তুলির টানে শিল্পের রূপ পায় গল্পগাথা, সেই পটচিত্রের ভাবকথা গেয়েই দিনযাপন চলে পিংলার শিল্পীদের
ছবিতে পিংলার পটশিল্প(Photo credit: Wikimedia common)

ছুটিতে ছোটাছুটি করবেন না তো কবে করবেন, তবে সেই ছোটাছুটি যদি হয় বেড়াতে যাওয়ার তাহলে তো সোনায় সোহাগা। সপ্তাহান্তে ছুটি মিলতেই ঝোলা কাঁধে বেরিয়ে পড়ুন দেখি মন এমনিই ভাল হয়ে যাবে। আমাদের বাংলায় দর্শনীয় স্থানের শেষ নেই শুধু খুঁজেপেতে যাওয়ার উদ্যোগ করতে হবে এই যা। করে ফেললেই হল, তারপর শুধু হারিয়ে যাওয়ার পালা। আজ রইল টইটইয়ের পর্ব ২২।

নয়াগ্রাম(Nayagram)

পটচিত্রের প্রতি আগ্রহ থাকলে উইকএন্ডে ঘুরে আসুন পশ্চিমমেদিনীপুরের পিংলা(Pingla) ব্লকের নয়াগ্রাম।এই নয়াগ্রাম আসলে পটশিল্পীদের আঁতুড় ঘর।বাংলার লোকসংস্কৃতির বহু পুরনো রীতি পটচিত্র অঙ্কন। এই পটচিত্রে নানা ধরনের গল্প লম্বা লম্বা গোটানো কাগজের ক্যানভাসের উপর নানা বর্ণে আঁকা থাকে।এই গ্রামের বাসিন্দাদের প্রত্যেকেই পটচিত্র শিল্পী,(Pattachitra- artists) চিত্রশিল্পীরা বা পটুয়ারা গ্রামেগঞ্জে ঘুরে ঘুরে এই চিত্রগুলির উপর রচিত গল্পগাথাগুলি সুর করে পড়েন এবং ওই গোটানো কাগজের ক্যানভাস একটু একটু খুলে তার উপর আঁকা চিত্রগুলির প্রদর্শন করেন।পট্ট কথাটি এসেছে সংস্কৃত থেকে, যার অর্থ কাপড়ের টুকরো এবং চিত্র মানে অঙ্কন।এই পটচিত্র শিল্পীদের ব্যবহৃত উজ্জ্বল রঙ, রেখা ও তুলির টানের জন্য বিখ্যাত।গোটানো ক্যানভাস খুলে পটের ছবি দেখাতে দেখাতে শিল্পীরা যে গান করেন তাকে বলে পটের গান।য়াগ্রামের প্রায় সমস্ত বাসিন্দাই কোনও না কোনও ভাবে পট শিল্পের সঙ্গে জড়িত৷পেট চালাতেও নয়াগ্রামের সম্বল একটাই- পটকথা৷ শাড়ি থেকে টিশার্ট, কূর্তি, ওয়াল হ্যাংগিং, স্কার্ফ, ওড়না সবেতেই পটচিত্রের ছোঁয়া।এখানে এলে পছ্ন্দমতো কিনে নিতে পারেন সেসব মৌলিক কর্মকাণ্ড। শোপিসও পাবেন, এখানে আসতে হলে পটের গ্রামের নিকটবর্তী রেলস্টেশন বালিচক।বালিচক থেকে বাসে/গাড়িতে নয়াগ্রাম (পিংলা) আধ ঘণ্টার রাস্তা। কলকাতা থেকে সড়কপথে দূরত্ব ১২৫ কিলোমিটার।খড়গপুরগামী বাসে ডেবরায় নেমে সেখান থেকে ময়নার বাসেও নয়াগ্রাম যাওয়া যায়।যদি মনে করেন রাত কাটাবেন তারজন্য স্থানীয় শিল্পীদের বাড়িতে বন্দোবস্ত রয়েছে।