জম্মু ও কাশ্মীর, ২৫জুন: পাঁচ হাজার টাকার জন্য যেখানে খুনোখুনি লেগেই আছে। বাবা সময়মতো টাকা শোধ করতে পারেননি বলে একরত্তি মেয়েকে ধর্ষণের পর নৃশ্ংস খুন করে দেয় যে দেশের মানুষ সেই দেশেই কি না বসবাস করেন তারিক আহমেদের মতো লোকজন। উপত্যকা, হ্যাঁ ঠিকই শুনেছেন ভূস্বর্গ কাশ্মীরের নামই করছি। বুলেট বারুদের গন্ধ ছাপিয়েও যে উপত্যকায় বিদ্যমান সততা মানবিকতা। আরওপড়ুন- Honey Trap: মধুচক্রের ফাঁদ ফেসবুক-ইনস্টাগ্রামে, জওয়ানদের সাবধান গোয়েন্দা দপ্তরের
তারিক আহমেদ বুলেট বিধ্বস্ত, গোলাগুলির স্বর্গরাজ্য কাশ্মীরের এক ক্যাব চালক। উগ্রপন্থী সমস্যা, সেনা টহল, প্রতিবেশী দেশের গোলাগুলি বর্ষণ যাঁদের নিত্যসঙ্গী তাঁরা তো আর সামান্য বিপদকে বিপদ বলেই মনে করেন না। এমনিতেই নিয়ন্ত্রণরেখার ওপার থেকে মর্টার শেল ছুটে এলেসেই কাশ্মীরীদের উদ্দেশ্যেই বিদ্বেষ মূলক বার্তা দিতে থাকে এক শ্রেণির মানুষ, সেনা ঘটনাস্থলে নেমে শুরু করে টহলদারি, পুলিশ জেরায় জেরায় জেরবার করে দেয়। এতকিছুর মাঝেও যাঁরা এসব নিয়েই দিনযাপন করছেন সেই কাশ্মীরীদের প্রতি কোনওরকম সহানুভূতি দেখানো তো দূরঅস্ত বরং চিড়িয়াখানার জীব হিসেবেই গোটা দেশ তাদের দেখে। এত সমস্যা সত্ত্বেও সেই ভূস্বর্গেই যে মানবতা সততা হাত ধরাধরি করে হাঁটে তা প্রমাণ করে দিলেন তারিক আহমেদ। হাজার নয়, একেবার ১০ লক্ষ টাকা ফিরিয়ে দিয়ে নজির গড়লেন এই ক্যাবচালক। তিনি না দিতেই পারতেন, কেউই তাঁর গেঁটি ধরে টাকা আদায় করতে আসত না, ভ্রমণার্থীরা যে তাঁর গাড়িতেই টাকার ব্যাগ ফেলে নেমে গিয়েছেন এমন প্রমাও ছিল না। তবুও তিনি মানবিকতার খাতিরে মালিকের হাতেই দশলাখি ব্যাগ তুলে দিলেন। আর হারানিধি ফিরে পেয়ে কীভাবে যে ওই ক্যাব চালককে ধন্যবাদ দেবেন বুঝতেই পারছিলেন না ভোপালের ওই পরিবারের কর্তা।
The picture below is of Mr Tariq Ahmad from shopian, a Taxi Driver by Profession.
He today returned Rs 10 lakh cash and gold to a tourist from Bophal (India) as he had forgot it in his taxi
A Big Big Salute to his Honesty
May Allah swt give him the best reward in return#kashmir pic.twitter.com/iNuRXOd4VG
— moosa manzoor (@moosamanzoor111) June 24, 2019
পরিবার নিয়ে ভূস্বর্গে বেড়াতে এসেছিলেন। তিন চারদিন ঘোরাও হয়ে গিয়েছে। এবার অহরবল জলপ্রপাত দেখতে তাঁরা চালক তারিক আহমেদের ক্যাব বুক করেন। রওনাও দেন তাড়াতাড়ি, অহরবলকে কাশ্মীরের নায়াগ্রা বলা হয়ে থাকে। নির্দিষ্ট সময়ে সেই জলপ্রপাত দেখে গোটা পরিবার ফিরেও যায়। এদিকে রাতে বাড়ি ফিরে গাড়িতে তালা দেওয়ার সময় তারিক দেখেন পিছনের আসনে একটা ব্যাগ পড়ে আচে। বুঝতেই পারেন ওই ভোপালের পরিবারটির কোনও সদস্য ভুলে ব্যাগটিকে ফেলে গিয়েছেন। বিদেশবিভুঁইয়ে এটি নিশ্চই খুব জরুরি। দেরি না করে সঙ্গে সঙ্গেই স্থানীয় প্রশাসন, পুলিশ সব জায়গাতেই দৌড়ে যান তারিক আহমেদ। শেষপর্যন্ত পরিবারটির সঙ্গে দেখা করার ব্যবস্থা হয়। গয়না, টাকা ও ফোন ভর্তি ব্যাগটি পরিবারের কর্তার হাতে তুলে দেন তিনি, এত গুরুত্বূর্ণ জিনিস এভাবে ফিরে পেয়ে কিছুক্ষণের জন্য বাক্যহারা হয়ে যায় গোটা পরিবার। পরে তাঁরা তারিককে আহমেদকে ধন্য ধন্য করতে থাকেন।