মুম্বই, ২৮ ডিসেম্বর: "২৬/১১-র মুম্বই হামলার পর পাকিস্তানের জঙ্গি ঘাঁটিগুলিতে হামলা চালানোর প্রস্তাব দিয়েছিল বায়ুসেনা (Indian Air Force )। কিন্তু তত্কালীন সরকার তা খারিজ করে দেয়।" এই দাবি করলেন ভারতীয় বিমান বাহিনীর প্রাক্তন প্রধান বিএস ধানোয়া (BS Dhanoa)। শুক্রবার মুম্বইয়ে একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বার্ষিক অনুষ্ঠানে যোগ দেন ধানোয়া। সেখানেই ভাষণ দিতে গিয়ে ছাত্র-ছাত্রীদের সামনে একথা বলেন তিনি। ২০১৬ সালের ৩১ ডিসেম্বর থেকে ২০১৯ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ভারতীয় বায়ুসেনার প্রধান ছিলেন বিএস ধানোয়া। তিনি বলেন, "পাকিস্তানের সন্ত্রাসবাদী ঘাঁটিগুলি ঠিক কোথায় অবস্থিত ছিল, তা আমরা জানতাম। এয়ার স্ট্রাইক (Air Strike) চালানোর জন্য প্রস্তুতও ছিলাম। কিন্তু, এয়ার স্ট্রাইক হবে কি না, তা রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত।' ধানোয়া আরও বলেন যে ২০০১ সালে সংসদ ভবনে হামলার পরেও হামলা চালানোর প্রস্তাব দিয়েছিল বায়ুসেনা। কিন্তু সেবারও তা মানা হয়নি।
ধনোয়া বলেন, "পাকিস্তান (Paksitan) ভারত বিরোধী অপপ্রচারের লড়াইয়ে লিপ্ত রয়েছে এবং তা তারা চালিয়ে যাবে। পাকিস্তান নিজের স্বার্থেই কাশ্মীর সমস্যাকে মিটতে দেবে না। দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের মধ্যে শান্তি ফিরে এলে পাকিস্তান অনেক সমস্যায় পড়বে। ভারতীয় বায়ুসেনার আগামীকালই অল্প সময়ের মধ্যে বড় হামলা চালিয়ে ফিরে আসার ক্ষমতা আছে। তবে পাকিস্তান চোরাগোপ্তা হামলায় বিশ্বাসী।" ভারতের দুই পাশে দুটি পরমাণু শক্তিধর রাষ্ট্র, এটিই ভারতের নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন ধানোয়া। ধনোয়া চিনের এয়ার ফোর্সের ক্ষমতা সম্পর্কেও নিজের মতামত জানান। বলেন, "এটি গুণমান এবং পরিমাণের উপর নির্ভর করে। অন্যান্য সামরিক অঞ্চলের থেকে তিব্বতের স্বশাসিত অঞ্চলে যুদ্ধ বিমান ও সেনা মোতায়েন উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি পেয়েছে। যা ইস্টার্ন ফ্রন্ট এবং দক্ষিণ চিন সাগর পর্যন্ত বিস্তৃত্ব। চিন অনেক এয়ারক্র্যাফট কেরিয়ারও রেখেছে সেখানে।" ধানোয়া বলেন, "আমি যখন বেঙ্গালুরুতে চিনের বিমান বাহিনীর প্রধানের সঙ্গে দেখা করি। তখন তিনি বলেছিলাম যে আমাদের অবশ্যই আকাশের চেয়ে মাটিতে আরও বেশিবার দেখা করতে হবে।" আরও পড়ুন: Pinaka Missile System: পিনাকা মিসাইল সিস্টেমের সফল পরীক্ষা করল ডিআরডিও
এর আগে বায়ুসেনার গ্রুপ ক্যাপ্টেন মোহন্ত পাঙ্গিং (Mohonto Panging) একই দাবি করেছিলেন। বালাকোটে এয়ার স্ট্রাইকের পর তিনি টুইটারে লেখেন, "অবশেষে পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরে থাকা জঙ্গি শিবিরগুলিতে মিরাজ ২০০০ থেকে লেজার গাইডেড বোমা ফেলা হয়েছে। ২০০৮ সালে মুম্বই হামলার পরেও আমরা মুজফ্ফরাবাদের ক্যাম্পগুলিতে আঘাত করতে যাচ্ছিলাম। সরকার সিদ্ধান্ত নেয়নি। আমার অধীনে সুখোই স্কয়্যাড্রন তৈরি ছিল।" তিনি আরও লেখেন, "সরকার যদি অনুমতি দিত তবে সম্ভবত সীমান্ত সন্ত্রাসে এত এত ভারতীয় প্রাণ হারাত না।"