বিশেষজ্ঞদের মতে, ১০ বছরের কম বয়সী শিশুদের মধ্যে স্মার্টফোন আসক্তি চোখের জন্য ক্ষতিকারক। অতিরিক্ত স্মার্টফোন ব্যবহার স্বাস্থ্যের ক্ষতি করার পাশাপাশি আচরণগত সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (WHO) নির্দেশিকা অনুসারে, ৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের স্মার্ট ফোনের স্ক্রিন দেখার জন্য কম সময় ব্যয় করা উচিত এবং ১ বছরের কম বয়সী শিশুদের স্মার্ট ফোন ব্যবহার করতে না দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বলা হয়েছে, ২ বছর বয়সী শিশুদের ১ ঘণ্টার বেশি স্মার্ট ফোন ব্যবহার করতে দেওয়া উচিত নয়।
চিকিৎসকদের মতে, যেসব শিশু স্মার্টফোনের মতো গ্যাজেটের সঙ্গে অতিরিক্ত সময় ব্যয় করে তাদের মধ্যে ডায়রিয়া, জ্বর ও অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা যায়। গবেষণায় দেখা গেছে, স্মার্টফোন ব্যবহারের ফলে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে চোখের ওপর। বেশিক্ষণ স্মার্টফোন ব্যবহারের জন্য শিশুদের দৃষ্টিশক্তি হ্রাস এবং শুষ্ক চোখ সহ অন্যান্য সমস্যা দেখা দিতে পারে। শিশুরা মোবাইল ফোন খুব কাছ থেকে ব্যবহার করে, এর ফলে শিশুদের চোখের ওপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে, যার কারণে চোখ লাল হয়ে যায় এবং চুলকানি হতে পারে। এই সমস্যার জন্য বারবার চোখ ঘষা ও চোখ থেকে জল বের হওয়ার সমস্যা হতে পারে।
মোবাইল ফোনের অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে চোখের পেশীও।চোখে বেশি চাপ পড়লে মাথাব্যথার কারণ হতে পারে, তার ফলে ঘুম ব্যাহত হয়। ঘুমের অভাব হতে পারে অনেক উদ্বেগ ও বিষণ্নতার কারণ। সাধারণত এই ধরনের শিশুরা একা থাকতে পছন্দ করে, অত্যন্ত খিটখিটে হয়ে ওঠে, আচরণগত পরিবর্তন হয় এবং একটুতেই তারা রেগে যায়। স্মার্টফোনের অত্যধিক ব্যবহার বাস্তব জগত থেকে বিচ্ছিন্ন করে দেয় শিশুদের। খাবারের সময় স্মার্টফোনের অভ্যাস খুবই খারাপ, এর ফলে স্থূলতা, উচ্চ রক্তচাপ এবং সুগারের মতো স্বাস্থ্য সমস্যাগুলি দেখা দিতে পারে, যা শিশুদের প্রাক-ডায়াবেটিক পর্যায়ে নিয়ে যায়।
অতিরিক্ত স্মার্টফোন ব্যবহারের ফলে দৃষ্টি প্রতিবন্ধকতা এবং মনোযোগের ঘাটতি হতে পারে, এর ফলে একাডেমিক পারফরম্যান্সে অবনতি হতে পারে। ১০ বছরের কম বয়সী শিশুদের স্মার্টফোন ব্যবহারের ফলে এই সমস্যাগুলি কমাতে অভিভাবকদের তাদের শিশুদের সঙ্গে মানসম্পন্ন সময় কাটানোর পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। ধীরে ধীরে প্রতিদিন স্মার্টফোন ব্যবহারে ব্যয় করা সময় কমানোর পরামর্শ দিয়েছেন তারা।