শরীরের সমস্ত প্রক্রিয়া শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে যুক্ত। শ্বাস-প্রশ্বাসের কারণে মস্তিষ্ক ঠিক কাজ করে, যার কারণে হজম প্রক্রিয়াও কাজ করে, ভালো ঘুম হয়। এককথায় বেঁচে থাকার জন্য শ্বাস নেওয়া খুবই জরুরি। তবে শ্বাস নেওয়ারও সঠিক পদ্ধতি রয়েছে, ভুল পদ্ধতিতে শ্বাস নেওয়া কারণে শরীর হয়ে উঠতে পারে রোগের আবাসস্থল। বিশেষজ্ঞদের মতে, শ্বাস-প্রশ্বাসের পদ্ধতি স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করতে পারে। শ্বাস-প্রশ্বাসের অর্থ শুধু শ্বাস নেওয়া ও নিঃশ্বাস ত্যাগ করা নয়। শ্বাস-প্রশ্বাস প্রক্রিয়ার অর্থ হল ডায়াফ্রাম সক্রিয় করার পাশাপাশি ফুসফুসের ক্ষমতার সম্পূর্ণ ব্যবহার করা, যার কারণে স্বাভাবিক থাকে রক্তচাপ এবং মস্তিষ্কও ভালো কাজ করে।
সবার আগে মানুষকে বুঝতে হবে শরীর কীভাবে শ্বাস নেয়। যখন শ্বাস নেওয়া হয় তখন বুকের নীচে উপস্থিত ডায়াফ্রাম নামক পেশী সংকুচিত হয়ে নীচের দিকে চলে যায়। এর ফলে প্রসারিত হওয়ার স্থান পায় ফুসফুস এবং বায়ু থলিতে বায়ু পৌঁছায়। এই স্থান থেকে বাতাসে উপস্থিত অক্সিজেন মিশে যায় রক্তে। একই সময়ে, রক্তে উপস্থিত কার্বন ডাই অক্সাইড বায়ু থলি হয়ে শ্বাসতন্ত্রের মাধ্যমে শরীর থেকে বেরিয়ে যায়। এবার প্রশ্ন উঠছে প্রতিদিন স্বাভাবিকভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস নেওয়া হলে ভুল কীভাবে হচ্ছে? শ্বাস-প্রশ্বাসের সময় ডায়াফ্রাম যদি উল্টো দিকে চলে যায় তাহলে ফুসফুস প্রসারিত হওয়ার পরিবর্তে সংকুচিত হতে শুরু করে। দীর্ঘদিন ধরে এই প্রক্রিয়া চলতে থাকলে ফুসফুসে সমস্যা হতে পারে।
ভুল পদ্ধতিতে শ্বাস নিলে দেখা দিতে পারে নানা ধরনের শারীরিক সমস্যা। ভুল পদ্ধতিতে শ্বাস নেওয়ার কারণে শ্বাসকষ্ট, হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়া, দুর্বলতা, মাথা ঘোরা, কথা বলার সময় মুখে কথা জড়িয়ে যাওয়া এবং ঘাড়ে, কাঁধে ও বুকে ব্যথার মতো সমস্যা দেখা দেয়। এই সমস্যার সন্মুখীন যাতে না হতে হয় তার জন্য শ্বাস নেওয়ার একটি পদ্ধতি অবলম্বন করা খুবই জরুরি। সব সময় সোজা হয়ে বসতে হবে, যাতে বায়ু সরাসরি ফুসফুসে পৌঁছাতে পারে এবং কার্বন ডাই অক্সাইড সহজেই বেরিয়ে আসতে পারে। শ্বাস প্রশ্বাসের প্রক্রিয়া ভালো হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই শরীরে শক্তি অনুভব হয়।