মুম্বই, ৯ ডিসেম্বর: নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল ২০১৯ ((CAB)) পাস করিয়ে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ দুই সম্প্রদায় হিন্দু ও মুসলিমদের মধ্যে অদৃশ্য বিভেদ তৈরি করতে চাইছে কেন্দ্র। সরকার যদি এভাবে বেছে বেছে শুধুমাত্র হিন্দু অনুপ্রবেশকারীদের নাগরিকত্ব দেয় তাহলে দেশজুড়ে ধর্মীয় হানাহানির শুরু হয়ে যেতে পারে। শিবসেনার মুখপত্র সামনা’র সম্পাদকীয়তে এনিয়েই ধর্ম যুদ্ধের আশঙ্কা করা হয়েছে। সম্পাদকীয়তে আরও বলা হয়েছে, এই বিল পাস করে সরকার ভোট ব্যাংকের রাজনীতিতে খুব বেশি এগোতে পারবে না। বেকারত্ব থেকে শুরু করে অর্থনৈতিক দূরবস্থা। সরকারি সংস্থাগুলি একে একে বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলির দেউলিয়া দশা কাটাতে বিভিন্ন ব্যাংকের সঙ্গে সংযুক্তিকরণ চলছে। এত সমস্যা থাকতে কেন নাগরিকত্ব বিলে কেন্দ্র মাথা ঘামাচ্ছে তানিয়ে প্রশ্ন শিবসেনার (Shiv Sena)।
সামনা’য় (mouthpiece Saamana) বলা হয়েছে, এইসময় নাগরিকত্ব আইন সংশোধনের নামে নতুন করে আর একটি সমস্যা ডেকে আনা হচ্ছে কেন? মনে হচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার হিন্দু ও মুসলিমদের মধ্যে অদৃশ্য বিভাজন চাইছে।” পরে মন্তব্য করা হয়েছে, “একথা ঠিক যে, হিন্দুস্তান বাদে বিশ্বে হিন্দুদের আর কোনও দেশ নেই। কিন্তু শুধু হিন্দু উদ্বাস্তুদের নাগরিক বলে স্বীকার করে আমরা কি ধর্মযুদ্ধের রাস্তা তৈরি করছি না।” লোকসভা ১৮ জন শিবসেনা সংসদ রয়েছেন যাঁরা এই মুহূর্তে বিলটির বিরোধিতা করছেন। একই সঙ্গে উত্তর পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলিও এই নাগরিক্তব বিল ২০১৯-এর সংশোধনীর বিরোধিতা করছে। এই তালিকায় পশ্চিমবঙ্গের পাশাপাশি বিহারও রয়েছে। বিহারের জেডিইউ-র সঙ্গে জোট সরকারে রয়েছে বিজেপি। আরও পড়ুন-Assam: আজ সংসদে পেশ নাগরিকত্ব বিল ২০১৯, বিরোধিতায় নেমেছে গোটা দেশ, অসমে বনধের পরিস্থিতি
পাকিস্তানে হিন্দুদের উপরে হওয়া অত্যাচারের ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সবসময় প্রতিবাদ করেন। সেই সমস্যা মেটাতে সক্রিয় পদক্ষেপও গ্রহণ করেন। ঠিক একই ঘটনা অন্যান্য প্রতিবেশী দেশের হিন্দু সম্প্রদায়ের উপরে ঘটলে তিনি কেন কিছু বলেন না। তানিয়েও সম্পাদকীয়তে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। এমনকী, সেসব ক্ষেত্রে যাতে প্রধানমন্ত্রী কড়া পদক্ষেপ নেন, তার সুপারিশও করা হয়েছে। এদিকে দেশের ছয় দশকের পুরোনো নাগরিকত্ব আইনে পরিবর্তনের জন্যই এই নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পেশ হচ্ছে। সেই বিল আইনে পরিণত হলে পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান থেকে আসা অমুসলিম উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব পাওয়া সহজ হবে। বিরোধীরা একবাক্যে বলছেন, প্রস্তাবিত আইন বৈষম্যমূলক। ভারতীয় সংবিধানে ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলা হয়েছে। কিন্তু নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল সেই নীতির বিরুদ্ধে যাচ্ছে।।