দিল্লি, ৬ আগস্ট: ৩৭০ ধারা বিলুপ্তির সঙ্গে সঙ্গেই কাশ্মীরের সাংবিধানিক পরিচয় বদলে গিয়েছে। এই নতুন কাশ্মীরের প্রশাসনিক কাঠামো তৈরির গুরু দায়িত্ব নিয়ে এখন শ্রীনগরে রয়েছেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছেন, আমরা চাই না জম্মু-কাশ্মীর বরাবর কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হয়ে থাকুক। অবস্থার উন্নতি হলে তা আবার রাজ্য হবে। অজিত দোভাল বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ওই ঘোষণায় স্থানীয় মানুষ আশ্বস্ত হয়েছেন। কেন্দ্রীয় সরকারকে এক রিপোর্টে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জানিয়েছেন, জম্মু-কাশ্মীরের মানুষের ধারণা, কেন্দ্রীয় সরকার খুব ভেবেচিন্তেই পদক্ষেপ নিয়েছে। তাঁরা সরকারের পদক্ষেপকে সমর্থন করছেন। আরও পড়ুন-৩৭০-এর গেরোয় ভূস্বর্গে বন্ধ আলিয়া-সিদ্ধার্থের ছবির শ্যুটিং, ক্ষতির মুখে বলিউড
৩৭০ ধারা তুলে নেওয়ার ঘোষণার পর অশান্তির আশঙ্কা করে কেন্দ্র যে অনেক আগে থেকেই কোমর বেঁধে নেমেছিল তার প্রমাণ মিলেছে একাধিক সিদ্ধান্তে। দফায় দফায় বিপুল সংখ্যায় সেনা মোতায়েন করে উপত্যকাকে কার্যত দুর্ভেদ্য করে তোলা, অমরনাথ যাত্রী ও পুণ্যার্থীদের কাশ্মীর ছাড়ার নির্দেশ, ইন্টারনেট-কেবল পরিষেবা বন্ধ,রাজনৈতিক নেতাদের গ্রেপ্তার-গৃহবন্দি করা— সবই ছিল এই পরিকল্পনার অঙ্গ। ৩৭০ ধারা তুলে নেওয়ার পরেও এই সব বন্দোবস্ত বজায় রাখা হয়েছে। আর গোটা পরিস্থিতির উপর নিয়ন্ত্রণ ও নজর রাখতে শ্রীনগরে পাঠানো হয়েছিল অজিত ডোভালকে। কেন্দ্রকে পাঠানো রিপোর্টে তিনি উল্লেখ করেছেন, ‘‘কেন্দ্রের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন জম্মু-কাশ্মীরের সাধারণ মানুষ। গোটা উপত্যকায় শান্তি, স্বাভাবিক পরিস্থিতি রয়েছে। কোনও বিক্ষোভ-প্রতিরোধের ঘটনা নেই এবং সাধারণ মানুষ নিজেদের দৈনন্দিন কাজে বেরোচ্ছেন।’’
পর্যবেক্ষকরা অবশ্য বিষয়টি এতটা সহজ-সরল ভাবে দেখতে রাজি নন। তাঁদের বড় একটা অংশের মত, ডোভাল কেন্দ্রের প্রতিনিধি হয়েই শ্রীনগরে রয়েছেন। তিনি কেন্দ্রের পক্ষে রিপোর্ট দেবেন, এর মধ্যে নতুন কিছু নেই। এখনই এত উচ্ছ্বসিত হওয়ার মতো পরিস্থিতিও তৈরি হয়নি। সব রকম যোগাযোগ ব্যবস্থা কার্যত স্তব্ধ। সেই সব ব্যবস্থা চালু হলে সেখানে ফের অশান্তি ছড়াতেই পারে। তাতে মদত দিতে পারে পাকিস্তানপন্থী শক্তিগুলি। ইসলামাবাদও চেষ্টা করবে ইন্ধন দিতে। সব মিলিয়ে অশান্ত হয়ে উঠতে পারে গোটা উপত্যকা। তবে যেকোনও পরিস্থিতিতেই সীমান্তে পাকিস্তানকে বাড়তে দেওয়া যাবে না, তা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শান্তিপূর্ণভাবে কাশ্মীরের পুনর্গঠন সম্পন্ন করতে হবে ডোভালকেই।