শীতলি প্রাণায়াম(File photo)

শুধু ভোট নয়, গরমের তাপে জ্বলে পুড়ে যাচ্ছে গোটা দক্ষিণবঙ্গ। কালবৈশাখী, ঝোড়া হাওয়া, বৃষ্টি কোনও কিছুরই দেখা নেই। আকাশে সামান্যে মেঘের রেখা দেখা গেলেও রৌদ্র ক্লান্ত মানুষের মনে খুশি দোলা দিয়ে যাচ্ছে, তবে তা ক্ষণস্থায়ী। কিছুক্ষণের মধ্যেই ফের গরম। চাঁদি ফাটা রোদ্দুরে ভাজা ভাজা হওয়ার সঙ্গেই ঘেমে নেয়ে একাকার। সন্ধ্যা নামলেই বাতাসে আদ্রতার পরিমাণ বাড়ছে হু হু করে। বার বার স্নান করেও শরীর জুড়োয় না। ঘুমিয়ে খেয়ে বসে কোনওভাবেই যেন স্বস্তি নেই। যতক্ষণ না আকাশ কালো করে অঝোর ধারায় বৃষ্টি আসছে ততক্ষণ এই যন্ত্রণা অব্যাহতই থাকবে। তবুও তো বাঁচতে হবে নাহলে মানুষ কেন শ্রেষ্ঠ জীবের আখ্যা পায়? তাই এসি, কুলার ভুলে একটু প্রাচীন ভারতের মুনি, ঋষিদের কথা চিন্তা করুন। তাঁরা কিকরে ভয়ঙ্কর গরমকে থোড়াই কেয়ার করে চলাফেরা করতেন। হ্যাঁ, তাঁরা শীতলি প্রাণায়ামের( Sitali Pranayama) সাহায্যেই এই অসম্ভবকে সম্ভব করেছিলেন।

প্রথমেই বলি, কোনওরকম ধ্যানে মগ্ন আসনে নিজেকে স্থির করুন। তারপর জিভটিকে পাখির ঠোঁটের মতো করে নাক দিয়ে শ্বাস টানতে থাকুন। কিছুক্ষণ পর ঢোক গিলে ফের নাক দিয়ে শ্বাস ছাড়ুন। এরকম কয়েকবার করলেই দেখবেন ভিতর থকেই ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। প্রায় একলাফেই শরীরের তাপমাত্রা কয়েক ডিগ্রি কমে গিয়েছে। তখন আপনার চারপাশের মানুষজন গরমে হাঁসফাঁস করলেও দেখবেন নিজে কেমন কুল আছেন। এটিই হল শীতলি প্রাণায়ামের মূল কথা।

এই প্রসঙ্গে পুণের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ন্যাচারোপ্যাথি-র(National Institue of Naturopathy)চিকিৎসক শাহ আলম জানিয়েছেন, তিন থেকে চারবার করার পরেই আবহাওয়ার তারতম্য অনুভব করতে পারবেন। তবে এরকম ১৫ থেকে ২০ বার করতে হবে, তাহলেই মন জুড়িয়ে শরীর শীতল হবে। প্রাণায়াম চলাকালীন মনে মনে ভাববেন শরীরের যাবতীয় উষ্ণতা মুখ দিয়ে বেরিয়ে যাচ্ছে। প্রাণায়ামের পর মিনিট কুড়ি শবাসনে থাকুন। মাথায় ঘাড়ে কোল্ড কম্প্রেসনের পাশাপাশি সারাদিনে প্রচুর জল খান।

প্রসঙ্গত, শীতলি প্রাণায়াম সামনে থেকে প্রত্যক্ষ করতে চাইলে চলে আসতে পারেন উত্তরকলকাতার চিড়িয়া মোড়ের যোগা সেন্টারে সেখানে চলছে প্রাণায়ামের সেশন। নাহলে পৌঁছে যান নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনে। এই প্রাণায়াম সকলের জন্যই ভীষণভাবে গুরুত্বপূর্ণ, তবে সর্দিকাশির সমস্যা থাকলে না করাই ভাল। ধুলোবালির মধ্যে প্রাণায়ামটি করবেন না।