একটি মেয়েকে অপহরণ করে এবং পরে তাকে বিয়ে করার অভিযোগে একজন ব্যক্তির বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার শুনানিতে পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্ট এফআইআর বাতিল করেছে এবং টেনে এনেছে ভারতের প্রাচীন ইতিহাসের কথা। কি ছিল সেই মামলায়-
মামলায় অভিযোগ একটি ছেলের বিরুদ্ধে যে পরিবারের অসম্মতিতে মেয়েকে বাড়ি থেকে বের করে তাঁকে বিয়ে করেন। মেয়েটির বাবা অভিযোগে বলেন- ১৭ জানুয়ারি, ২০১৯ সালে তার পরিবারের সকলের সঙ্গে তার মেয়ে ঘুমাচ্ছিলেন। কিন্তু ১৮ জানুয়ারি (২০১৯) সকালে তিনি লক্ষ্য করেন যে তার মেয়ে ঘরে নেই। এরপর অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তাকে পাওয়া যায়নি। পরে তিনি জানতে পারেন, তার পাড়ার এক ছেলে বিয়ের অজুহাতে তার মেয়েকে অপহরণ করে। এবং মেয়ের আধার কার্ড ও ৬০ হাজার টাকাও সে নিয়ে গেছে।তারপরেই ওই ছেলেটির বিরুদ্ধে অপহরণের অভিযোগ আনেন বাবা। পরে জানা যায়, অভিযুক্ত ছেলেটির সঙ্গে মেয়েটি ২০১৯ সালের ৩ জুলাই শ্রী মুক্তসর সাহেবের একটি গুরুদ্বারা সাহেবে বিয়ে করে। তারপরেই সেই অভিযুক্ত ছেলেটি তার জীবন ও স্বাধীনতা রক্ষার জন্য হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন।আবেদনকারী এবং সেই মেয়েটি নিজেদের সম্মতিতে বিয়ে করেছেন এবং তারা এখন দুই সন্তানের বাবা-মা এই তথ্য জানার পর আদালত তার পর্যবেক্ষণে জানিয়েছে-
"স্বয়ম্বর অর্থাৎ নিজের পছন্দের বিয়ে একটি আধুনিক ঘটনা নয়। এর শিকড় রামায়ণ, মহাভারতের মতো পবিত্র গ্রন্থ সহ প্রাচীন ইতিহাসে খুঁজে পাওয়া যেতে পারে... অনুচ্ছেদ 21 এটি বাস্তবায়ন করছে। মৌলিক অধিকার হিসেবে মানবাধিকার।"
পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টের বিচারপতি বানসাল বলেছিলেন, "আইনের উদ্দেশ্য - প্রথাগত, ধর্মীয় বা আইনসভা দ্বারা প্রণীত - প্রতিটি মানুষের জীবন ও স্বাধীনতা রক্ষা করা। আইনের উদ্দেশ্য হল কোনও ব্যক্তির কোনও দোষের মাধ্যমে তার প্রতিষ্ঠিত জীবনকে ব্যাহত করা নয়। দম্পতির নিজের মতো করে বাঁচার পূর্ণ অধিকার আছে।
সব পক্ষের যুক্তি শোনার পর বিচারপতি বনসাল বলেন, 'মামলায় যার বিরুদ্ধে অভিযোগ সে এবং তার স্ত্রী দুজনেই প্রাপ্তবয়স্ক , হতে পারে তারা তাদের বাবা-মায়ের ইচ্ছার বিরুদ্ধে বিয়ে করেছে। কিন্তু তারা সুখে একসঙ্গে বসবাস করছে । কোন দোষ ছাড়া আদালত এবং আইন প্রয়োগকারী সংস্থা সহ কারোরই তাদের তাদের জীবন নষ্ট করার অধিকার নেই।তাই তাদের নিজের মতো করে জীবনযাপন করার অধিকার রয়েছে।