বছরের সবথেকে শুভ তিথি মাঘ শুক্লপক্ষ অষ্টমীতে পালিত হয় ভীষ্ম অষ্টমী। এই তিথিতে পালন করা হয় ভীষ্ম পিতামহের মৃত্যুবার্ষিকী। ভীষ্ম পিতামহ ছিলেন মহাভারতের সর্বশ্রেষ্ঠ এবং বিখ্যাত যোদ্ধা, তাই তাঁর মৃত্যুবার্ষিকী পালিত হয় ভীষ্ম অষ্টমী (Bhishma Ashtami) হিসেবে। ভীষ্ম পিতামহ আজীবন ব্রহ্মচর্যের ব্রত নিয়েছিলেন এবং সারা জীবন সেই ব্রত অনুসরণ করেছিলেন। পিতার প্রতি আনুগত্য ও নিষ্ঠার কারণে ভীষ্ম তাঁর পিতার কাছ থেকে বর পেয়েছিলেন ইচ্ছা মৃত্যুর। মহাভারতে পাণ্ডবদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে গিয়ে গুরুতর আহত হন তিনি। ইচ্ছা মৃত্যুর বরের কারণে মৃত্যুর জন্য এই দিনটিকে বেছে নিয়েছিলেন তিনি। শেষ নিঃশ্বাস না নেওয়া পর্যন্ত তীরের বিছানায় শুয়ে শুভ দিনের অপেক্ষা করে গিয়েছিলেন ভীষ্ম। ৫৮ দিন পর সূর্যের উত্তরায়ণের সঙ্গে যুদ্ধক্ষেত্রেই শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।

সনাতন ধর্ম অনুসারে, সূর্য দেবতা অর্ধ বছরের জন্য গমন করেন দক্ষিণ দিকে, যা অশুভ সময় হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তাই এই সময়ের জন্য স্থগিত করা হয় সমস্ত ধরণের শুভ কাজ। সূর্য দেবতা যখন উত্তর দিকে আসেন, তখন আয়োজন শুরু হয় শুভ কাজের। তাই মাঘ শুক্লপক্ষ অষ্টমীর দিনকে দেহ ত্যাগ করার জন্য বেছে নিয়েছিলেন ভীষ্ম, কারণ সেই সময় সূর্য দেবতা উত্তর দিকে যাওয়া শুরু করেছিলেন।

২০২৪ সালের মাঘ শুক্লপক্ষ অষ্টমী শুরু হবে ১৬ ফেব্রুয়ারি, শুক্রবার সকাল ০৮:৫৪ মিনিট থেকে এবং শেষ হবে ১৭ ফেব্রুয়ারি, শনিবার সকাল ০৮:১৫ মিনিটে। ভীষ্ম পিতামহের মৃত্যুবার্ষিকী হিসেবে পালিত হয় ভীষ্ম অষ্টমী। কথিত আছে ভীষ্ম পিতামহ উত্তরায়ণের সময়ে কুরুক্ষেত্র ময়দানে নিজের মৃত্যু বেছে নিয়েছিলেন। তাই সন্ধ্যা পুজো হওয়ায় কারণে ভীষ্ম অষ্টমী পালিত হবে ১৬ ফেব্রুয়ারি। এই দিনে ভীষ্ম পিতামহের জন্য শ্রাদ্ধের ব্যবস্থা করা হয়। মান্যতা আছে, এই দিনে যারা ভীষ্ম পিতামহের স্মরণে কুশ, তিল ও জল দিয়ে শ্রাদ্ধ ও তর্পণ করেন, তারা পাপ মুক্ত হয়ে যায় এবং তারা পিতৃদোষ থেকেও মুক্তি পায়।