হিন্দু পঞ্জিকা অনুসারে, মাঘ মাসের কৃষ্ণপক্ষের একাদশ তিথিতে পালন করা হয় ষটতিলা একাদশী। এই দিনটি পালন করার জন্য তিলের ব্যবহার খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে কথিত আছে। ষটতিলা একাদশীর উপোসে তিল ব্যবহার না করলে উপোসের সঠিক ফল পাওয়া যায় না, এমনই লোক মুখে প্রচলিত। ২০২৪ সালের ষটতিলা একাদশী পড়েছে ৭ ফেব্রুয়ারি।

ধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী ষটতিলা একাদশীতে ভগবান বিষ্ণুর আচার-অনুষ্ঠানে তিল ব্যবহার করলে কোনোদিন ধন-সম্পদ ও ঐশ্বর্যের অভাব হয় না। এছাড়াও আর্থিক সীমাবদ্ধতা ও দারিদ্রের জীবন থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। শ্রীকৃষ্ণ গীতায় বলেছেন, জগতের সকল জীবই বিভিন্ন কর্ম করে থাকে, যার জেরে জ্ঞাত বা অজ্ঞাতসারে পাপকর্মও করে তারা। হিন্দু ধর্মীয় শাস্ত্রে এই ধরনের পাপ থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য প্রতিকারের কথাও বলা হয়েছে। সেই প্রতিকারগুলির মধ্যে একটি হল মাঘ কৃষ্ণপক্ষের ষটতিলা একাদশীর উপোস।

শাস্ত্রে বলা হয়েছে, ষটতিলা একাদশীর উপোস চলাকালীন স্নান, খাওয়া, রান্না ও পুজো সহ সমস্ত কাজে তিল ব্যবহার করা ভালো। এতে ব্যক্তির পাপের পরিমাণ ক্রমশ কমতে থাকে। নিম্নলিখিত ৭টি উপায়ে ষটতিলা একাদশীতে তিল ব্যবহার করতে পারেন। জেনে নিন বিস্তারিত...

  • ষটতিলা একাদশীতে স্নানের আগে তিলের তেল বা তিলের তৈরি পেস্ট দিয়ে মালিশ করলে ইতিবাচক প্রভাবের সঙ্গে, সর্দি-কাশি সহ অনেক রোগ থেকেও মুক্তি পাওয়া যায়।
  • তিলের তেল দিয়ে মালিশ করার পর স্নান করার জলে গঙ্গাজলের সঙ্গে সামান্য তিল মিশিয়ে নিন। এই জল দিয়ে স্নান করলে আধ্যাত্মিক শক্তির বিকাশ ঘটে।‌
  • পঞ্চামৃতে তিল মিশিয়ে ভগবান বিষ্ণুকে স্নান করান। এছাড়া পিতৃপুরুষদেরকে তর্পণ নিবেদনের সময় কালো তিল যোগ করা যেতে পারে। এতে ভগবান বিষ্ণুর সঙ্গে পূর্বপুরুষের আশীর্বাদ পাওয়া যায়।
  •  ষটতিলা একাদশীর পুজোর সামগ্রীতে কালো তিল ব্যবহার করা উচিত। এতে আর্থিক সুবিধা পাওয়া যায় এবং জীবনের সকল ঝামেলা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
  • দেবী লক্ষ্মীর আশীর্বাদ পাওয়ার জন্য পুজোর কাজে সাদা তিল ব্যবহার করা উচিত। এতে আয়ের সব বাধা দূর হয় এবং অর্থের কোনও অভাব হয় না।
  •  ষটতিলা একাদশীর দিন তিলের নারু বানিয়ে ভগবান বিষ্ণুকে নিবেদন করলে গ্রহের অশুভ অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
  •  শাস্ত্র মতে, তিল দান করলে সমস্ত পাপ থেকে মুক্তি পাওয়া যায় এবং মৃত্যুর পর মোক্ষ লাভ হয়।