পাটনা, ২ অক্টোবর: জলে ডুবেছে চতুর্দিক, এক সপ্তাহের টানা বৃষ্টিতে বন্যা বিধ্বস্ত সমগ্র বিহার। এখনও পর্যন্ত বন্যার বলি ৪২ জন। রাজধানী পাটনা শহরের অভিজাত এলাকাতেও ঢুকেছে জল। উপমুখ্যমন্ত্রী সুশীল কুমার মোদি, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী রাম বিলাস পাসোয়ান ও তাঁর ছেলে চিরাগ পাসোয়ানকে উদ্ধার করে হোটেলে রাখা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমারের অনুরোধে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর ১৯টি দলকে বিহারে পাঠিয়েছে কেন্দ্র। এই মর্মে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গেও বার্তালাপ সেরেছেন নীতিশ কুমার। বুধবার থেকে আকাশের ভাবগতিক কিছুটা বদলাতেই প্রশাসন থেকে সাধারণ মানুষ সকলেই আশাবাদী, এবার বিপদ কাটল। ইতিমধ্যেই মানুষের স্বস্তি দিতে নিচু এলাকার জমা জল পাম্প করে বের করে দেওয়া হচ্ছে।
গত সপ্তাহের তিনটি দিন ভারী বর্ষণের জেরেই বিহারের নদী নালা উপচে পড়ে গোটা রাজ্যকে ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছে। এর থেকে রেহাই পায়নি রাজধানী পাটনা ও লাগোয়া শহর রাজেন্দ্র নগরও। টানা বৃষ্টিতে বিভিন্ন এলাকায় জল দাঁড়িয়ে গিয়েছে। একতলা বাড়ির ঘরকন্যার যাবতীয় সামগ্রী ভেসে বেড়াচ্ছে। মানুষজন গৃহবন্দি হয়ে পড়েছে। উদ্ধার কাজে রাস্তায় নেমেছে নৌকা। গত ২৭ তারিখ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত টানা বৃষ্টিতে প্রায় ৪২ জনের মৃত্যুর খবর এসেছে। বন্যায় আহতের সংখ্যা হাজার ছাড়িয়েছে। এদিকে শহর ভেসে যাওয়ায় পাটনার কাঁকড়বাগ (Kankarbagh) থানাতেও ঢুকে পড়ে জল। এই কাঁকড়বাগ এলাকা থেকেই স্থানীয় এক মহিলাকে উদ্ধার করেছে বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী। সংবাদ সংস্থা এএনআই-এর এক সাক্ষাৎকারে প্রকৃতির বিপুল রোষ নিয়ে একটি কথাও বলতে পারেননি ওই গৃহবধূ। শুধু সেই ভয়াবহতার কথা মনে করে অঝোরে কেঁদে চলেছেন। তাঁর চোখের জল বাধ মানছে না। তবে আশার কথাটি হল গত ২৪ ঘণ্টায় বিহারে আর বৃষ্টিপাত হয়নি। আবহাওয়া দপ্তরের রিপোর্ট বলছে, গত কয়েকদিন জলযন্ত্রমায় নাকাল হয়েছে গোটা বিহার, তবে এবার জল নেমে যাওয়ার পালা। আর দুশ্চিন্তা নেই। আরও পড়ুন-Bihar Wrecked by Rains:বিহারে বন্যার বলি ৪০ দুর্গত এলাকা থেকে চলছে দেহ উদ্ধার, বিপর্যয় রুখতে সাহায্যের আশ্বাস রাষ্ট্রসংঘের
#WATCH A woman who was rescued from flooded Kankarbagh area of Patna breaks down while trying to recall her ordeal. #Bihar pic.twitter.com/0DQcnQlPkl
— ANI (@ANI) October 2, 2019
এদিকে এই টানা বৃষ্টিতে জলমগ্ন, পাটনা, ভোজপুর, ভাগলপুর, খাগারিয়া, সমস্তিপুর, বেগুসরাই, লখিসরাই এবং বৈশালী। অন্যদিকে গঙ্গা তীরবর্তী নালন্দা, আরওয়াল, নওয়াদা, সমগ্র মগধ, দ্বারভাঙা, কাটিহার, মিথিলা জলমগ্ন। এদিকে জলের তলায় চলে গিয়েছে বিভিন্ন সাবস্টেশন, তাই বিপর্যয়ের কয়েকটা দিন বিদ্যুৎহীন হয়েই মানুষজনকে কাটাতে হয়েছে। তবে বৃ্ষ্টি বন্ধ হতেই জোরকদমে উদ্ধার ও পুনর্বাসনের কাজ শুরু হয়েছে গোটা রাজ্যজুড়ে। আশাকরা যাচ্ছে দু’একদিনের মধ্যেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করবে।