দূরে শুশুনিয়ার হাতছানি(Photo credit: Wikimedia commons)

ছুটিতে ছোটাছুটি করবেন না তো কবে করবেন, তবে সেই ছোটাছুটি যদি হয় বেড়াতে যাওয়ার তাহলে তো সোনায় সোহাগা। সপ্তাহান্তে ছুটি মিলতেই ঝোলা কাঁধে বেরিয়ে পড়ুন দেখি মন এমনিই ভাল হয়ে যাবে। আমাদের বাংলায় দর্শনীয় স্থানের শেষ নেই শুধু খুঁজেপেতে যাওয়ার উদ্যোগ করতে হবে এই যা। করে ফেললেই হল, তারপর শুধু হারিয়ে যাওয়ার পালা। আজ টইটইয়ের ২৩ পর্বে রইল বাঁকুড়ার অন্যতম দর্শনীয় শুশুনিয়া ও বিহারীনাথ পাহাড়ের কথা।

শুশুনিয়া –বিহারীনাথ(Susunia and Biharinath hills)

পশ্চিমবঙ্গের প্রাচীন শিলালিপি পাওয়া গিয়েছিল কোথায় জানেন, আজ সেই শুশুনিয়া পাহাড়ের কথাই বলব। জীবাশ্ম থেকে ফসিল এককথায় বাঁকুড়ার শুশুনিয়া পাহাড় হল পুরাতাত্বিক গবেষণার অমূল্য ক্ষেত্র।এই অঞ্চলে সিংহ, জিরাফ, হায়না ও অন্যান্য অনেক জীবজন্তুর ফসিল আবিষ্কৃত হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গের প্রাচীনতম শিলালিপিটি এই পাহাড়েই অবস্থিত। এখানে একটি ঝরনার মুখে একটি প্রাচীন এক পাথরের নরসিংহ মূর্তি দেখা যায়। শুশুনিয়া ক্যাম্পিং ও পর্বতারোহণের একটি উল্লেখযোগ্য কেন্দ্র। শুশুনিয়া গ্রামের পাথর খোদাই শিল্প খুবই বিখ্যাত। এখানে অনেক প্রস্তরযুগীয় প্রত্নসামগ্রীও পাওয়া গিয়েছে। মনে করা হয়, প্রাচীনকালে রাজা চন্দ্রবর্মণ এখানে একটি দুর্গ নির্মাণ করেছিলেন।

মহুয়া, শাল, পিয়ালে( Mahua, Sal, Pial tree) ঘেরা বাঁকুড়ার আর এক পাহাড় হল বিহারীনাথ। এই বিহারীনাথে জেগে আছে অপরূপ আদিম নৈঃশব্দ। বর্ষায় সবুজ পাহাড়ের গায়ে খেলা করে মায়াবী মেঘ-রোদ্দুরের আলো-ছায়া। বিহারীনাথ থেকেই চোখে পড়ে শরপাহাড়ি আর দূরের দিগন্তরেখায় আঁকা আবছা পাঞ্চেত পাহাড়। পাহাড়ের নীচেই শিব মন্দির, লাগোয়া জলাশয়। বিহারীনাথে আসতে গেলে রানিগঞ্জ হল বেস্ট পথ। মাত্র ৩৫ কিলোমিটারের দূরত্ব। বাঁকুড়া থেকে ৫০ কিমি সময় লাগে দেড় ঘন্টায। আর রানিগঞ্জ স্টেশন থেকে এক ঘন্টার কমেই পৌঁছনো যায় এখানে। দু’জায়গা থেকেই ভাড়া গাড়ি পাওয়া যায়। তা ছাড়া রানিগঞ্জ থেকে ঠিক বিহারীনাথ পাহাড় পর্যন্ত বাস সার্ভিস আছে- তবে সংখ্যায় কম। বিহারীনাথ পৌঁছনোর সব চেয়ে সহজ উপায় আসানসোল থেকে আদ্রাগামী লোকাল ট্রেনে উঠে মধুকুণ্ডা নামা আর সেখান থেকে গাড়ি বা ট্রেকারে সরাসরি ২০ কিমি দূরে বিহারীনাথ। এখানে সরকারি ও বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় থাকার জায়গাও আছে।