Reshma Khan: ১ দিনের জন্য প্রধানমন্ত্রী হলে দেশের মহিলাদের জন্য বোরখা হিজাব নিষিদ্ধ করতেন, সাহসী মন্তব্য রেশমা খানের
প্রতীকী ছবি (Photo Credits: PTI)

জয়পুর, ২১ অক্টোবর: ভারতের প্রগতিশীল মহিলাদের কণ্ঠস্বর, যাঁরা নির্ভয় ও বুদ্ধিমতী। এই অনুষ্ঠানটির প্রতিনিধিত্ব করেন অল ইন্ডিয়া রেডিওর প্রোগাম হেড রেশমা খান। সেই সব মহিলারা উন্নতির চূড়ান্ত শীর্ষে পৌঁছেও অভিভাবকদের নীতিকথা মূল্যবোধকে গুরুত্ব দেন। একই সঙ্গে কৌতুক যাঁদের মজ্জায় মজ্জায় সংবেদনশীলতাকে হাতিয়ার করে যাঁরা এগিয়ে চলেন, তাঁদের নিয়েই প্রোগাম সাজান রেশমা খান। তিনি নিজে এখন জন অত্যন্ত প্রগতিশীল মহিলা। গত ৩৩ বছরে কত নামী দামী ব্যক্তিত্বকে সামনে থেকে দেখেছেন তিনি। তাঁদের সাক্ষাৎকার নিয়েছেন। তাঁদের জীবনধারা সম্পর্কে তাঁদের সামনেই আলোচনা করেছেন। নিদারুণ গরমেও বোরখা, হিজাব পরিহিত মহিলা রাস্তায় নেমে কাজ করে চলেছেন, এই দৃশ্যকে রেশমা খানকে (Reshma Khan) স্বস্তি দেয় না।

এই প্রসঙ্গেই আজ মুখ খুললেন তিনি। বললেন, “আমি যদি একদিনের জন্যও প্রধানমন্ত্রীর পদে বসতাম তাহলে দেশে মহিলাদের বোরখা ও হিজাব পরা নিষিদ্ধ ঘোষণা করতাম। সোয়াই মাধোপুরে যখন আমি কর্মরত ছিলাম সেসময় দেখেছি বোরখা পরে চার সন্তানকে সঙ্গে নিয়ে তাতাপোড়া গরমে স্বামী সঙ্গে হেঁটে চলেছেন স্ত্রী। তাদের দুর্দশা দেখে আমার বিরক্ত লাগত। নির্লজ্জ স্বামীটি অযাচিতভাবে পাওয়া গর্বের সঙ্গে স্ত্রীকে পাশে নিয়ে হাঁটছে। আমি সর্বদা ভেবেছি যদি এই সব মহিলাদের জন্য অন্তত বোরখাটি নিষিদ্ধ করতে পারি।” আজমেঢ়ের এক প্রগ্রতিশীল পরিবারে রেশমার জন্ম ও বেড়ে ওঠা। যেখানে ছেলে মেয়ে আলাদা করে দেখা হত না। মানবাধিকার নীতি মেনেই সবাই যেন একে অপরকে সম্মান করে। রেশমার পরিবারে তাই শেখানো হত। কনভেন্টে পড়াশোনা শেষ করে অল ইন্ডিয়া রেডিওতে যোগ দেন রেশমা খান। আরও পড়ুন-COVID-19 Vaccine In India: ভারতে প্রথম পর্যায়ে করোনা যোদ্ধা চিকিৎসক-সহ মোট ৩ কোটি জনগণকে দেওয়া হবে করোনার প্রতিষেধক

তিনি বলেন, “আজাল কার দিনে আমরা পিছিয়ে পড়ছি ক্রমশ। সামাজিক নিষিদ্ধ বিষয় নিয়ে বড় বেশি আলোচনা করছি। ছেলেমেয়েদের নিয়ে কথা বলেই চলেছি। লিঙ্গই যেন সবথেকে বড় আলোচ্য বিষয়। জাতপাত, উঁচু নিচু নিয়ে আলোচনা চলতেই থাকে। সংরক্ষণ তো মূল আলোচ্য হয়ে গেল। মন্ডল কমিশনের আগে এই জাতপাত নিয়ে মানুষ এত ভাবতো না আজ সেখানে পুরো উল্টো ঘটছে। যদিও আমি আমার দুই মেয়েকে ভাল মানুষ হয়ে ওঠার শিক্ষা দিই সবসময়। কয়েক বছর আগে পর্যন্ত এই ধর্মীয় উন্মাদনা শুধুমাত্র ভারত-পাক ক্রিকেট ম্যাচ চলাকালীন আলোচনায় ঢুকে পড়ত। আমিষ নিরামিষও ওই একই পর্যায়ে ছিল। তবে দিন যত যাচ্ছে, ততই এসব স্পর্শকাতর বিষয় খুল্লম খুল্লা আলোচিত হচ্ছে। কেননা মুসলিম ভাইরা মাদ্রাসার বাইরে বেরিয়ে গিয়ে বাকিদের মতো সর্বসাধারণের শিক্ষাটা নিতে পারে না? আমি এমন একটা পরিবারে বড় হয়ে উঠেছি যেখানে আমাকে নির্ভয়তা ও আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বাঁচার মন্ত্র শেখানো হয়েছে। মসলুম পরিবারের প্রতিনিদিত্ব করা সত্ত্বেও আমার দাদিমা কখনওই পর্দার মধ্যে ছিলেন না। বরং দাদার সঙ্গে শিকারে যেতেন, ভাল সাঁতারুও ছিলেন। প্রগতীশীল ধ্যানধারণা ও সাহসী মতাদর্শ নিয়ে তিনি তাঁর ১০ সন্তানকে বড় করেছেন। তাঁর প্রত্যেক সন্তানের জীবন যেন উন্নতির শিখরে পৌঁছায় তা নিশ্চিত করাই ছিল তাঁর মূল লক্ষ্য। এমনকী, আমার মা একজন NCC ক্যাডেট ও ভাল ঘোড়সওয়ার।প্রায় ৫ থেকে ৬ দশক আগেই আমার ৬ পিসি স্নাতক স্নাতকোত্তর ডিগ্রি প্রাপ্ত হয়েছেন। পারিবারিক ঐতিহ্য বজায় রাখতে গিয়ে আমার অভিভাবকরা আমাকেও উন্নত মানের শিক্ষা দিয়েছেন।” তিনি এবং তাঁর মেয়েরা মনে করেন মহিলারা বোরখা, হিজাব পরবেন কি না তা তাঁরাই ঠিক করুন। তাঁদের উপরে চাপিয়ে দেওয়া চলবে না।