নাড়ির টান, মাকে বাঁচাতে এনগেজমেন্টের দিন কিডনি দিলেন মেয়ে
প্রতীকী ছবি(FILE Photo)

বেঙ্গালুরু, ২৫ জুলাই: মা, মায়ের হাত ধরেই পৃথিবীর আলো দেখে সন্তান। সেই মা যদি বিপদে থাকেন তাহলে সন্তান তো ভাল থাকতে পারে না। তাই এনগেজমেন্টের সিদ্ধান্ত বাতিল করে মাকে কিডনি দিলেন মেয়ে। এককথায় নাড়ি ছিঁড়ে মেয়েকে পৃথিবীর আলো দেখিয়েছিলেন মা। নিজের অঙ্গ দিয়ে মাকেই নতুন জীবন দিলেন এক তরুণী। প্রেমিকের হাত ছাড়িয়ে, এনগেজমেন্ট বাতিল করে মা’কে কিডনি দিতে ছুটে গেলেন হাসপাতালে। ডাক্তাররা বললেন, অবিবাহিত মেয়েদের মধ্যে এমন মানসিকতা সচরাচর দেখা যায়না, এই মেয়েটি ব্যতিক্রমী। তাঁর জীবনবোধ বর্তমান যুবসমাজের কাছে দৃষ্টান্ত বইকি। আরও পড়ুন-শৌচাগারে তৈরি হচ্ছে মিড-ডে মিল, সাংসদ বললেন ক্ষতি কি?

জানা গিয়েছে, আদতে বাংলাদেশের বাসিন্দা ও তরুণী এখন সপরিবারে বেঙ্গালুরুতেই থাকেন। সামনেই তাঁর বিয়ে। দীর্ঘদিনের প্রেমকে পরিণতি দিতে বিয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ওই তরুণী, তার আগে প্রেমিকের সঙ্গে এনগেজমেন্ট সেরে নেওয়ার পরিকল্পনাও শুরু হয়ে যায়। গত রবিবার ছিল সেই শুভ দিন। এদিকে হবু কনের মা-ও মারাত্মক অসু্স্থ, কয়েকমাস আগেই তাঁর কিডনির সমস্যা ধরা পড়েছে। মায়ের সুস্থতার জন্য় মেয়ে কম ছোটাছুটি করেননি, কিন্তু লাভের লাভ কিছু হয়নি। মায়ের রক্তের গ্রুপের সঙ্গে ম্যাচ করে এমন কিডনি পাওয়া যায়নি। এদিকে মেয়ের বিয়ে এগিয়ে আসছে, সব মিলিয়ে দুশ্চিন্তা ছিলেন তরুণীর বাবা। বেঙ্গালুরুর মণিপাল হাসপাতালে বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা মহিলাকে দেখছেন। হাসপাতালের নেফ্রোলজিস্ট ডঃ শঙ্করণ সুন্দর কয়েকদিন আগেই জানান, খুব তাড়াতাড়ি রোগিণীর কিডনির প্রতিস্থাপন জরুরি, নাহলে এক বছরের বেশি তাঁকে আর বাঁচানো যাবে না। এদিকে হন্য হয়ে খুঁজেও কিডনির সংস্থান করা সম্ভব না হওয়ায় হতাশ হয়ে পড়েন ভদ্রমহিলার স্বামী। মেয়ে কিন্তু হতাশ হননি, ডাক্তারদের সঙ্গে আলোচনা করে নিজে টেস্ট দেন। দেখেন মায়ের সঙ্গে তাঁর কিডনি ম্যাচ করেছে। দ্বিতীয়বার ভাবেননি, সোজা হাসপাতালে গিয়ে নিজের একটি কিডনি দান করলেন মায়ের জন্য। গত রবিবার ডঃ সঙ্করণ সুন্দরের তত্ত্বাবধানে মহিলার শরীরে বসল মেয়ের কিডনি। সেদিনই তরুণী এনগেজমেন্টের দিন। তবে মায়ের সুস্থতার কাছে সেসব যে গুরুত্ব রাখে না তাই প্রমাণ করে দিলেন তিনি।

সাধারণত কিডনি দানে মহিলারা শারীরিকভাবে কমজোরি হয়ে পড়েন। তাই ওই তরুণীকে কিডনি দেওয়ার আগে ভাল করে ভেবে নেওয়ার অনুরোধ করেছিসেন ডাক্তাররা। তরুণী কিন্তু তাতে সময় নষ্ট করেননি। মাকে সুস্থ করার থেকে তাঁর কাছে যে আর কিছুই বড় হতে পারে না। মেয়ের এই কাজে আপ্লুত বাবা।