়েছে। তাঁকে একটা সময় দেশের সেরা ক্রিকেটপ্রতিভাদের মধ্যে একজন বলে মনে করা হত। দেশের হয়েও খেলে সেঞ্চুরি আছে তাঁর। কিন্তু ভাগ্য খারাপ থাকায় দীর্ঘদিন খেলা হয়নি। সুযোগ হয়তো আরও পাওয়া উচিত ছিল, কিন্তু পাননি। তবে বাংলার জার্সিতে ধারাবাহিকভাবে দারুণ সাফল্য পেয়েছেন। গত বৃহস্পতিবার সব ধরনের ক্রিকেট থেকে অবসরের ঘোষণা করেন মনোজ তিওয়ারি। ৩৭ বছর বয়সী এই তারকা তার অফিসিয়াল টুইটার হ্যান্ডেলে ভক্ত ও অনুরাগীদের সঙ্গে এ খবর শেয়ার করেছেন। ভারতীয় জার্সিতে নিজের একটি ছবি আপলোড করে তিওয়ারি লিখেছেন, 'ধন্যবাদ।' ২০০৮ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত ভারতের হয়ে খেলেছেন মনোজ তিওয়ারি।
২০১২ সালে আইপিএল জয়ী কলকাতা নাইট রাইডার্সের সদস্য ছিলেন তিনি। তিনি বর্তমানে সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস দলের একজন সক্রিয় রাজনীতিবিদ এবং পশ্চিমবঙ্গের বর্তমান ক্রীড়ামন্ত্রী। বাংলার রঞ্জি দলের প্রাক্তন অধিনায়ক ঘরোয়া ক্রিকেটের হয়ে ১৫ হাজারের বেশী রান করেছেন। ১৫ টি ভারতের হয়ে আন্তর্জাতিক সাদা বলের ম্যাচে তাঁর ঝুলিতে রয়েছে একটি শতক এবং একটি অর্ধ শতক। দুটিই আসে তাঁর ওয়ানডে কেরিয়ারে।
জ্ঞানেন্দ্র মাল্লা (নেপাল): নেপালের প্রাক্তন অধিনায়ক জ্ঞানেন্দ্র মাল্লা চলতি সপ্তাহে ক্রিকেট থেকে অবসর নেন। ৩২ বছর বয়েসে খেলা ছাড়লেন মাল্লা। তাঁর নেতৃত্বে নেপাল বিশ্ব ক্রিকেটে ছাপ রাখতে শুরু করে। দেশের হয়ে জ্ঞানেন্দ্র ৩৭টি ওয়ানডে, ৪৫টি আন্তর্জাতিক টি-২০ ম্যাচ খেলেন। ডান হাতি ব্যাটার মাল্লা ওয়ানডে-তে মোট ৮৭৬ ও টি-২০-তে ৮৮৩ রান করেন। ২০০৬ অনুর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপের প্লেটের সেমিফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে নেপালের জয়ে ব্যাট হাতে তাঁর বড় অবদান ছিল।