Yemen War: চার বছর ধরে চলছে যুদ্ধ! প্রাণ গিয়েছে ৫০০০ শিশুর, বলল UNICEF
Yemeni Rebel. (Photo Credits: Getty Images)

সানা, ২৪ অক্টোবর: আরব (Arab) উপদ্বীপের দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্তের দেশ ইয়েমেন (Yemen)। মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশে প্রায় চার বছরেরও বেশি সময় ধরে চলছে যুদ্ধ (War)। ২০১৫ সালের মার্চ থেকে ইয়েমেন সরকার এবং হুতি বিদ্রোহীদের (Houthi rebels) মধ্যে এই যুদ্ধের সূত্রপাত। বর্তমানে দেশটির বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়েছে যুদ্ধ। বলা হয়ে থাকে, ইয়েমেনের এই যুদ্ধের আড়ালে আদতে লড়াই সৌদি আরব (Soudi Arab) ও ইরানের (Iran) মধ্যে। অন্যদিকে, সৌদি আরব ও ইরানের পেছনে কলকাঠি নাড়ছে যুক্তরাষ্ট্র (USA), রাশিয়া (Russia) এবং চীনের (China) মতো পরাশক্তিরা। সব মিলিয়ে পরিস্থিতি এখন এমন দাঁড়িয়েছে যে, রাজায় রাজায় যুদ্ধ হচ্ছে, আর প্রাণ যাচ্ছে উলুখাগড়ার! চার বছর ধরে চলা এই যুদ্ধে এখনও পর্যন্ত প্রাণ গিয়েছে ৫০০০ শিশুর (5,000 Children Killed)! আহতের সংখ্যাও অসংখ্য। গতকাল বুধবার এমনটাই তথ্য প্রকাশ্যে এনেছে UNICEF। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশগুলিতে শিশু ও মায়েদের জরুরি খাদ্য ও স্বাস্থ্যসেবা সরবরাহ করে থাকে United Nations-এর এই সংস্থা।

UNICEF-এর প্রতিনিধি সারা বিসলো ন্যান্ট এই প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, "ইয়েমেনে শিশুদের অবস্থা খুবই সঙ্গিন।" এছাড়াও তিনি জানিয়েছেন, "ক্রমবর্ধমান এই সংঘাতের কারণে প্রায় ৫ লক্ষ ইয়েমেনি শিশু স্কুল ছাড়তে বাধ্য হয়েছে।" ইয়েমেনে গত কয়েক বছর ধরে চলা এই গৃহযুদ্ধে হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। কিন্তু কেন দিনের পর দিন ধরে ইয়েমেনে এই যুদ্ধ চলছে (Reason Of Yemen War)? ইয়েমেনের রাজনৈতিক পট পরিবর্তনে ইন্ধন জুগিয়েছিল আরব বসন্ত। ক্ষমতার পালাবদলের আগে ইয়েমেনের দীর্ঘকালের প্রেসিডেন্ট ছিলেন আলী আবদুল্লাহ সালেহ। প্রচণ্ড বিক্ষোভের মুখে ২০১১ সালে আবদ রাব্বু মনসুর হাদির কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন তিনি। নতুন প্রেসিডেন্ট হিসেবে শুরু থেকেই নানা প্রতিবন্ধকতার সম্মুখীন হচ্ছিলেন হাদি। একদিকে জঙ্গিরা মাথাচাড়া দিয়ে উঠছিল, অন্যদিকে ইয়েমেনের দক্ষিণে বিস্তার লাভ করছিল বিচ্ছিন্নতাবাদ। আর হুতি বিদ্রোহীরা তো ছিলই। তাছাড়া ওই সময় ইয়েমেনে আরও বেশ কিছু অভ্যন্তরীণ সমস্যাও দেখা দিয়েছিল। দুর্নীতি, খাদ্যাভাব সহ বেকারত্বের মতো বহুবিধ সমস্যায় জর্জরিত হয়ে পড়েছিল ইয়েমেন। এর মধ্যে শিয়া ধর্মাবলম্বী হুতিরা নতুন করে বিদ্রোহ শুরু করে। নতুন প্রেসিডেন্ট হাদির দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে উত্তর ইয়েমেনের ‘সাদা’ প্রদেশ এবং এর আশপাশের এলাকা দখল করে নেয় হুতিরা। ২০১৫ সালের শুরুর দিকে সানা দখল করে নেয় হুতিরা। ফলে ইয়েমেনে দুটি পক্ষ দাঁড়িয়ে যায়। একটি সরকার পক্ষ, আরেকটি হুতি বিদ্রোহীরা। ২০১৫ সালের মার্চে এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যান আবদ রাব্বু মনসুর হাদি। শিয়া হুতি বিদ্রোহীদের সহযোগিতা করছে ইরান —এমন অভিযোগ তুলে সামনে আসে সৌদি আরব। সৌদিদের পক্ষে যোগ দেয় আরব বিশ্বের সুন্নিপ্রধান আরও ৮টি দেশ। শুরু হয়ে যায় হাদির পক্ষে জোটগত সামরিক অভিযান। এই জোটকে গোয়েন্দা তথ্য ও সামরিক সহায়তা দিচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স। সেই থেকে ইয়েমেনে হানাহানি চলছেই। আরও পড়ুন: Tamanna Nusrat Bubly: আটজন 'ডামি'কে পরীক্ষায় বসিয়ে ডিগ্রি পেতে গিয়ে ধরা পড়া বাংলাদেশের সাংসদ তামান্না নুসরত বুবলিকে যে শাস্তি দেওয়া হল

UNICEF জানিয়েছে, এই সংঘাতের কারণে ইয়েমেনের আনুমানিক ২০ লক্ষ শিশু বর্তমানে তীব্র অপুষ্টিতে (Suffering From Acute Malnutrition) ভুগছে। যাদের মধ্যে পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুর সংখ্যা ৩ লক্ষ ৬০ হাজার।