বেঙ্গালুরু, ৩০ সেপ্টেম্বর: সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ানো (Breastfeeding) একজন মায়ের অবিচ্ছেদ্য সাংবিধানিক অধিকার এবং সংবিধানের ২১ নম্বর অনুচ্ছেদ এই মৌলিক অধিকার দেয়। গতকাল একটি মামলার শুনানিতে এই পর্যবেক্ষণ করল কর্নাটক হাইকোর্ট (Karnataka High Court)। বিচারপতি কৃষ্ণা এস দীক্ষিতের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চের আরও বক্তব্য, শিশুর অধিকার তাঁর মায়ের সঙ্গে একীভূত করা প্রয়োজন। হাসপাতাল থেকে সদ্যোজাত চুরির ঘটনায় বেঙ্গালুরুর বাসিন্দা এক মহিলা আদালতের দ্বারস্থ হন। ওই মহিলা আদালতের কাছে আবেদন করেছিলেন যাতে, তাঁর হাতেই যে সন্তানকে তুলে দেওয়া হয়। বর্তমানে শিশুটির দেখাশোনা করছেন এক দম্পতি।
অভিযোগ, ২০২০ সালের মে মাসে এক মনোরোগ বিশেষজ্ঞ হাসপাতাল থেকে নবজাতককে চুরি করে ওই দম্পতিকে দিয়ে দেন। কপ্পালের বাসিন্দা ওই দম্পতির কাছ থেকে সদ্যোজাতর বিনিময়ে টাকাও নেন অভিযুক্ত। ওই দম্পতি পরে দাবি করেছিলেন যে তাঁদের সন্তানের জন্ম সারোগেসির মাধ্যমে হয়েছে। অভিযাগ জমা পড়তেই পুলিশ মামলা রুজু করে অভিযুক্ত মনারোগ বিশেষজ্ঞকে গ্রেফতার করে। আদালত জন্মদাত্রী মা এবং পালক মা উভয়েরই দায়ের করা আবেদন নিষ্পত্তি করেছে।
বেঞ্চ প্রশাসনকে নির্দেশ দিয়েছে যাতে শিশুটিকে তাঁর জন্মদায়ী মায়ের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়। আদালতের নির্দেশ মেনে পালক মা শিশুটিকে তাঁর আসল মায়ের কাছে ফিরিয়ে দিয়েছেন। বদলে শিশুর আসল মা জানিয়েছেন, পালক মা যখনই চাইবেন শিশুটিকে দেখতে যেতে পারবেন। বিচারপতি দীক্ষিত উভয় মহিলার প্রশংসা করেছেন। এছাড়াও শিশু অপহরণের ঘটনায় দম্পতির বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হবে না বলেও নির্দেশ দিয়েছেন। আরও পড়ুন: Coronavirus Cases In India: একযোগে বাড়ল দৈনিক সংক্রমণ ও করোনার বলি, দেশে ৩ লাখের নিচে অ্যাক্টিভ রোগী
মামলায় আদালতের পর্যবেক্ষণ, এটা দুর্ভাগ্যজনক যে অনেক সময় নবজাতকরা মায়ের বুকের দুধ না খেয়ে থেকে যায়। সভ্য সমাজে এমন হওয়া উচিত নয়। এটা স্বীকার করা উচিত যে বুকের দুধ খাওয়ানো একজন মায়ের অবিচ্ছেদ্য অধিকার। বর্তমানে শিশুটি যে মহিলার কাছে রয়েছে, তাাঁর আইনজীবী আদালতে যুক্তি দিয়েছিলেন যে জন্মদায়ী মায়ের ইতিমধ্যেই দুটি বাচ্চা রয়েছে। পালক মায়ের কোন সন্তান নেই এবং তিনি সমস্ত ভালবাসা এবং স্নেহ দিয়ে শিশুটিকে লালন -পালন করেছেন। তাই শিশুটির হেপাজত তাঁকেই দেওয়া হোক। যদিও, আদালত সেই যুক্তি খারিজ করে দেয়। বিচারপতি দীক্ষিতের বেঞ্চ বলেছে, "সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ানোর অধিকার কোনও একজনের থেকে কেড়ে নেওয়া যাবে না।"