মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গোপন নথি ফাঁস করে ২০১০ সালে বিশ্বজুড়ে হৈ-চৈ ফেলে দিয়েছিলেন উইকিলিকসের প্রতিষ্ঠাতা জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ।অবশেষে ১৪ বছরের দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর মার্কিন আদালতে নিজের দোষ স্বীকার করার পর মুক্তি পেলেন জুলিয়ান।নিজের অপরাধ স্বীকার করার বিষয়ে অ্যাসাঞ্জ সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে সমঝোতা চুক্তি করেছেন, সেটির ধারাবাহিকতাতেই তাকে ছেড়ে দিয়েছে যুক্তরাজ্য সরকার।
বিচারক বলেন জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ যে ৬২ মাস (৫ বছর ২ মাস) জেল খেটেছেন সেটাই যথেষ্ট। রায়ের পর অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছেন মি. অ্যাসাঞ্জ। কারণ মার্কিন বিচার বিভাগ এক বিবৃতিতে বলেছে মি. অ্যাসাঞ্জ বিনা অনুমতিতে আর যুক্তরাষ্ট্রে ফিরতে পারবেন না।আদালতের এই রায়ের পর মি. অ্যাসাঞ্জের আইনি টিম এই মামলাকে ‘মুক্ত মতের জয়’ হিসেবে আখ্যা দিয়েছে। তার আইনজীবী জেনিফার রবিনসন বলেছেন মি.অ্যাসাঞ্জের ঘটনা মুক্ত গণমাধ্যম ও জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার সূচনা করেছে।
যুক্তরাজ্যের পুলিশ ৫২ বছর বয়সী মি. অ্যাসাঞ্জকে ২০১৯ সালের গ্রেফতার করে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল, তিনি মার্কিন প্রতিরক্ষা বিষয়ক গোপন তথ্য সংগ্রহ এবং প্রকাশের ষড়যন্ত্রের সঙ্গে যুক্ত। গত কয়েক বছর ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যুক্তি দিয়ে আসছে অ্যাসাঞ্জের প্রতিষ্ঠান উইকিলিকস ইরাক ও আফগানিস্তান যুদ্ধের বিষয়ে এমন কিছু তথ্য প্রকাশ করেছে, যা অনেক মানুষের জীবনকে বিপন্ন করে তুলেছে।প্রসঙ্গতঃ, ২০১০ সালে ইরাক ও আফগানিস্তানে যুদ্ধের বিষয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গোপন নথি ফাঁস করে বিশ্বজুড়ে ব্যাপক হৈ-চৈ ফেলে দেয় জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ প্রতিষ্ঠিত ওয়েবসাইট উইকিলিকস।এরপর তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা দায়ের করে যুক্তরাষ্ট্র, শুরু হয় গ্রেফতারের তৎপরতা।গ্রেফতার এড়াতে এক সময় জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ লন্ডনের ইকুয়েডর দূতাবাসে আশ্রয়ে নেন এবং সেখানেই প্রায় সাত বছর কাটান।
আজ বুধবার প্রশান্ত মহাসাগরের মাঝে অবস্থিত মার্কিন ভূখণ্ড নর্দান মারিয়ানা দ্বীপপুঞ্জের আদালতের রায়ের পর অপরাধী নয় নির্দোষ ব্যক্তি হিসেবেই আদালত কক্ষ থেকে হেঁটে বেরিয়ে আসেন।তার আইনজীবী সাংবাদিকদের বলেন- “শেষ পর্যন্ত ১৪ বছরের আইনি লড়াই শেষে জুলিয়ান অ্যাসাঞ্জ মুক্ত মানুষ হিসেবে বাড়ি ফিরতে পারছেন,এর মাধ্যমে এমন একটি মামলার সমাপ্তি হলো যা একুশ শতকে প্রথম সংশোধনীর জন্য বড় হুমকি হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে”।
যুক্তরাজ্য থেকে যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যর্পণের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের চেষ্টার বিরুদ্ধে বহু বছর ধরে আইনি লড়াই করেছেন মি. অ্যাসাঞ্জ। গত সোমবার (২৪ জুন) তাকে মুক্তি দেয় যুক্তরাজ্য। নিজের অপরাধ স্বীকার করার বিষয়ে মি. অ্যাসাঞ্জ সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যে সমঝোতা চুক্তি করেছেন, সেটির ধারাবাহিকতাতেই তাকে ছেড়ে দেয় যুক্তরাজ্য সরকার। সেখান থেকে তিনি সরাসরি নর্দান মারিয়ানা দ্বীপপুঞ্জের আদালতে হাজির হন।
WikiLeaks founder Julian Assange walks out of courtroom as free man after reaching plea deal in US
Read @ANI Story | https://t.co/o1NyGIXaCg#WikiLeaks #JulianAssange #US pic.twitter.com/pKHTuuxx3q— ANI Digital (@ani_digital) June 26, 2024